ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

৮ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় পটুয়াখালী (ভিডিও)

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০১:০৩ পিএম, ৮ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার

৮ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় পটুয়াখালী জেলা। পানপট্টি যুদ্ধে পরাজিত হবার পর পটুয়াখালী থেকে পালাতে বাধ্য হয় হানাদার পাকিস্তানী সেনাদল। মাত্র ৬০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী মিলে পরাজিত করেছিলো ৩৭৫ জনের হানাদার দলকে। মুক্তিযোদ্ধাদের কোন ক্ষতি না হলেও সে যুদ্ধে নিহত হয়েছিলো ৩৫ পাকিস্তানি সেনা।

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পানপট্টিতে ১৯৭১ সালের ১৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত জেলার একমাত্র সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনীকে পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলো বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায়, ছয় মাইল দৌড়ে পানপট্টি ক্যাম্পে উপস্থিত হন মুক্তিবাহিনীর গুপ্তচর গলাচিপা এলাকার বাবলু। জানালো পাকিস্তানী আক্রমণ করবে পানপট্টি ক্যাম্পে। ক্যাম্প কমান্ডার নুরুল হুদা সব মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়টি জানালেন। পজিশনে চলে গেলো সকল মুক্তিযোদ্ধা। সকাল ৮টায় ক্যাম্পের পশ্চিম দিকে বাঁধের উপর পাকিস্তানি সেনারা আসতেই ট্রিগার টিপলো মুক্তিসেনারা। 

প্রথমেই দুই পুলিশসহ ৬ পাকিস্তানি সেনা মারা যাওয়ায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় হানাদাররা। আবার দল গুছিয়ে বেলা একটায় হামলা করে তারা। বিকেল ৪টা পর্যন্ত চললো লড়াই। মুক্তিবাহিনীর কাছে পরাজিত হয়ে পিছু হটে পাকসেনারা।

যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই স্থানে ১৯৯৬ সালে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ শুরু করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটু। পরে সরকারি সহয়তায় সেটি পূর্ণতা পায়।

পানপট্টি যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী গোলাম মোস্তফা টিটু জানান, সেই সকাল ৭টা থেকে আমাদের যুদ্ধ আরম্ভ হয়েছিল। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত একনাগারে মুক্তিবাহিনীর সাথে পাকবাহিনীর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়।

আরেক অংশগ্রহণকারী ফোরকান মিয়া বলেন, ওরা ফায়ারিং দেয় যাতে আমরা এখান থেকে উইড্র হয়ে চলে যাই। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমাদেরকে পরাজিত করতে পারেনি।

মুক্তিযোদ্ধাদের একটি নির্ভূল তালিকা দাবি করেছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

পানপট্টিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কাদের বিশ্বাস বলেন, পুরনো জেলখানার মধ্যে যে গণকবর, মাতবরবাড়ির গণকবর, ডিসির বাংলোর সামনের গণকবর এবং পায়রাকুঞ্জ সংলগ্ন একটি গণকবর এখন পর্যন্ত অরক্ষিত অবস্থায় আছে। 

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ, গণকবর ও বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণে সকলকে উদ্যোগী হওয়ার আহবান এই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।

এএইচ/এসএ/