ভিডিও দেখুন
মুক্তিযুদ্ধের প্রথম স্মারক ভাস্কর্য জাগ্রত চৌরঙ্গী
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১২:৫৩ পিএম, ১ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার
মুক্তিযুদ্ধের প্রথম স্মারক ভাস্কর্য জাগ্রত চৌরঙ্গী। গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তার এই ভাস্কর্য যেন জাতির অভিভাবক। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে জয়দেবপুরবাসী। সেই যুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নির্মাণ করা হয় এই ভাস্কর্য। এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনেও প্রতিরোধ যুদ্ধের স্মরণে নির্মাণ করা হয় আরেকটি স্মারক।
১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিল জয়দেবপুরের ছাত্র-জনতা। গড়ে তুলেছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ। এসময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন হুরমত, নিয়ামত, কানু মিয়া ও মনু খলিফা। আহত হন অনেকে।
মুক্তিযুদ্ধের সূচনা লগ্নের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের চেতনার প্রকাশ ও শহীদদের স্মরণে চান্দনা চৌরাস্তায় নির্মিত হয় জাগ্রত চৌরঙ্গী। বর্তমানে মহাসড়কের উন্নয়ন কাজের জন্যে অযত্নে পড়েছে জাগ্রত চৌরঙ্গী।
এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা জানান, যেভাবে সংরক্ষণ করার কথা ছিল ওইভাবে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যত্ন, অবহেলায় এখন ধূলাবালীতে ভরপুর। চেনার কোন অবস্থা নেই। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে অনুরোধ করবো, ওনারা যেন ব্যবস্থা নেন।
এদিকে, ১৯৭১ সালে ভাওয়াল রাজবাড়ীতে ছিলো দ্বিতীয় ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অবস্থান। এখানে এই রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যদের নিরস্ত্র করার জন্য পাক সৈন্য আসছে শুনে ছাত্র-জনতা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। কিছু বাঙালি সৈন্য ছাত্রজনতার সঙ্গে প্রতিরোধ যুদ্ধে যোগ দেয়। শহীদদের স্মরণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নির্মিত করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য। ভাস্কর্য দুটির নকশা প্রণয়ন করেন বরেণ্য শিল্পী আব্দুর রাজ্জাক।
এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা জানান, মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা মনে করিয়ে দেয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করে।
ভাস্কর্য দুটো মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে উজ্জ্বল রেখেছে বলে উল্লেখ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযোদ্ধা মো: হাতেম আলী বলেন, এই ভাস্কর্যটি আজকের গাজীপুরের স্মৃতি এবং ১৯ মার্চকে ধরে রেখেছে। আমরা এ জন্য গর্বিত।
জাগ্রত চৌরঙ্গী ভাস্কর্যটির তদারকির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমরা জানিয়েছে যে, তারা যেন অত্যন্ত সুরক্ষিতভাবে আবার স্থাপন করে এবং সকলের কাছে যেন দৃশ্যমান হয়। স্বাধীনতার মান, মর্যাদা যেন সমুন্নত থাকে।
মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্যগুলোর যথাযথ সংরক্ষণের দাবি এলাকাবাসীর।
এএইচ/