ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১

পাকিস্তানের চেয়ে সব সূচকেই এগিয়ে বাংলাদেশ (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:১৯ পিএম, ২ ডিসেম্বর ২০২০ বুধবার

যে পাকিস্তানকে হারিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম সেই পাকিস্তান থেকে এখন প্রায় সব সূচকেই এগিয়ে বাংলাদেশ। রপ্তানি আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক সবখাতেই বাংলাদেশের ধারে-কাছে নেই পাকিস্তান। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের এই অগ্রগতির পেছনে আছে প্রতিটি খাতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা। সেই সাথে নেতৃত্বেরও বড় ভূমিকা দেখছেন তারা।

১৯৬০ সালে তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানের জিডিপির আকার ছিল ১৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; আর ১৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের জিডিপি। ওই সময়ে এই ভূখণ্ডের উৎপাদন ও অর্থনীতি সমৃদ্ধই ছিলো।  

এক দশকের অর্থনৈতিক শোষণে পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতি ফুলে-ফেঁপে ওঠে। জিডিপি উন্নীত হয় ২৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে। আর ২৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার নিয়ে পেছনে পড়ে পূর্ব পাকিস্তান। বৈষম্য থেকেই বাঙালির মুক্তির আকাঙ্খা। 
 
মুক্তিযুদ্ধে আসে বিজয়। হানাদারদের ভয়ানক থাবায় ক্ষতবিক্ষত অর্থনীতি। শূণ্য থেকে নতুন বাংলাদেশের অর্থনীতির যাত্রা শুরু।

বিজয়ের ৪৯ বছরে তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশের অর্থনীতির সত্যিকারের বিজয় হয়েছে। সব সূচকেই পাকিস্তান থেকে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৪১ বিলিয়ন ডলার। যেখানে পকিস্তানের মাত্র ১৯ বিলিয়ন ডলার। আর মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশে ৮৪ টাকা পাওয়া গেলেও পাকিস্তানের গুণতে হয় প্রায় ১৬০ রূপী।
 
অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট বিশ্লেষকরা।

অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল এই দেশের মানুষের অগ্রগতির জন্যে। সেখানে আমরা অনেকখানি সফল হয়েছি, এখনও অনেক পথ বাকি। বঙ্গবন্ধু যে বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- সেই মুক্তি আসতে এখনও অনেক সময় লাগবে।

বাংলাদেশের ৪৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণের বিপরীতে পাকিস্তানের ঋণ ১১৩ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি বাণিজ্যেও বাংলাদেশের পেছনে পাকিস্তান। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। সেখানে পাকিস্তানের আয় ২২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।

মহামারি সত্ত্বেও গেল অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও পাকিস্তানের জিডিপি সঙ্কুচিত হয়েছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ।

শুধু অর্থনীতি নয়। নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবার পরিকল্পনা, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, টিকাদান কর্মসূচির মতো সামাজিক সূচকগুলোতে অনেক আগেই পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। 

ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ আরও বলেন, টেকসই উন্নয়নের তিনটি দিক আছে। একটা দিক হচ্ছে স্বাভাবিক উন্নয়ন, একটা দিক হচ্ছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আরেকটি দিক হচ্ছে পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন। কাজেই সামাজিক উন্নয়ন ছাড়া অর্থনৈতিক অগ্রগতি হতে পারে কয়েকজনের ক্ষেত্রে।

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কক্ষপথে বাংলাদেশ। আর বৈদেশিক ঋণের বোঝায় জর্জরিত একাত্তরে পরাজিত পাকিস্তান। বাংলাদেশের অর্জন- এখন পাকিস্তানিদের কাছে শুধুই স্বপ্ন।


এএইচ/এসএ/