ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

‘শফিকুলকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৩৭ পিএম, ৭ ডিসেম্বর ২০২০ সোমবার

ড্রেসিংরুমে দলপতি মুশফিকের পাশে শফিকুল।

ড্রেসিংরুমে দলপতি মুশফিকের পাশে শফিকুল।

চলমান বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে বেক্সিমকো ঢাকার হয়ে বেশ ভালোভাবেই আলো ছড়াচ্ছেন পেসার শফিকুল ইসলাম। জেমকন খুলনার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় বগুড়ার এই তরুণের। 

বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের পরিচিত মুখ না হলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে সেই ২০১৮ সালে। দারুণ কিছুর ছায়া দেখতে পেয়ে বাংলাদেশ ‘এ’ দৈল, জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প ঘুরে ঠাঁই হয় হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের স্কিল ক্যাম্পেও।

যদিও বেশ নাটকীয়ভাবেই এইচপি ইউনিটে ডাক পান তরুণ পেসার শফিকুল ইসলাম। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ড্রাফটে। দলও পেয়েছেন তিনি। শফিকুলকে সুযোগ দিয়েছে বেক্সিমকো ঢাকা। দলটির অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম জানালেন, শফিকুলকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

২০১৮ সালে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে নাম লেখানোর পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিরিজের স্কোয়াডে ডাক পান। ঐ বছরই বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফর করেন এই বাঁহাতি পেসার। ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্পেও।

সবমিলিয়ে ৪টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচের সঙ্গে ৫টি লিস্ট-এ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছিল ২৩ বছর বয়সী তরুণের। এ বছর বেশ নাটকীয়ভাবে এইচপি স্কোয়াডে ডাক পান শফিকুল। সেই ক্যাম্পে নিজেদের মধ্যে ভাগ হয়ে খেলা ম্যাচে দারুণ পারফর্ম করেন। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় তার। নাম ওঠে বঙ্গবন্ধু কাপের প্লেয়ার্স ড্রাফটে।

ড্রাফট থেকে শফিকুলকে দলে টানে ঢাকা। দলটির হয়ে প্রথম ম্যাচে সুযোগ না পেলেও পরের চার ম্যাচে নিয়মিত তিনি। চলমান বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে চার ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়েছেন শফিকুল। ভালো বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও নিজের মাহাত্ম্য জাহির করে চলেছেন। 

রোববার (৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের বিপক্ষে ম্যাচে ইনফর্ম ব্যাটসম্যান লিটন দাসকে ফিরিয়েছেন অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়ে। যা টুর্নামেন্ট সেরা ক্যাচগুলোর একটি। সেই ম্যাচটি জিতেছে ঢাকা। অপরাজিত ৭৩ রান করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে তুলেছেন মুশফিক।

এর আগে প্রথম ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে ৩৪ রানে ২টি নিয়েই মূলত লাইমলাইটে আসেন শফিকুল। এরপর বরিশালের বিপক্ষে আরও ভালো পারফর্ম করেন এই তরুণ, মাত্র ১০ রানের বিনিময়ে নেন আরও দুটি উইকেট। পরে রাজশাহীর বিপক্ষে করেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। সে ম্যাচে ৩১ রান দিলেও তুলে নেন তিনটি উইকেট। সর্বশেষ চট্টগ্রামের বিপক্ষে ওই পারফর্ম।

ম্যাচ শেষে তাই শফিকুলের প্রশংসায় রীতিমত পঞ্চমুখ দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন- এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সুন্দর জিনিস কি? আমি তাহলে অবশ্যই বলব- সেটা শফিকুল। যেভাবে সে বল করেছে, বিশেষ শেষ তিন ম্যাচে সে ছিল অসাধারণ। তাকে দমিয়ে রাখা অতটা সহজ নয়।’

মুশফিক আরও যোগ করেন- ‘আমি মনে করি সে যেভাবে ক্রিজে এবং ক্রিজের বাইরে তার কাজটা করেছে এটা দুর্দান্ত। শুধু তার বোলিংই নয়, সে ফিল্ডিংয়েও ভালো করছে। আমি মনে করি এই ধরণের ক্রিকেটাররা ভবিষ্যতে অনেকদূর এগিয়ে যাবে।’

শুধু মুশফিকই নন, শফিকুলের বোলিংয়ে মুগ্ধ দলের অন্যরাও। তাদের মধ্যে অন্যতম শফিকুলের সিনিয়র টিমমেট ঢাকার পেসার রুবেল হোসেন। কয়েকদিন আগে তিনি বলেছিলেন, ‘ওর সাথে আমি নেটে বোলিং করেছি। তখনই দেখেছি ভালো বোলিং করে। পেস আছে, ভেরিয়েশন আছে। ভালো ছেলে এবং ভালো বোলার। আমার কাছে মনে হয় ওর ভবিষ্যৎ ভালো।’

এনএস/