ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

১১ ডিসেম্বরে যশোরের বিজয় সমাবেশটি স্মরণীয় একটি দিন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৪৮ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার

পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবলমুক্ত বাংলাদেশের মাটিতে ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বরের বিজয় সমাবেশটি জাতীয় জীবনের স্মরণীয় একটি দিন। যশোর টাউন হল ময়দানে অনুষ্ঠিত ওই বিজয় সমাবেশ শুধু যশোর নয় দেশবাসীর জন্যে দিনটি গৌরবের।

মুক্ত বাংলার প্রথম এই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, ফণীভুষণ মজুদার, সোহরাব হোসেন, ব্যরিস্টার আমিরুল ইসলাম, চরমপত্রপাঠক এম আর আকতার মুকুল, চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান, অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম প্রমুখ।

সেদিন অনেকের সঙ্গে ওই সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবুল (বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী) জানান, সেদিনের সমাবেশে প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্যে ভারতের তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এছাড়াও ওই সমাবেশ থেকে তিনি বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেয়ার জন্যে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আর ধ্বংশ নয়, যুদ্ধ নয়। এই মুহূর্তে কাজ হল- যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। তিনি সর্বস্তরের মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনায় দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যশোরের তৎকালীন ডিসি ওয়ালি উল ইসলাম এবং কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন ঘোষালকে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলায় যেন অবনতি না ঘটে। একই সাথে জনতাকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করবেন। 

তাজউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, স্বাধীন এই দেশে ধর্ম নিয়ে আর রাজনীতি চলবে না। আর তাই জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রওশন আলী পরিচালনা করেন তাজউদ্দিন আহমেদের রাজনৈতি সচিব আলী তারেক।

মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, যুদ্ধকালীন বৃহত্তর যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খান টিপু সুলতান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভীম সেন, প্রবাসী সরকারের ফটোগ্রাফার আব্দুল হামিদ রায়হান, ফটোগ্রাফার মো.শফি প্রমুখ। এদের মধ্যে ব্যরিস্টার আমিরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার এবং অ্যাড, ভীম সেন ছাড়া সকলেই প্রয়াত।

খুরশিদ আনোয়ার বাবুল বলেন, এই জনসভা যখন হয় তখন যশোরের আশপাশে যুদ্ধ চলছিল। জনসভা শেষে নেতৃবৃন্দ সড়ক পথে কোলকাতা চলে যান। এদিকে এদিনের সংক্ষিপ্ত ঘটনা পঞ্জী যশোর কালেক্টরেট চত্তরে ইতিহাস ঐতিহ্য স্তম্ভে লিপি বদ্ধ আছে।- বাসস

এসি