ফের খুলনার কাছে হারলো বরিশাল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৫৯ পিএম, ৪ ডিসেম্বর ২০২০ শুক্রবার
অনবদ্য ফিফটি পূরণের পথে ম্যাচসেরা জাকির হাসানের একটি শট।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফিরতি লেগেও সাকিব-মাহমুদুল্লাহর জেমকন খুলনার কাছে হার মানলো তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) টুর্নামেন্টের ১১তম ম্যাচে বরিশালকে ৪৮ রানে হারায় খুলনা। প্রথম পর্বে বরিশালকে ৪ উইকেটে হারিয়েছিলো রিয়াদ বাহিনী।
প্রথমে ব্যাট করে জাকির হাসানের ব্যাটে চড়ে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৩ রান করে জেমকন খুলনা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন উইকেটরক্ষক জাকির হাসান। জবাবে ১২৫ রানে অলআউট হয় বরিশাল।
এই জয়ে ৫ ম্যাচে ৩টি জয় ও ২টি হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে উঠে বসলো খুলনা। সমান সংখ্যক ম্যাচে ১টি জয় ও ৪টি হারে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থস্থানে বরিশাল।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি খুলনার। ২ রান করে বরিশালের পেসার তাসকিন আহমেদের শিকার হয়ে বিদায় নেন ওপেনার জহিরুল ইসলাম অমি।
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে এরপর শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার জাকির হাসান ও ইমরুল কায়েস। ১৪ ওভারে দলকে ১০৯ রানে পৌছে দেন তারা। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৮ বলে ৯০ রানের জুটি গড়েন জাকির ও ইমরুল। ৩৪ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৭ রান করা ইমরুলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গেন বরিশালের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি।
তবে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন এবারের আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা জাকির। তবে ইমরুলের পরপরই থামেন জাকিরও। ৪২ বলে ১০টি চারে ৬৩ রান করে বরিশালের পেসার তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি।
১৫ দশমিক ২ ওভারে দলীয় ১১৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় খুলনা। শেষ ২৮ বলে দ্রুত রান তোলার পরিকল্পনা ছিলো তাদের। কারণ সাকিব-মাহমুদুল্লাহর দিকে তাকিয়ে ছিলো দল। ২টি চারে ইনিংস শুরু করলেও ফের বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন সাকিব। ১০ বলে ১৪ রান করে ফেরেন তিনি।
সাকিব জ্বলে উঠতে না পারলেও শেষদিকে দ্রুত রান তুলেছেন মাহমুদুল্লাহ। ফলে ১৯ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫৯ রানে পৌঁছায় খুলনা। তখন ১৩ বলে ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। তাইতো শেষ ওভারে মাহমুদুল্লাহর কাছ থেকে আরও কিছু রানের প্রত্যাশায় ছিলো খুলনা। কিন্তু ঐ ওভারের দ্বিতীয় বলে শামিম ও তৃতীয় বলে মাহমুদুল্লাহকে শিকার করে হ্যাট্টিকের সুযোগ তৈরি করেন রাব্বি।
যদিও রাব্বির সে আশা পূরণ হয়নি। চতুর্থ বলে শুভাগত হোম চার ও শেষ বলে আরিফুল হক ছক্কা হাঁকালে ৬ উইকেটে ১৭৩ রানের বড় সংগ্রহ পেয়ে যায় খুলনা। ১৪ বলে ৪টি চারে ২৪ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। আরিফুল ১ বলে ৬ রান ও শুভাগত ২ বলে ৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। বরিশালের রাব্বি ৩৩ রানে ৩টি এবং তাসকিন ৪৩ রানে ২টি উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৭৪ রানের টার্গেটে শুরুটা ভালো ছিলো ফরচুন বরিশালের। ৪৪ বলে ৫৭ রানের জুটি গড়েন দুই ওপেনার অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও পারভেজ হোসেন ইমন। তবে অষ্টম ওভারে বল হাতে নিয়েই ইমন-তামিমকে আউট করেন খুলনার অফ-স্পিনার শুভাগত হোম। দ্বিতীয় বলে ইমনকে ও শেষ বলে তামিমকে শিকার করেন এই স্পিনার।
ফেরার আগে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১ বলে ৩২ রান করেন তামিম। আর ২৬ বলে ১৯ রান করেন ইমন। নবম ওভারে রান আউটের ফাঁদে পড়েন ৩ রান করা আফিফ হোসেন। ফলে ৬০ রানেই তৃতীয় উইকেট পতনের পর চাপে পড়ে বরিশাল।
এ অবস্থায় দলকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন তৌহিদ হৃদয় ও ইরফান শুক্কুর। তবে বড় জুটি গড়তে ব্যর্থ হন তারা। সাকিবের ঘূর্ণির সামনে আত্মসমর্পন করেন শুক্কুর। বোল্ড হবার আগে ১৬ রান করেন এই বাঁহাতি।
এরপর এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন হৃদয়। ব্যক্তিগত ৩৩ রানে তার আউটের পর শেষের দিকের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলে পরাজয় বরণ করে নেয় বরিশাল। ১৯ দশমিক ৫ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট হয় তামিম বাহিনী। খুলনার শুভাগত-শহিদুল-হাসান ২টি করে উইকেট নেন। সাকিব ৪ ওভারে ২২ রানে ১ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জেমকন খুলনা: ১৭৩/৬, ২০ ওভার (জাকির ৬৩, ইমরুল ৩৭, রাব্বি ৩/৩৩)।
ফরচুন বরিশাল: ১২৫/১০, ১৯.৫ ওভার (হৃদয় ৩৩, তামিম ৩২, শহিদুল ২/১৭)।
ফল: জেমকন খুলনা ৪৮ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা- জাকির হাসান।
এনএস/