অভ্যন্তরীণ বায়ু দূষণ রোধে এয়ার পিউরিফায়ার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫৫ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ বুধবার | আপডেট: ০৮:৩৩ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ বুধবার
দেশে শীতের আমেজ বইছে। শীতের কবল থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে এ সময় খুব স্বাভাবিকভাবেই আমরা ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রাখি। এ কারণে ঠান্ডা বাতাস আমাদের ঘরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে না, যা অভ্যন্তরীণ বাতাসের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অভ্যন্তরীণ দূষিত বায়ু ঘর থেকে বেরুতে না পারলে তা আরও ক্ষতিকর রূপ ধারণ করে। এর ফলে সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক এবং ধূলিকণা খুব সহজেই যে কাউকে আক্রান্ত করতে পারে, যদি না তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়।
আমাদের অনেকেরই ধারণা, অভ্যন্তরীণ বাতাসের চেয়ে বাইরের বাতাস বেশি বিষাক্ত, আসলে কি তাই? গবেষকরা বলছেন, আসল চিত্র তেমন নয়। অভ্যন্তরীণ কক্ষের অর্থাৎ সাধারণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের বায়ু দূষণের পরিমাণ বাইরের বায়ু দূষণের চেয়ে ২ থেকে ৫ গুণ বেশি এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে উন্মুক্ত স্থানের বাতাসের চেয়ে তা ১শ’ গুণ বেশি হয়ে থাকে। ঘরদোর পরিষ্কার, নির্মাণাধীন বিভিন্ন স্থাপনার ধুলিকণা, রান্নার কাজে ব্যবহৃত জ্বালানি ও প্রযুক্তি, তাপ উৎপাদনকারী বিভিন্ন সামগ্রী এবং আলোর বিভিন্ন ধরনের উৎস অভ্যন্তরীণ বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ।
আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের তথ্যানুযায়ী, গত ০৬ ডিসেম্বর বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে রাজধানী ঢাকা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সেদিন বেলা ১টা ১১ মিনিটে ঢাকার বায়ুমানের সূচক ছিলো ২৫১।
কোভিড-১৯ গোটা পৃথিবীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই তা একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার মতো করেই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়ায়। ভাইরাসটি থেকে সুরক্ষিত থাকতে বারবার হাত ধোয়া, হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা ও ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরার কথা বলেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও, বায়ুদূষণ নিয়ে গবেষণা করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস হচ্ছে ধুলাবালু। এর মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাসের জীবাণু সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে ধূলিকণা মুখে গেলে মানুষ যত্রতত্র থুতু ও কফ ফেলে। তা ধুলার সঙ্গে মিশে হাতসহ নানা মাধ্যম দিয়ে মানুষের শরীরে ঢুকতে পারে। এতে ওই ভাইরাস মানুষের শরীরে ঢুকতে পারে।
বায়ুবাহিত ভাইরাস থেকে প্রতিকারে ঘরে ও অফিসে লাগানো যেতে এয়ার পিউরিফায়ার। বাজারে অনেক রকমের এয়ার পিউরিফায়ার রয়েছে কিন্তু অভ্যন্তরীণ বায়ু দূষণ থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন ভালো মানের এয়ার পিউরিফায়ার। অভ্যন্তরীণ বায়ু দূষণ হ্রাস এবং সুস্বাস্থ্যের লক্ষ্যে স্যামসাংয়ের তিনটি মডেলের অত্যাধুনিক এয়ার পিউরিফায়ার দারুণ সমাধান হতে পারে। বায়ুতে ভেসে বেড়ানো অ্যালার্জির জীবাণু দূর করে স্বস্তিদায়ক বিশুদ্ধ বাতাস নিশ্চিত করে এই পিউরিফায়ারগুলো। পাঁচ মাত্রার পরিশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত অ্যালার্জেন, বড় ধূলিকণা, ক্ষতিকারক গ্যাস, অতি ক্ষুদ্র ধূলিকণা এবং জীবাণু শোধনের ক্ষমতা আছে এর।
তুলনামূলক কম বিদ্যুৎ কাজে লাগিয়ে কাজ করতে সক্ষম এয়ার পিউরিফায়ারগুলো। সর্বোচ্চ ১০০০ স্কয়ার ফিট এবং সর্বনিম্ন ৪২০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত ঘরের বাতাস দূষণমুক্ত করার ক্ষমতা সম্পন্ন এয়ার পিউরিফায়ারগুলোর ওজনও বেশ কম এবং সহজে অপারেট করা যায়। এছাড়াও, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সেন্সর থাকায় খুব সহজেই ধুলা ও গ্যাসসহ পিএম২.৫ মাইক্রোমিটারের মতো অতি ক্ষুদ্র জীবাণু শনাক্ত করার পাশাপাশি এয়ার পিউরিটি ডিসপ্লের কারণে ব্যবহারকারীরা ঘরের অভ্যন্তরে বাতাসের মান সম্পর্কেও জানতে পারেন। স্যামসাংয়ের শোরুম ও অনলাইন স্টোরে এ এয়ার পিউরিফায়ারগুলো পাওয়া যাচ্ছে।
বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয় বলে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট এবং ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে। আর বায়ু দূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ লাখ মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। বাতাসে ভারী ধাতু ও সূক্ষ্ম বস্তুকণা বেড়ে গেলে ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট, স্নায়ুজনিত সমস্যা বেড়ে যায় ও কমে যায় বুদ্ধিমত্তা। ঘরের বাইরের বায়ুদূষণ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা প্রায় অসম্ভব। তবে, নিজের ও পরিবারের সুস্থতার জন্য অভ্যন্তরীণ বায়ু দূষণের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। এজন্য সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেয়াটা জরুরি।
আরকে//