ঢাকা, বুধবার   ২৬ জুন ২০২৪,   আষাঢ় ১২ ১৪৩১

দূরের গ্রহাণু থেকে মাটি আনলো জাপানি মহাকাশযান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫২ এএম, ৬ ডিসেম্বর ২০২০ রবিবার

প্রায় ৪ লাখ কিলোমিটার দূরে থাকা চাঁদের মাটি প্রথম আনা হয়েছিল ৫ দশক আগে। এর ৫১ বছর পর ৩ কোটি কিলোমিটার দূরে থাকা গ্রহাণু (অ্যাস্টারয়েড)’র মাটি নিয়ে পৃথিবীতে সফলভাবে পৌঁছল জাপান মহাকাশযান হায়াবুসা-২। 

শনিবার (৫ নভেম্বর) মধ্যরাতের কিছু পরে গ্রহাণু (অ্যাস্টারয়েড)’র মাটি নিয়ে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বুকে নামে হায়াবুসা-২ মহাকাশযানটি।

জাপানের হায়াবুসা-২ মহাকাশযানটির কৃতিত্ব এটাই, কোনও দুর্ঘটনা ছাড়াই তারা নামতে পেরেছে গ্রহাণুতে। তার বুকে খননকাজও সারতে পেরেছে নিরাপদে। হায়াবুসা-২ এর নাম ইতিহাস হয়ে থাকবে।

মঙ্গল আর বৃহস্পতির মাঝখানে থাকা গ্রহাণুপুঞ্জ (অ্যাস্টারয়েড বেল্ট)-এর সদস্য গ্রহাণু ‘রিউগু’কে খুঁড়ে তার মাটি উপড়ে নিয়ে আসল জাপান স্পেস এজেন্সি (জাক্সা)’র মহাকাশযান হায়াবুসা-২। এই প্রথম কোনও গ্রহাণুর মাটি তুলে আনল সভ্যতা।

বিশ্বে প্রথম এই কৃতিত্বের জন্য জাপানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে নাসা। হায়াবুসা-২-এর এই গ্রহাণু- বিজয়কে নাসা বলেছে ‘একটি ঐতিহাসিক ঘটনা’। গত ২০ অক্টোবরই আরও একটি গ্রহাণু ‘বেন্নু’কে খুঁড়েও তার মাটি উপড়ে নিতে সফল হয়েছে নাসার পাঠানো মহাকাশযান ‘ওসিরিস-রেক্স’। যার পৃথিবীতে ফেরার কথা ২০২৩-এর গোড়ায়।

পৃথিবীতে প্রাকৃতিক সম্পদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলে চাঁদে ও গ্রহাণুতে খনিজের সন্ধান জরুরি হয়ে পড়েছে সভ্যতার। গ্রহাণুতে হায়াবুসা-২ এবং ওসিরিস-রেক্স-এর পদক্ষেপ তারই মাইলস্টোন হয়ে থাকল।

জাপানি মহাকাশযানের দৌলতেই গ্রহাণুকে খুঁড়ে মাটি পৃথিবীতে আনতে পারল গবেষণার জন্য। যা আগামী দিনে কোনও গ্রহাণুতে কী কী খনিজ পদার্থ রয়েছে, সেগুলো আমাদের জন্য কতটা জরুরি তা বুঝতে সাহায্য করবে।

বিশ্বে প্রথম এই কৃতিত্বের জন্য জাপানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে নাসা। হায়াবুসা-২ এর এই গ্রহাণু বিজয়কে নাসা বলেছে ‘একটি ঐতিহাসিক ঘটনা’। গত ২০ অক্টোবর আরও একটি গ্রহাণু ‘বেন্নু’কে খুঁড়েও তার মাটি উপড়ে নিতে সফল হয়েছে নাসার পাঠানো মহাকাশযান ‘ওসিরিস-রেক্স’। যার পৃথিবীতে ফেরার কথা ২০২৩ সালের শেষ দিকে।

কোনও গ্রহ বা উপগ্রহে নামার চেয়ে অনেক বেশি জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ কোনও গ্রহাণুতে নামা। কারণ, তার পিঠ অসম্ভব রকমের এবড়োখেবড়ো। আর তার পিঠও ততটা লম্বা, চওড়া নয়। তাই কোনও গ্রহাণুতে পা ছোঁয়ানোর বিপদ অনেক বেশি। যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে মহাকাশযান। 

আর সেই গ্রহাণুর খননকাজ আরও জটিল। কারণ, খোঁড়ার জন্য সমতল জায়গা খুবই কম মেলে গ্রহাণুতে। যার আশপাশে খাড়াই পাহাড়। সেই পাহাড়ের খাঁদে ধাক্কা লেগে ভেঙে চুরমার হয়ে যেতে পারে মহাকাশযান।

২০১৪ সালের ৩ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে হায়াবুসা-২। এটি ২০১৮ সালের জুনে মঙ্গল আর বৃহস্পতির মাঝখানে থাকা গ্রহাণুপুঞ্জের (অ্যাস্টারয়েড বেল্ট) সদস্য গ্রহাণু ‘রিউগু’তে পৌঁছায়। মহাকাশযানটি ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সেখান থেকে একটি নমুনা সংগ্রহ করে। 

এরপর কপার বুলেটের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৩৩ ফুট গর্ত তৈরি করে। সেই গর্ত থেকে ২০১৯ সালের ১১ জুলাই নমুনা সংগ্রহ করে হায়াবুসা-২।

এএইচ/