ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

চারণকবি বিজয় সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৭ এএম, ৪ ডিসেম্বর ২০২০ শুক্রবার

একুশে পদকপ্রাপ্ত চারণকবি বিজয় সরকারের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর হয়। সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়। 

বিজয় সরকার একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। এক হাজার আটশর বেশি গান লিখেছেন তিনি। তার প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সংগীত ও অসাধারণ গায়কি ঢঙের জন্য তিনি ‘সরকার’ উপাধি লাভ করেন। তিনি ‘পাগল বিজয়’ হিসেবে সমধিক পরিচিত।

অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুরস্রষ্টা, গীতিকার ও গায়ক, চারণকবি বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নবকৃষ্ণ অধিকারী এবং মার নাম হিমালয়া দেবী। দশ ভাইবোনের মধ্যে বিজয় ছিলেন সবার ছোট।

তার শৈশবকাল এবং জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে প্রিয় জন্মভূমি ডুমদিসহ নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায়। ছেলেবেলা থেকেই বিজয় সরকার কবিতা, গান রচনা ও সুরের মধ্যে ডুবে থাকতেন। ১৯২৯ সালে বিজয় সরকার নিজের একটি গানের দল করেন এবং কবিয়াল হিসেবে পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ভাটিয়ালী সুরের উপর ভিত্তি করে তার ধুয়া গানের জন্য তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা পান।  জনপ্রিয় এই কবিয়াল ও বিচ্ছেদী গানের পথিকৃৎ গণ-মানুষের মনো-গভীরের অলিখিত কথাই তার গানে তুলে আনতেন। 

‘পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ একদিন ভাবি নাই মনে’, ‘এই পৃথিবী যেমন আছে/ তেমনি ঠিক রবে/ সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে/ একদিন চলে যেতে হবে...’, ‘তুমি জানো নারে প্রিয়/ তুমি মোর জীবনের সাধনা’-এমনি অসংখ্য জনপ্রিয় গানের রূপকার তিনি।

এই গুণী শিল্পী শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন।

তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইল সদরের বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের টাবরা গ্রামে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, প্রদীপ প্রজ্বালন, কবিতা পাঠের আসর, কবির জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা, বিজয়গীতি পরিবেশন এবং গণভোজ। স্থানীয় মেম্বার ভররঞ্জন রায় জানান, করোনার কারণে এবার সীমিত পরিসরে বিজয় সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হবে।

নড়াইল জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মলয় কুণ্ডু বলেন, ‘বিজয় সরকারের অসংখ্য গান ছড়িয়ে রয়েছে। এসব গান ও সুর সংগ্রহ করে স্বরলিপি আকারে বই প্রকাশ করা জরুরি। শিল্পীর জন্মভূমিতে বিজয় স্মৃতি সংগ্রহশালা নির্মিত হলে কবির স্মৃতি সংরক্ষণ সহজ হবে।’
এসএ/