বরিশালকে উড়িয়ে ঢাকার প্রথম জয়
নাজমুশ শাহাদাৎ
প্রকাশিত : ০৫:৩৫ পিএম, ২ ডিসেম্বর ২০২০ বুধবার
চলমান বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ৯ম ম্যাচে তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশালকে উড়িয়ে দিয়ে টুর্ণামেন্টে প্রথম জয়ের দেখা পেল বেক্সিমকো ঢাকা। আজ বুধবার দুপুরের ম্যাচে তামিম বাহিনীকে ৭ উইকেটে হারালো মুশফিকের দল।
অনেকটা আনকোরা রবিউল ইসলাম রবির স্পিন বিষে বিপর্যস্ত বরিশাল ঢাকার বিপক্ষে নির্ধারিত ২০ ওভারে সংগ্রহ করতে পারে মাত্র ১০৮ রান। ত্রিশোর্ধ রবি দুর্দান্ত বোলিং করে একাই শিকার করেন ৪টি উইকেট। জবাব দিতে নেমে মাত্র ৭ রানে প্রথম এবং ২৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারালেও ক্যাপ্টেন মুশফিকের দায়ীত্বশীল ব্যাটিং আর ইয়াসির আলী রাব্বীর ঝড়ে ১৯তম (১৮.৫) ওভারেই ৭ উইকেট হাতে রেখে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ঢাকা।
মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল বাউন্ডারি দিয়ে ইনিংস শুরু করেন। তামিম ও সাইফ হাসান- দুই ওপেনারই বাউন্ডারি ছোটাতে থাকেন শুরু থেকেই। তবে ৪ ওভার পর্যন্তই। ৫ম ওভারে এসে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন রবি।
পঞ্চম ওভারে টানা দুই বলে দুটি উইকেট শিকার করেন রবি। ফিরিয়ে দেন সাইফ হাসান (৯) ও পারভেজ হোসেন ইমনকে (০)। ওই ওভারে মাত্র ১ রান খরচায় ওই দুটি উইকেট নেন রবি। ষষ্ঠ ওভারে এসে মেডেন দেন তরুণ নাঈম হাসান। সপ্তম ওভারে এসে আবার আঘাত হানেন রবি, এবারে তার শিকারে পরিণত হন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ৭ বল খেলেও রানের দেখা পাননি এই অলরাউণ্ডার।
যাতে ২৮ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বরিশাল। সেই চাপ থেকে দলকে বের করতে চেষ্টা করেন তামিম ইকবাল ও তৌহিদ হৃদয়। তবে তাদের সেই চেষ্টাতেও বাগড়া দেন রবি। মুক্তার আলির তালুবন্দী হয়ে রবির চতুর্থ শিকারে পরিণত হন তামিম। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান করেন ৩১ বলে ৩১ রান। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও একটি ছক্কা। তার আগে অবশ্য হৃদয়ের সঙ্গে গড়েন ৩৭ রানের জুটি।
ইনিংসের ১৪তম ওভারে আবারও বরিশালের কান্নার কারণ হয়ে ওঠেন সেই রবি। নাঈমের বলে ইরফান শুক্কুরের এক দুর্দান্ত ক্যাচ লুফে নেন তিনি। পতন হয় বরিশালের পঞ্চম উইকেটের। ইরফান ফেরেন ৮ বলে ৩ রান করে। এরপর শফিকুল ইসলামের বলে রবির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হৃদয়। ফেরার আগে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৩ রান (৩৩ বল) করেন এই তরুণ।
একই ওভারে মেহেদী হাসানকেও ক্যাচ আউটের ফাঁদে ফেলেন শফিকুল। ওভারটি মেডেনও আদায় করে নেন শফিকুল। এ নিয়ে মোট দুটি মেডেন ওভার আদায় করেন এই বাঁহাতি পেসার।
পরে অবশ্য ছক্কা মেরে বরিশালের ইনিংস শেষ করেন তাসকিন আহমেদ। যাতে শেষ অবধি নির্ধারিত ২০ ওভারে ১০৮ রান সংগ্রহ করতে পারে বরিশাল।
ঢাকার পক্ষে রবি ৪ ওভারে ২০ রানের বিনিময়ে শিকার করেন গুরুত্বপূর্ণ ৪টি উইকেট। নাঈম ৪ ওভারে ৮ খরচায় পান ১টি ও শফিকুল ১০ রান খরচায় পান ২টি উইকেট। রুবেলও নিয়েছেন একটি উইকেট।
জবাব দিতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় ঢাকা। দুর্দান্ত বোলিং করা রবিউল ইসলাম রবিকে (২) ফিরতে হয় রান আউটের ফাঁদে পড়ে। এরপর ২৩ রানের মাথায় আবারও রান আউটে উইকেট খোয়ায় ঢাকা। এবার শিকার ওপর ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। ২০ বলে একটি মাত্র চারে ১৩ রান করেন তিনি।
এরপর দলীয় ৫৪ রানে তৃতীয় ও শেষ উইকেট হারায় ঢাকা। কেননা, এরপর ১০৯ রানের লক্ষ্যে পৌঁছতে দলের আর কোনও ক্ষতি হতে দেননি অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলী রাব্বি।
মুশফিক দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে ৩৪ বল মোকাবেলায় একটি মাত্র চারে ২৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। তবে তার সঙ্গী ইয়াসির আলী খেলেন ৩০ বলে ৪৪ রানের এক ঝোড়ো ইনিংস। যে ইনিংসে ছিল তিনটি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কার মার।
এর আগে তানজিদ হাসান তামিম ফেরেন ২০ বলে ২২ রান করে। বগুড়ার তরুণের ইনিংসে ছিলো দুটি চারে সঙ্গে একটি ছক্কার মার। আগের দুটি রান আউট হওয়ায় বরিশালের হয়ে এই একটি মাত্র উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফরচুন বরিশাল: ১০৮/৮ (২০ ওভার); হৃদয় ৩৩, তামিম ৩১, মিরাজ ১২; রবি ৪/২০, শফিকুল ২/১০, নাঈম ১/৮।
বেক্সিমকো ঢাকা: ১০৯/৩ (১৮.৫ ওভার); ইয়াসির আলী ৪৪, মুশফিক ২৩, তানজিদ ২২; মিরাজ ১/১৩।
ফলাফল: বেক্সিমকো ঢাকা ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: রবিউল ইসলাম রবি।
এনএস/