নাটোরের স্মৃতিস্তম্ভগুলো অরক্ষিত (ভিডিও)
নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০১:৫৪ পিএম, ৫ ডিসেম্বর ২০২০ শনিবার
নাটোরের লালপুরের ময়না গ্রামে হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ। ২৯ ও ৩০ মার্চ দু’দিন ধরে চলা যুদ্ধে শহীদ হন অর্ধশত মুক্তিকামী মানুষ। সেই শহীদদের স্মরণে তৈরি করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ। এছাড়া জেলার বিভিন্নস্থানে গণহত্যায় শহীদদের স্মরণেও রয়েছে সৃতিস্তম্ভ। তবে রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে সেগুলো এখন অরক্ষিত।
একাত্তরের ২৯ মার্চ। দলছুট একদল পাকিস্তানী সেনা নাটোরের লালপুরের দুর্গম ময়না গ্রামে সৈয়দ আলীর বাড়িতে ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ শত শত সাধারণ মানুষ গ্রামটি ঘিরে ফেলে। শুরু হয় যুদ্ধ। চলে ৩০ মার্চ অবধি। মারা যায় ৯ পাকিস্তানী সেনা। শহীদ হন সৈয়দ আলীসহ অর্ধশতাধিক।
৫ মে ১৯৭১। পাকিস্তানী বাহিনী নর্থবেঙ্গল সুগার মিলে ঢুকে হত্যা করে মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিমসহ ৪২ শ্রমিক কর্মচারীকে। এরপর ছাতনী-ভাবনী গ্রামে সাড়ে চারশ’ ঘুমন্ত মানুষকে তুলে স্থানীয় স্লুইস গেইটে নিয়ে গুলি করে বেনোয়েট দিয়ে খুচিয়ে এসিড ছিটিয়ে হত্যা করে।
মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস পাকসেনা ও তাদের দোসররা গুরুদাসপুরের নাড়িবাড়ি, বনপাড়ার রোমান ক্যাথলিক মিশন, সিংড়ার হাতিয়নদহ, কলম, বড়াইগ্রামের ধানাইদহ, সদরের ফতেঙ্গা পাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চালায়।
স্বাধীনতার পর এসব স্থানে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলা হয়। এসব স্মৃতিস্তম্ভ প্রায় সারাবছর থাকে অরক্ষিত। স্মৃতি স্তম্ভের পবিত্রতা রক্ষার দাবি সকলের।
স্থানীয়রা জানান, এই স্মৃতিসৌধগুলো শুধু বিশেষ বিশেষ দিনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে অনুষ্ঠান করা হয়। এছাড়া সারাবছরই সেটা অবহেলিত থাকে।
মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, আমার মনে হয় সকল মুক্তিযোদ্ধার নাম লিপিবদ্ধ থাকলে এই স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য আরও অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি হতো।
জেলা প্রশাসন বলছে, নাটোরের সকল গণকবর ও স্মৃতিস্তম্ভ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
নাটোর জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, বদ্ধভূমি, গণকবরসহ এগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নাটোর শহরের সাতটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। বিভিন্ন দিবসে বিশেষ করে বিজয় দিবস এবং স্বাধীনতা দিবসে আমাদের জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধের পক্ষ থেকে আমরা সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকি।
স্বাধীনতা চত্বরে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের তালিকায় শহীদদের ভুল নাম সঠিক করা এবং বাদ পড়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সংযুক্তির দাবি নাটোরবাসীর।
এএইচ/এসএ/