কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেট টানা তৃতীয়বার ‘প্রথম’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:১৭ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২০ বুধবার | আপডেট: ০৮:১৯ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২০ বুধবার
অক্টোবরে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে অবিশ্বাস্য সাফল্য দেখিয়েছে কুমিল্লা ভ্যাট। পর পর তিন বার প্রথম স্থান অর্জন কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেটের। অক্টোবর মাসে ৯৩.৬৮% অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কুমিল্লা।
অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ও রিটার্ন জমার হার বাড়ছে। এর মাধ্যমে অটোমেশনের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আরো এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। নিবন্ধন ও রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে কমিশনারেট গুলোতে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আর এই প্রতিযোগিতা গত তিন মাস ধরে প্রথম স্থান ধরে রেখেছে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কুমিল্লা।
কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেটের কর্মকর্তারা জানান, এ কমিশনারেটের টিম ওয়ার্ক এর ফলে অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন কমিশনার যোগদানের পর এ কমিশনারেটের অনলাইন রিটার্ন দাখিলের চিত্র পাল্টে যায়।
গত জুলাইয়ে তিনি যোগদানের সময় অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে কুমিল্লার অবস্থান ছিল চারে। রিটার্ন দাখিলের হার ছিল ৫১ শতাংশ। তিনি যোগদানের পর ১৫ জুলাই কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম জুম সভা করা হয়। সভার পরপরই কমিশনার তদারকি শুরু করলেন।
এ কমিশনারেটর ছয়টি জেলায় করদাতাদের ফোন, প্রতিষ্ঠানের তদারকি বাড়ানো হয়। ‘রিটার্ন ওয়ানস্টপ কাউন্টার’ গঠন করা হয়। কুমিল্লা ভ্যাট টিম নিরন্তর ও ক্লান্তিহীন কাজ শুরু করেন।
এ বিষয়ে কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, অটোমেশন সরকারের অগ্রাধিকার। এনবিআর সে লক্ষ বাস্তবায়নে বরাবরই অগ্রণী। কুমিল্লার কর্মপ্রবণ টিম প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। কুমিল্লার সঙ্গে এনবিআরের সম্মানও উচ্চকিত করেছে। করোনাকালে কুমিল্লা টীম কখনো পশ্চাদমূখী বা কর্মবিচ্যুতি থাকেনি। দলবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রতিযোগিতা এ অভূতপূর্ব সাফল্যের মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, সক্ষম কর্মকর্তাদের বাছাই করে জটিলতর কাজে নিয়োগ, মনিটরিং উদ্বুদ্ধকরণ এক্ষেত্রে গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। সর্বোপরি কর্মস্থলে দেশাতœবোধ ও সেবার মনোভাব থাকা জরুরী। সারা বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের এরকম কাজের ধারা অব্যাহত থাকা উচিত। দক্ষ, সক্ষম, উপযুক্ত ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে সকল কর্মকর্তাদের ভবিষ্যতেও পুরস্কৃত করা হবে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মোঃ আবদুল হাকিম বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও সাহস ও উদ্যম নিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ রাজস্ব আদায় ও রিটার্ন অনলাইন দাখিলের কাজ করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি রিটার্ন দাখিলের অসাধারন অবদানের জন্য রাজস্ব কর্মকর্তা ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কারের ধারা অব্যাহত থাকলে সকলের কাজের মান বাড়ে।
যুগ্ম কমিশনার জনাব মোঃ মুশফিকুর রহমান বলেন, অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেট টানা তৃতীয়বার ‘প্রথম’। রিটার্ন দাখিলের প্রথম স্থান অর্জনের পথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। ছয় জেলায় করদাতাদের সচেতন করার লক্ষ্যে টেলিফোনে যোগাযোগের পাশাপাশি মোবাইলে ইঁষশ এসএমএস, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি এবং স্থানীয় ক্যাবল অপারেটরে বিজ্ঞপ্তি ও বাসায় কর্মকর্তারা সশরীরে গিয়ে সম্মানিত করদাতাগণকে বুঝিয়ে রাজস্ব বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও শীর্ষ করদাতাদের উদ্বুদ্ধ করতে সৌজন্য গিফট সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার (সদর) মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন রিপন বলেন, সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যে নান্দনিক দৃশ্যমান প্রতিযোগিতা বিরাজ করছে। একটা ভালো ‘‘টিমওয়ার্ক’’ এর মাধ্যমে এ অর্জন। স্বীকৃতি কাজের প্রণোদনা বৃদ্ধি করে। কর্মকর্তারা পরিশ্রম করেছেন। আমরা প্রকৃত কর্মীদের স্বীকৃতি দানের চেষ্টা করছি। মাঠ পর্যায়ে যে সকল পরিশ্রমী কর্মকর্তা এতে ভূমিকা রেখেছেন তাঁদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। মোট জমাকৃত দাখিল পত্রের তুলনায় অনলাইনে দাখিলের শতকরা হার ৯৯.৪১%। গত তিন মাসের মতো ভবিষ্যতেও রিটার্ন দাখিলের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, করোনাকালে ভয়কে জয় করে কুমিল্লা টীম নিজ কাজে এগিয়ে গেছে। দলবদ্ধ প্রচেষ্টা ও প্রতিযোগিতা এ অভূতপূর্ব সাফল্যের মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। সক্ষম ও দক্ষ কর্মকর্তাদের বাছাই করে গুরুত্বপূর্ণ ও জটিলতর কাজে নিয়োগ, মনিটরিং উদ্বুদ্ধকরণ এক্ষেত্রে গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। সর্বোপরি কর্মস্থলে দেশাত্মবোধ ও সেবার মনোভাব থাকা জরুরী। সারা বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের এরকম কাজের ধারা অব্যাহত থাকা উচিত। অফিস সময় ছাড়াও বাড়তি সময় কাজ করায় কর্মকর্তাদের মনোভাব প্রশংসনীয়।
‘আলোকিত কাস্টমস, আলোকিত দেশ’ গড়ার লক্ষ্যে কুমিল্লা কাস্টমস এ ‘অতিক্রমে নয়; ব্যতিক্রম’ নীতিতে কাজ চলমান রয়েছে।
আরকে//