নওগাঁর হালিমনগর আদিবাসী গণহত্যা দিবস পালিত
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:১৬ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০২০ সোমবার
নওগাঁ পত্নীতলা উপজেলার নির্মইল ইউনিয়নের হালিমনগর আদিবাসী বধ্যভুমিতে শ্রদ্ধায় গণহত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। সোমবার সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ ও বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ এর যৌথ উদ্যোগে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। সকালে অস্থায়ী স্মৃতিফলকে পুস্প শ্রর্দ্ধাঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসুচি শুরু করা হয়।
এসময় শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বিকেলে বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে শহীদদের স্মরণে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ, নওগাঁর সিনিযর সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ ছিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, পরিষদের সহ-সভাপতি প্রতাপ চন্দ্র সরকার, সাধারণ সম্পাদক এম এম রাসেল, স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক গুলু মুরমু,সদস্য সচিব রমেন বর্মণ, আতাউর রহমান, লক্ষ্মী বর্মণ, আব্দুস সামাদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে ৩০ নভেম্বর দিনভর পাক হানাদার বাহিনী বরেন্দ্র এলাকাখ্যাত ওই এলাকায় তাণ্ডব চালায়। হানাদার বাহিনী আশে-পাশের এলাকা থেকে আদিবাসীসহ প্রায় অর্ধ-শতাধিক মুক্তিকামী নারী-পুরুষকে ধরে এনে হালিমনগর গ্রামের জংগলের ভিতর ফাঁকা জায়গায় সারিবদ্ধভাবে দাড় করায়। এর কিছু পরেই হানাদার বাহিনী তাদের উপর মেশিনগানের ব্রাশ ফায়ারে নির্মমভাবে তাদের হত্যা করে। তাদের মধ্যে ৮ জন বেঁচে যান। তাদের মধ্যে গুলু মুরমু একজন। সেদিনের সেই বিভৎস দৃশ্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে
পড়েন।
তিনি বলেন, হানাদার বাহিনী চলে যাওয়ার পর গ্রামবাসী সেখানেই মাটি খুঁড়ে তাদের চাপা দেয়। আর আমাদের ৮ জন উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশ ছিল আদিবাসী ও ক্ষেত খামারে মজুর। দীর্ঘদিন বধ্যভুমিটি সকলের অগোচরেই ছিল।
২০১৪ সালে একুশে পরিষদের উদ্যোগে বধ্যভূমির সন্ধান সেখানে প্রথম অস্থায়ী স্মৃতিফলক স্থাপন করেন। নিহতদের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় পাওয়া গেলেও আজও অপর শহীদদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। আয়োজকরা জানান, অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন এলাকা থেকে সেখানে আদিবাসীদের আশ্রয়ে থেকে হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে। সেখানে স্থায়ীভাবে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও শহীদ পরিবারদের স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানান বক্তারা।
কেআই//