সাভার পৌরসভা নির্বাচনে আ’লীগের হাল ধরতে চান শিহাব
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১২:৪৫ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার
তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে সাভার পৌরসভা নির্বাচনের। ফলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাড়ছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌঁড়ঝাঁপ। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোয়ন পেতে বর্তমান মেয়রসহ অর্ধডজন প্রার্থী নানাভাবে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হাল ধরতে চান মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ফয়েজ উদ্দিন খান শিহাব। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (ঢাকা-১২) আশরাফ উদ্দিন খান ইমুর ছেলে।
ফয়েজ উদ্দিন খান শিহাবের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান ইমু মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ২নং সেক্টরের অধীনে সাভার এলাকায় মুক্তিযুদ্ধকালীন থানা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭৩ সালে সাভার ইউনিয়ন পরিষদের সর্ব প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান ও সাভার পৌরসভার সর্ব প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
১৯৭৬ সালে আশরাফ উদ্দিন খান ইমু সাভার থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৫ সালে জগন্নাথ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা রিপোর্টের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত অবস্থায় গ্রেফতার হন।
১৯৬৮ সালে মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯-এর গণ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাভার থানা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৯-এর ২৫ জানুয়ারি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে সাভার, ধামরাই, মানিকগঞ্জ ও জয়দেবপুর এলাকায় বঙ্গবন্ধুর সাথে নির্বাচনী জনসভায় যোগদান করেন।
এছাড়া এ মুক্তিযোদ্ধা ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমানে কার্যকরি সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এমন একজন যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান গোলাম ফয়েজ উদ্দিন খান শিহাব সাভার পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হবেন এমনটাই প্রত্যাশা এলাকার আপামর মানুষের।
গোলাম ফয়েজ উদ্দিন খান শিহাব ব্যক্তি জীবনে একজন সৎ ও ন্যায়পরায়ণ মানুষ হিসেবে এলাকায় তার একটি ক্লিন ইমেজ রয়েছে। সব দিক বিবেচনায় এলাকাবাসী মনে করেন মনোনয়ন দৌঁড়ে তিনি এগিয়ে আছেন।
গোলাম ফয়েজ উদ্দিন বর্তমানে সাভার নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ঢাকা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড’র সাধারণ সম্পাদকেরও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই অন্য আগ্রহী প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকগণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। পিছিয়ে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। কোন কোন প্রার্থীর ব্যানার ফেস্টুন বেশ চোখে পড়ার মতো। তবে প্রচারণায় খুবই সরব হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তারা সংখ্যায়ও অধিক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সভা সমাবেশের মাধ্যমে অনেকে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। অনেক প্রার্থী ঘরোয়া ও সামাজিক বৈঠকের মাধ্যমে আগাম প্রচারণায় ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। প্রার্থীদের কেউ কেউ ঘনিষ্ঠ কর্মীদের নিয়ে সাভারের বাহিরে পর্যটন সমৃদ্ধ এলাকায় বেড়াতে গিয়ে তাদের মনোবল চাঙ্গা করার খবরও রয়েছে।
প্রার্থীদের অনেকেই করোনাকালীন সময়ে দরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করে জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন। এভাবেই অনেকেই আলোচনায় এসেছেন। তারা সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করেছেন ভবিষ্যতে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সমাজসেবার আশায়। ইতোমধ্যে বড় দুই দলের প্রার্থী কারা হবেন তা নিয়ে হিসেব নিকেষ ও চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।
গত পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের ভোটের ব্যবধান খুব একটা বেশি ছিল না। বলা চলে, লড়াই হয়েছিল হাড্ডাহাড্ডি।
এখন পর্যন্ত সাবার পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেরর হাজী আবদুল গণি নিজের প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি বিভিন্ন সভায় তার দায়িত্ব পালনকালে সড়ক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসমূহ বিভিন্ন সভায় তুলে ধরছেন।
অপর সম্ভাব্য প্রার্থী সাভার পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মানিক মোল্লা। তার কর্মী সমর্থকগণ ইতোমধ্যে আগামী পৌর নির্বাচনে তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান এবং পৌরবাসীর দোয়া চেয়ে বিভিন্ন স্থানে তার পোস্টার ব্যানার ও ফেস্টুন টানিয়েছেন।
এছাড়া, সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক জিএস ও ঢাকা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান ওরফে জিএস মিজান, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ চৌধুরী, নব গঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক কামরুজ্জামান খান প্রার্থী হওয়ার দৌঁড়ে নেমেছেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা যথা সময়ে সাভার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবেন বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
এআই/এসএ/