চুয়াডাঙ্গায় সোনালী ব্যাংকে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, আটক ৩
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪:৫০ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২০ সোমবার
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে দুর্ধর্ষ ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় জীবননগর থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ৩ জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলো- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকুন্দবাড়িয়া গ্রামের রহমানের ছেলে জনি (২৫), দেলবারের ছেলে কালু (২৮) এবং হাসমত আলীর ছেলে হৃদয় (২৮)। আজ সোমবার ভোরে তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জীবননগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন- উথলী বাজারে সোনালী ব্যাংক শাখায় ডাকাতির ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ব্যাংকের গ্রাহকদের অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন- রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ উথলী বাজার শাখায় কোনও সিসিটিভি ছিলো না। এছাড়া ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা দুই জন নিরাপত্তা প্রহরীর হাতে একটা লাঠি পর্যন্ত ছিলো না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উথলী বাজারের এক দোকানদার বলেন- ব্যাংক চলাকালীন অধিকাংশ সময় নিরাপত্তা প্রহরীরা চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিয়ে থাকেন। ব্যাংকে নিরাপত্তার চরম ঘাটতি আছে।
অপরদিকে সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘচনার পর উথলী বাজার এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উথলী বাজার পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা আব্দুল মান্নান পিল্টু বলেন- যেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানে দিনের বেলায় ডাকাতি সংঘটিত হতে পারে। সেখানে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ তো চরম নিরাপত্তা হীনতায়।
এদিকে ডাকাতি ঘটনার খবর পেয়ে রোববার রাত ৮টার দিকে খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি, ক্রাইম) মো. নাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সংবাদ কর্মীদের কাছে ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন- ব্যাংক চালানোর জন্য এ ভবন মোটেও উপযুক্ত না। আজকের এ ঘটনা আমাদের জন্য অনাকাঙ্খিত। আমার ধারনা, এ জেলার মধ্যেই অপরাধীদের অবস্থান। আমরা আশাবাদী অল্প সময়ের মধ্যে আসামি ধরতে পারবো।
তিনি আরও বলেন- ব্যাংক কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতি আছে। ব্যাংকের মতো একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে একটা সিসিটিভি ক্যামেরাও নেই, বর্তমান যুগে এটা ভাবা যায়না।
এদিকে, আজ সোমবার সকাল থেকে ডাকাতির ঘটনার ক্লু উদ্ধারে সাদা পোশাকে র্যাব, সিআইডি, ডিজিএফআই, পুলিশ ও ডিবি পুলিশের কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী বাজারে অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত উথলী সোনালী ব্যাংক শাখায় গতকাল রোববার বেলা সোয়া ১টার সময় ফিল্মিস্টাইলে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাত দল এ সময় অস্ত্রের মুখে ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরীসহ সবাইকে জিম্মি করে নগদ ৮ লাখ ৮২ হাজার ৯০০ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
ডাকাতির ঘটনার পর খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি ক্রাইম) মো. নাহিদুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম, জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মো. হাফিজুর রহমান, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আবু রাসেল, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) উপপরিচালক জিএম জামিল সিদ্দিক, সোনালী ব্যাংকের ফরিদপুর জিএম অফিসের জেনারেল ম্যানেজার (ইনচার্জ) খোকন চন্দ্র বিশ্বাস, সোনালী ব্যাংকের চুয়াডাঙ্গার পিন্সিপাল অফিসের ব্যবস্থাপক খন্দকার আবুল কালাম আজাদ, সহকারী ব্যবস্থাপক আনিসুর রহমান, জীবননগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামসহ র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), ডিজিএফআই, ডিএসবি ও সিআইডির উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এনএস/