চোখ জুড়ানো উন্নয়ন কৃষিখাতে
ড. জাহাঙ্গীর আলম
প্রকাশিত : ০৮:০৯ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার
ষাট এবং সত্তরের দশকের আমাদের কৃষির অবস্থা কেমন ছিল? ভাবতে গেলে খুবই একটা দীনদশা আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে। ঘরে ঘরে ছিল ভাতের অভাব। একজন শ্রমিক সারাদিন কাজ করে যে মজুরি পেত তাতে ৩ কেজি চাল কেনারও সামার্থ্য হতো না। এখন আর সেই অভাবের দিন নেই। যে কৃষক আগে খাদ্য ঘাটতিতে ছিল সে এখন খাদ্যে উদ্বৃত্ত। যে শ্রমিকের দাবি ছিল ৩ কেজি চালের সমান মজুরি, সে এখন কাজ করে ১০ কেজি চালের সমান দৈনিক মজুরিতে। কী কৃষক, কী শ্রমিক কারোরই আর তেমন খাদ্যের অভাব হয় না। না খেয়ে দিন কাটে না কোন মানুষেরই।
কৃষিখাতে এখন উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। শুধু খাদ্যশস্যের উৎপাদনই নয়, বেড়েছে শাক-সবজি, ফলমূল, ডিম, দুধ, মাছ ও মাংসের উৎপাদন। বাজারে অভাব নেই কোনো কৃষি পণ্যের। প্রতি বছর এদেশে মানুষ বাড়ছে ২০ লাখ। কৃষি জমি কমছে ৮ লাখ হেক্টর। তারপরও জনপ্রতি সরবরাহ কমছে না কৃষি পণ্যের। বরং বাড়ছে নিরন্তর। তার কারণ নতুন প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে আমাদের কৃষিখাতে। আগের খোরপোষ পর্যায়ের কৃষি এখন পরিণত হয়েছে বাণিজ্যিক কৃষিতে। এক নীরব বিপ্লব সূচিত হয়েছে কৃষির প্রতিটি উপখাতে। এর পেছনে প্রধান সহায়ক শক্তি ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃষি-বান্ধব নীতি।
বর্তমান সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে কৃষিখাতকে। রাসায়নিক সারের দাম দফায় দফায় কমিয়ে আনা হয়েছে কৃষকদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। ২০০৮-০৯ সাল থেকে ৫ দফায় কমিয়ে ইউরিয়া সারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১৬ টাকায়। টিএসপি সারের দাম ৮০টাকা থেকে কমিয়ে ২২ টাকা, এমওপি সারের দাম ৭০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫ টাকা, ডিএপি সারের দাম ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। গত এক যুগে শুধু সারেই ভর্তুকি দেয়া হয়েছে ৭৪ হাজার কোটি টাকা। পানি সেঁচের জন্য ব্যবহৃত বিদ্যুতের উপর চালু করা হয়েছে ২০ শতাংশ ভর্তুকি। ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে কৃষি যন্ত্রপাতি। মোট বাজেটের প্রায় ২ শতাংশ ব্যয় করা হচ্ছে কৃষি ভর্তুকি খাতে। তাছাড়া, দ্রুত হ্রাস করা হয়েছে কৃষি ঋণের সুদের হার। এখন কৃষি ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার ৯ শতাংশ। মসলা ফসলের জন্য তা ৪ শতাংশ। দুগ্ধখামার গড়ার জন্য ৫ শতাংশ। তাতে কৃষিতে নতুন প্রযুক্তি ধারণ ও বিকাশ উৎসাহিত হয়েছে। পানির সেঁচের আওতা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে মোট আবাদি জমির প্রায় ৭০ শতাংশ। উচ্চ ফলনশীল জাতের আওতায় এসেছে ৮৫ শতাংশ ধানি জমি। ফলে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে খাদ্যশস্যের উৎপাদন।
২০০৮-০৯ সালে এ দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিল ৩৩৩ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ সালে তা ৪২০ লাখ টনে বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি চালের উৎপাদন প্রতিবছর গড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ লাখ ৮৫ হাজার টন। চিরকালের খাদ্য ঘাটতির দেশ পরিণত হয়েছে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে।
বিশ্ববাণিজ্যের ক্ষেত্রে খাদ্য আমদানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ স্বীকৃতি লাভ করেছে খাদ্য রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ফসলের মাঠ এখন সবুজ শস্য ও সোনালি ধানে-গমে-ভূট্টায় ভরে থাকে। এক অভাবনীয় চোখ জুড়ানো উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এদেশের কৃষিখাতে। খাদ্যশস্য খাতে এখন গড় প্রবৃদ্ধির হার বছরে ৩.৫ শতাংশ। বিশ্বের চাল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।
দানাদার খাদ্যশস্যের পর আলুর উৎপাদনে বিপুল উদ্বৃত্ত অর্জনের বিষয়টি উল্লেখ করার মতো। দেশের মানুষের দৈনিক জনপ্রতি আলুর চাহিদা হচ্ছে ৭০ গ্রাম। আমাদের দৈনিক প্রাপ্যতা জনপ্রতি প্রায় ১৭০ গ্রাম। বর্তমান শতাব্দীর গোড়ার দিকে আলুর মোট উৎপাদন ছিল প্রায় অর্ধকোটি মেট্রিক টন। এখন তা ১ কোটি ৫ লাখ টন ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ থেকে এখন আলু রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। আলু রপ্তানি করে প্রতিবছর গড়ে আমাদের আয় হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি ডলার। তাছাড়া, আলুর উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে এর ব্যবহার বহুমুখী হচ্ছে। আগে আলু ব্যবহার হতো মূলত সবজি হিসেবে। এখন তা চিপ্স ও পটেটো ক্রাকার্স হিসেবে অনেক সমাদৃত। বিদেশিদের মতো অনেক বাংলাদেশিও
এখন মূল খাদ্য হিসেবে রোষ্টেও পটেটো খেতে পছন্দ করেন।
খাদ্য শস্যের আর একটি বড় সাফল্য অর্জিত হয়েছে সবজি উৎপাদনে। ২০০৮-০৯ সাল থেকে বিদায়ী বছর (২০১৯-২০ সাল) পর্যন্ত সবজি উৎপাদন প্রতি বছর গড়ে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চীন ও ভারতের পর বিশ্বে সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। মৌসুমের শুরুতে বাজারে সবজির দাম ভাল থাকায় এবং বিশ্বের বিভিনড়ব দেশে সবজি রপ্তানি সম্প্রসারিত হওয়ায় দেশের কৃষকগণ সবজি চাষে বেশ উৎসাহিত হচ্ছে। অনেক শিক্ষিত তরুণ এখন আধুনিক সবজি চাষের আগ্রহ প্রকাশ করছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে স্বীয় উদ্যোগে এরা গড়ে তুলেছে বড় সবজি খামার। এর উৎপাদনের সময় কম লাগে। গ্রামের কৃষকগণ বাড়ির আঙ্গিনায় প্রান্তিক জমিতে এবং ফল বাগানের সাথী ফসল হিসেবেও সবজি চাষ করতে পারেন। এর অনেক নতুন প্রযুক্তিও উদ্ভাবিত হয়েছে গবেষণার মাধ্যমে। অদূর ভবিষ্যতে উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে আমাদের বর্তমান ঘাটতি পুরোপুরি মেটানো যাবে বলে আশা করা যায়। এদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট। দীর্ঘ মেয়াদে এর আবাদি এলাকা কমেছে। তবে একর প্রতি উৎপাদন বেড়েছে। ২০১০ সালে পাটের জীন রহস্য উন্মোচনের ফলে এর উৎপাদন বৃদ্ধির পথ আরো সুগম হয়েছে। বিশ্ববাজারে এখন পাটের চাহিদা বাড়ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে আহরিত বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ। বর্তমান করোনাকালেও পাটের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বাজার বেশ চড়া। এখন দেশে কৃষকের খামার প্রান্তে কাঁচা পাটের মূল্য ২,০০০ থেকে ২,২০০ টাকা। এটা বেশ লাভজনক মূল্য। বর্তমানে দেশে পাটের উৎপাদন প্রতি বছর ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ বেল। আগামীতে এর উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। অদূর ভবিষ্যতে আমাদের পাট খাত আবার ঘুরে দাঁড়াবে।
বাংলাদেশে সম্প্রতি উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে ফলের উৎপাদনে। বর্তমানে এ দেশে ফলের উৎপাদন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টন। ফল উৎপাদনে পৃথিবীর প্রথম সারির ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান। গত ২ দশক ধরে এদেশে ফল উৎপাদন বৃদ্ধির হার ছিল বছরে গড়ে ১১ শতাংশের উপরে। দ্রুত উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলের মাথাপিছু প্রাপ্যতা সম্প্রতি অনেক বেড়েছে। ২০০৬ সালে আমাদের মাথাপিছু দৈনিক ফল গ্রহণের পরিমাণ ছিল ৫৫ গ্রাম ২০১৮ সালে তা বৃদ্ধি পেয়েছে ৮৫ গ্রাম। তাতে কিছুটা হ্রাস পেয়েছে আমাদের পুষ্টিহীনতা।
বর্তমানে আমাদের দেশে আমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বেড়েছে। চিরায়তভাবে গড়ে ওঠা রাজশাহী, নবাবগঞ্জ ও দিনাজপুরের বাগানগুলো ছাপিয়ে এখন প্রচুর আম উৎপাদিত হচ্ছে সাতক্ষীরা ও চট্টগ্রামের পার্বত্য এলাকায়। তাছাড়াও বরেন্দ্র অঞ্চলের অনেক ধানি জমি পরিণত হয়েছে আম বাগানে। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা হচ্ছে নতুন ফল ষ্ট্রবেরি। আরও চাষ করা হচ্ছে রাম্বুতান, ড্রাগন ফল ও এভোকেডো। মানুষ আপেলের পরিবর্তে বেশি করে খাচ্ছে কাজী পেয়ারা। তাতে বিদেশি ফলের আমদানি হ্রাস পাচ্ছে। সাশ্রয় হচ্ছে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা।
সম্প্রতি বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ম্ভর বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ২০০৭-০৮ সালে এদেশে মাছের মোট উৎপাদন ছিল ২৫ লাখ টন। ২০১৯-২০ সালে তার বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৪৪ লাখ টনে। মৎস্যখাতে বর্তমান গড় প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৬ শতাংশ। হিমায়িত খাদ্য ৩ চিংড়ি রপ্তানি থেকে প্রতিবছর আমাদের আয় ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ইলিশের উৎপাদনে সাম্প্রতিক প্রবৃদ্ধি ছিল চোখে পড়ার মতো। সরকারের ডিমওয়ালা ইলিশ সংরক্ষণ এবং জাটকা নিধন নিষিদ্ধকরণের নীতিমালা বাস্তবায়নের ফলে এখন ইলিশের উৎপাদন বহুল পরিমাণে বেড়েছে। তাছাড়া পুষ্টির অন্যান্য উপাদান ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদনে বিপুল পরিমাণে প্রবৃদ্ধি পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশ এখন মাংসের উৎপাদনে স্বয়ম্ভর। ডিম ও দুগ্ধ উৎপাদনে আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পর্যায়ে আছি। তবে যে হারে উৎপাদন বাড়ছে তাতে এ দুটো পণ্যেরও ঘাটতি মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে অচিরেই। বনখাতে বৃক্ষের মোট আচ্ছাদিত এলাকা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১২ বছর আগে দেশের ৭/৮ শতাংশ এলাকা বনরাজির আওতায় ছিল বলে ধরে নেয়া হতো। এখন তা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭ শতাংশে। উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী এবং গ্রামীণ এলাকায় কৃষি বনায়ন পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক হচ্ছে।
কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার এখন অনেক সম্প্রসারিত হয়েছে। ভূমি কর্ষণ, আগাছা পরিষ্কার, ফসল কর্তন ও মাড়াই, ধান ভাঙ্গা ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই এখন কায়িক শ্রমের ব্যবহার সীমিত হয়ে এসেছে। বেড়েছে যন্ত্রের ব্যবহার। একসময় ভূমি কর্ষণের ৯০ শতাংশই সম্পন্ন করা হতো লাঙ্গল দিয়ে। ব্যবহার করা হতো পশুশক্তি। এখন পশুশক্তির ব্যবহার হ্রাস পেয়েছে ৫ শতাংশে। বাকি ৯৫ শতাংশই যন্ত্রপাতির মাধ্যমে চাষাবাদ চলছে। ধান কাটা ও মাড়াই ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার এখন বেশ প্রচলিত। কিন্তু তার পরিধি এখনো বেশ সীমিত। বর্তমানে কৃষিযন্ত্র সংগ্রহে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য সরকার ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে যন্ত্র বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। হাওর ও পার্বত্য এলাকায় ভর্তুকির পরিমান বেশি। তবে এর সুবিধাভোগীর সংখ্যা খুবই কম। এটি বাছাইকৃতভাবে এখনো কার্যকর হচ্ছে গ্রামীণ এলাকায়। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে চলছে শ্রমিক সংকট। তাতে দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে শ্রমিকের মজুরি। তদুপরি ফসল উৎপাদনের বিভিন্ন স্তরে সময় ক্ষেপণ, অপচয় ও অদক্ষতার কারণে কৃষির উৎপাদনে লাভজনকতা হ্রাস পাচ্ছে। এমতাবস্থায় কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার দ্রুত সম্প্রসারিত করা দরকার। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য অতি সম্প্রতি ৩ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রহণ করা হয়েছে একটি কৃষি যন্ত্রায়ন প্রকল্প। আশা করা যায়, তাতে কৃষি সম্প্রসারণের যন্ত্রায়ন তরান্বিত হবে। যেকোন কৃষক তার প্রয়োজন অনুসারে ভর্তুকি মূল্যে কৃষিযন্ত্র সংগ্রহ করতে সক্ষম হবে। কৃষিপণ্যের মূল্যে স্থিতিশীলতা রক্ষা করার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারে বেশ সাফল্য আছে। গত ১২ বছরে কোন কৃষিপণ্যেরই দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়নি। কিংবা একদমই নীচে নেমে গিয়ে কৃষকদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেনি। তাছাড়া, কৃষিপণ্যের অঞ্চল ভিত্তিক মূল্য পার্থক্য ছিল কম। পেঁয়াজের সাময়িক মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি ব্যতিক্রম। গত মৌসুমে বোরো ধানের বাজার দর ছিল ভাল। আমদানিকৃত চালের উপর শুল্ক বসানো আছে ২৮ শতাংশ। তাতে চালের অভ্যন্তরীণ বাজারে ছিল তেজীভাব। কোথাও কোন দরপতন বা লোকসানের খবর শোনা যাচ্ছে না কৃষকদের পক্ষ থেকে। পাটের বাজার দরও ভাল। এটা সরকারি নীতিরই সুফল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তাঁর এক কালজয়ী ভাষণে দেশের কৃষকদেরকে ইজ্জত দিয়ে কথা বলতে বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আপনি চাকরি করেন, আপনার মায়না দেয় ওই গরিব কৃষক। ওদের সম্মান দিয়ে কথা বলেন, ওদের ইজ্জত করে কথা বলেন, ওরাই মালিক।” বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা পিতার ওই নির্দেশনাকে অন্তরে ধারণ করেছেন এবং যুগ যুগ ধরে তা পালন করেছেন। তিনিও পিতার ওই নির্দেশনার অনুকরণে প্রাণের সকল মমতা ঢেলে দিয়ে বলেছেন, গায়ের ঘাম পায়ে ফেলে ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান। দিচ্ছে আমাদের কৃষকরা। তারা মানুষের ক্ষুধার নিবারণ করছে। তাই দেশের কৃষকদের আমাদের মাথায় তুলে রাখা উচিৎ। এদের সম্মান দেয়া উচিৎ। এ বিষয়টি আমাদের জাতীয় কৃষিনীতিতে স্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ থাকা দরকার।
লেখক: কৃষি অর্থনীতিবিদ