নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনে ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪:০৮ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ধর্ষণের দুই মামলায় প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন প্রকাশ দেলু’সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আজ মঙ্গলবার সকালে নোয়াখালী পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।
তিনি জানান, মামলা দু’টি থেকে গ্রেপ্তারকৃত আসামি রহমত উল্যা ও মাইন উদ্দিন শাহেদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ১৪ জনের মধ্যে ৪ জন এখনও পলাতক রয়েছে।
চার্জশীটভুক্ত আসামিরা হচ্ছেন- দেলোয়ার হোসেন দেলু, জামাল উদ্দিন প্রকাশ প্রবাসী জামাল, নূর হোসেন বাদল, আব্দুর রহিম, মোহম্মদ আলী প্রকাশ আবুল কালাম, সামছুদ্দিন সুমন প্রকাশ কন্ট্রাক্টর সুমন, ইসরাফিল হোসেন মিয়া, মাইন উদ্দিন সাজু, নূর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ, আব্দুর রব চৌধুরী প্রকাশ লম্বা চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান প্রকাশ আরিফ, মিজানুর রহমান প্রকাশ তারেক, মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ প্রকাশ সোহাগ মেম্বার।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই জানায়- চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দু’টি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল ও নোয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী তদারকি করেন। পরবর্তীতে ধর্ষণ মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল মোস্তফা ও নির্যাতন মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারীকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ধর্ষণ মামলার দুই আসামি ও নির্যাতন মামলায় ওই দুইজনসহ ১০ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ৮ জন। এখনও পর্যন্ত পলাতক রয়েছে জামাল উদ্দিন, আব্দুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান আরিফ ও মিজানুর রহমান তারেক নামের চার আসামি।
পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ১০০ পাতায় ধর্ষণ ও ৩৩২ পাতায় নির্যাতন মামলায় ১৪ জন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশীট নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক উৎপল চৌধুরীর নিকট জমা দেওয়া হয়েছে। পলাতক চার আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর স্বামী তার সাথে দেখা করতে তার বাবার বাড়ী একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে এসে তাদের ঘরে ঢোকেন। বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার রাত ১০টার দিকে তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে পর পুরুষের সাথে অনৈতিক কাজ ও তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে ওই নারীকে পিটিয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারন করে।
পরে ৪ অক্টোবর দুপুরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েল জেলায় তথা দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে এ ঘটনায় দায়েরকৃত নির্যাতন, ধর্ষণ ও পর্ণগ্রাফী মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।
এনএস/