ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

জন্মদিনের কেক খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে যুবককে পিটিয়ে হত্যা 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৫৮ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২০ শনিবার | আপডেট: ০৬:১৫ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২০ শনিবার

জন্মদিনের কেক খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জেরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত যুবকের নাম মো. ছুফিয়ান (৩৩)। বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে সন্দ্বীপ উপজেলার হারামিয়া ইউনিয়নের কাচিয়াপাড় গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। 

তবে ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজন ও নিহত ছুফিয়ানের পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে অন্য কথা। নিহত যুবক ছুফিয়ানের সাথে জায়গা জমি নিয়ে কারও সঙ্গে খুন হয়ে যাবার মতো তেমন কোনও বিরোধ ছিলো না। তবে বছর চারেক আগে একটি নারীঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করেই মূলতঃ দুটি পরিবারের মধ্য দ্বন্দ্ব চলছিল।

দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছুফিয়ানকে একই জায়গায় হত্যা মামলার ৩নং আসামি সাজেদুর রহমান মান্নার (২৪) নেতৃত্বে হত্যার উদ্দেশে একইভাবে একবার হামলা চালিয়ে বেদমভাবে মেরে পানিতে ফেলে দিয়েছিল। সে যাত্রায় এলাকাবাসীর সহায়তায় ছুফিয়ান প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল। বিষয়টি তখন নেতৃস্থানীয় অনেককেই জানানো হয়েছিলো। কিন্তু কোনও প্রতিকার তারা পায়নি বলে জানান। 

মান্নার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয়বার ১০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় যখন ছুফিয়ানকে হত্যার উদ্দ্যেশে তার বাড়ীর সামনে আক্রমণ করা হয়, তখন তার নেতৃত্বেও ছিলো এই মান্না।

নিহত ছুফিয়ানের পরিবার দাবি, ছুফিয়ানকে হত্যার মূল মাষ্টার মাইন্ড মান্নার মা সুরমা বেগম। আর হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নকারী হচ্ছে- মান্নাসহ
এলাকার কিশোর গ্যাং-এর সহযোগিরা। 

ছুফিয়ান হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার ছোটো ভাই ফরহাদ বাদী হয়ে রাশেদ (২৭) নামে একজনকে মূল আসামি করে ৮ জনের নামে দণ্ডবিধি ১৪৩/৩২৩/৩০২/৫০৬/৩৪ পেনাল কোডে সন্দ্বীপ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং-০৬। 

সন্দ্বীপ থানা পুলিশ সুরমা বেগম (এজাহারভুক্ত ৭ ও ৮নং আসামি) ও ৬নং আসামি আজিমপুরের সোহরাব মেম্বারকে গ্রেফতার করেছে। 

এ ব্যাপারে সন্দ্বীপ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বশির আহমেদ খান এই প্রতিবেদককে জানান, ছুফিয়ানের সঙ্গে সাজেদুর রহমান মান্নার পরিবারের পূর্ব শত্রুতা ছিল। গত বৃহস্পতিবার ছিল মান্নার জন্মদিন। এদিন কেক কেটে তার জন্মদিন পালন করছিল তার পরিবারের সদস্যরা। এ সময় ছুফিয়ানকে সেখানে দেখলে তারা জোর করে তাকে কেক খাইয়ে দেয়। এই নিয়ে শুরু হয় কথা কাটাকাটি, এরপর দু'পক্ষের হাতাহাতি। এক পর্যায়ে ছুফিয়ানের উপর হামলা শুরু করে সাজেদুর রহমান মান্না ও তার সহযোগীরা। 

পরে অচেতন অবস্থায় ছুফিয়ানকে সন্দ্বীপ মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, নিহত ছুফিয়ান সন্দ্বীপ হারামিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়র্ডের কাছিয়াপাড় গ্রামের রজব আলী বাড়ির হেদায়েত উল্যাহর বড় ছেলে। সে
ওমান প্রবাসী ছিলো। মৃত্যুর পূর্বে সে তার বাড়ির সামনে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান করে কোনওরকম সংসার চালাতো। তার স্ত্রী ছাড়াও দুটি কন্যাশিশু রয়েছে।

কেআই//এনএস/