ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১

অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন দাখিল: এবারও ‘প্রথম’কুমিল্লা কাস্টমস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৭ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার

অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে টানা চতুর্থ বার প্রথম স্থান অর্জন করেছে কুমিল্লা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন ১২টি ভ্যাট কমিশনারেটের মধ্যে গত আগস্ট থেকে চলতি নভেম্বর মাস পর্যন্ত অবিশ্বাস্যভাবে টানা চারবার প্রথম স্থান অধিকার করলো এই ভ্যাট কমিশনারেট। চলতি নভেম্বর মাসে এই কমিশনারেটে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল হয়েছে ৯৩.৩৩%। 

মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সক্রিয়তার মাধ্যমেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। মুজিববর্ষে দেশকে ডিজিটাল করার প্রত্যয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে; এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীন অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ও রিটার্ন দাখিল নিঃসন্দেহে ডিজিটাল কর্মকান্ড। আর এক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অর্জন যেখানে ৩৫%, সেখানে কুমিল্লা ভ্যাটের অর্জন প্রায় শতভাগ। তবে, এবার ভ্যাট দিবস ও সপ্তাহ পালন করতে গিয়ে  কুমিল্লার প্রথম হওয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ সংশয় ছিল। তবে কুমিল্লা টিম এ চ্যালেঞ্জকে সফলভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছে। 

মাঠ পর্যায়ে নিবন্ধন ও রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে কমিশনারেটগুলোতে প্রতিযোগিতা শুরম্ন হয়েছে। অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ও রিটার্ন জমার হার বৃদ্ধির মাধ্যমে অটোমেশনের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এগিয়ে যাচ্ছে।

নতুন কমিশনার জনাব মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী যোগদানের পর এ কমিশনারেটের অনলাইন রিটার্ন দাখিলের চিত্র পাল্টে যায়। 

গত জুলাইয়ে তিনি যোগদানের সময় অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে কুমিল্লার অবস্থান ছিল চারে। রিটার্ন দাখিলের হার ছিল ৫১ শতাংশ। তিনি যোগদানের পর ১৫ জুলাই কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম জুম সভা করা হয়। সভার পরপরই কমিশনার তদারকি শুরু করলেন। এ কমিশনারেটের ছয়টি জেলায় করদাতাদের ফোন, প্রতিষ্ঠানের তদারকি বাড়ানো হয়। ‘রিটার্ন ওয়ানস্টপ কাউন্টার’ গঠন করা হয়। কুমিল্লা ভ্যাট টিম নিরন্তর ও ক্লান্তিহীন কাজ শুরু করেন।

এ বিষয়ে কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, অটোমেশন সরকারের অগ্রাধিকার। এনবিআর সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে বরাবরই অগ্রণী। কুমিল্লার কর্মপ্রবণ টিম প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। কুমিল্লার সঙ্গে এনবিআরের সম্মানও উচ্চকিত করেছে। করোনাকালে কুমিল্লা টিম কখনো পশ্চাদমুখী বা কর্মবিচ্যুত থাকেনি। দলবদ্ধ প্রচেষ্টা ও প্রতিযোগিতা এ অভূতপূর্ব সাফল্যের মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে।

তিনি আরো বলেন, সক্ষম কর্মকর্তাদের বাছাই করে জটিলতর কাজে নিয়োগ, মনিটরিং উদ্বুদ্ধকরণ এ ক্ষেত্রে গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। সর্বোপরি কর্মস্থলে দেশাতমবোধ ও সেবার মনোভাব থাকা জরুরি। সারা বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের এরকম কাজের ধারা অব্যাহত থাকা উচিত।  দক্ষ, সক্ষম, উপযুক্ত ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে সকল কর্মকর্তাদের আমরা পুরস্কৃত করি। ভবিষ্যতেও তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে। 

এ বিষয়ে কুমিল্লা কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আবদুল হাকিম বলেন, ভ্যাট দিবস ও সপ্তাহ পালন করতে গিয়ে কুমিল্লার প্রথম হওয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ সংশয় ছিল। তবে কুমিল্লা টিম এ চ্যালেঞ্জকে সফলভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছে।  

যুগম কমিশনার মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেট টানা চতুর্থবার ‘প্রথম’।  রিটার্ন দাখিলের প্রথম স্থান অর্জনের পথ কুসুমাসত্মীর্ণ ছিল না। ছয় জেলায় করদাতাদের সচেতন করার লক্ষ্যে টেলিফোনে যোগাযোগের পাশাপাশি মোবাইলে বাল্ক এসএমএস, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি এবং স্থানীয় ক্যাবল অপারেটরে বিজ্ঞপ্তি ও বাসায় কর্মকর্তারা সশরীরে গিয়ে সম্মানিত করদাতাগণকে বুঝিয়ে রিটার্ন অনলাইন দাখিলে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। 

এ বিষয়ে কুমিল্লা কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার (সদর) মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন রিপন বলেন, একটা ভালো ‘টিমওয়ার্ক’ এর মাধ্যমে এ অর্জন। স্বীকৃতি কাজের প্রণোদনা বৃদ্ধি করে। কর্মকর্তারা পরিশ্রম করেছেন। আমরা প্রকৃত কর্মীদের স্বীকৃতি দানের চেষ্টা করছি। গত চার মাসের মতো ভবিষ্যতেও রিটার্ন দাখিলের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

‘আলোকিত কাস্টমস, আলোকিত দেশ’ গড়ার লক্ষ্যে কুমিল্লা কাস্টমস-এ ‘অতিক্রমে নয় ব্যতিক্রম’ নীতিতে কাজ চলমান রয়েছে। 

আরকে//