চলনবিলে চলছে শামুক নিধনের মহোৎসব (ভিডিও)
পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০১:৩০ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০২০ শনিবার
পাবনার চলনবিল অঞ্চলে চলছে শামুক নিধনের মহোৎসব। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী শামুক কিনে বিক্রি করে ফায়দা লুটছে। প্রতিদিন কয়েকশ’ বস্তা শামুক ট্রাকে করে চলে যাচ্ছে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা অঞ্চলের চিংড়ি ঘেরে। পরিবেশবিদরা বলছেন, পানি দূষণরোধে প্রাকৃতিক ছাকনী হিসেবে খ্যাত এই জলজ প্রাণী নিধনের ফলে হুমকিতে জীববৈচিত্র। কমে যাচ্ছে কৃষি জমির উর্বরতা শক্তিও।
পাবনার চলনবিলের অন্যতম বড় একটি বিল খলিশাগাড়ি বিল। বিলপাড়ের বাসিন্দাদের বর্ষা মৌসুমে আয়ের একটি উৎস মাছ শিকার। আর ইদানিং যোগ হয়েছে শামুখ ধরা। স্থানীয় ব্যাপারীরা প্রান্তিক মানুষদের দিয়ে প্রতিদিন ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় শামুখ সংগ্রহ করায়। এরপর বস্তা প্রতি ২শ’ থেকে আড়াইশ’ টাকা দরে কিনে নেয়।
শুধু এই বিলেই নয়, জেলার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর ও সুজানগর উপজেলার বিল কুড়ালিয়া, আফরার বিল, নলডাঙ্গা বিল, ডিকশীর বিল, বগা বিল, হান্ডিয়াল বিলসহ বিভিন্ন বিলে এভাবেই প্রতিদিন চলছে শামুক নিধন।
স্থানীয় ব্যাপারীরা প্রতিদিন বিলপাড়ের মানুষের কাছ থেকে শামুক কিনে, পরে বিক্রি করে বড় ব্যাপারীদের কাছে।
এক ব্যাপারী জানান, দশ বছর ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কোটি কোটি টাকার এই ব্যবসা।
পরিবেশবিদ ও কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, শামুক নিধনের ফলে পানির জীববৈচিত্র হুমকির মুখে।
পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক তোজাম্মেল হোসেন বলেন, পোল্ট্রি ফিড এবং ফিস ফিড তৈরি করার জন্য কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান লোক নিয়োগ করে তারা এই জলাশয়গুলোর জীববৈচিত্র নিঃশেষের একটা খেলায় মেতে চলছে।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সামছুল আলম বলেন, এর ফলে জর্মির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। বন্ধ হলে জীববৈচিত্র রক্ষা পাবে এবং আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা পাবে।
শামুক নিধনে সুনির্দিষ্ট শাস্তি না থাকার কথা জানিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জেলা মৎস কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, এটা মাছ চাষের জন্য উপকারী তা বলবো না। তবে প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য খুবেই উপকারী।
পাবনা সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, শামুক ধরার ক্ষেত্রে সেভাবে সুনির্দিষ্ট কোন শাস্তির কথা বলা হয়নি।
নিধন বন্ধ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করা না গেলে আগামীতে বিল অঞ্চল থেকে শামুকের অস্তিত্ব হারানোর আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এএইচ/এসএ/