পাপুলের স্ত্রী-মেয়েসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সিআইডির মামলা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:৪০ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার
অর্থপাচারের অভিযোগ এনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডি। বাকি আসামীরা হলেন- তার স্ত্রী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম এবং শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও পাপুলের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) পল্টন থানায় মানি লন্ডারিং আইনে এই মামলাটি দায়ের করে সিআইডি। মামলায় ৩৮ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৭ টাকা পাচার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে অর্থ ও মানব পাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেফতার সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামকে আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট বিভাগ।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত একটি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেয়। আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। পাপুলের স্ত্রী ও মেয়ের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার।
আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, দুদকের করা মামলায় গত ১০ ডিসেম্বর পাপুলের স্ত্রী ও মেয়েকে আত্মসমর্পণ করতে ১০ দিনের সময় দেয়া হলেও নিম্ন আদালতের অবকাশকালীন ছুটির কারণে তারা তা করতে পারেননি। তাই উচ্চ আদালতের আদেশ সংশোধন চেয়ে তারা হাইকোর্টে আবেদন জানান। সে আবেদনের শুনানি করে হাইকোর্ট এ আদেশ দেয়।
দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করার বিষয়ে আদালতের একটি আদেশ ছিল, সেখানে ভ্যাকেশন বিষয়টি উল্লেখ ছিল না। যে কারণে তারা সেই সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে পারেননি বলে আরেকটি আবেদন করে সময় চান। আদালত সেই শুনানি শেষে আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিচারিত আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দিয়েছে।
পাপুলের স্ত্রী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলাম গত ২৬ নভেম্বর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।
গত ১১ নভেম্বর তার এবং তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় অভিযোগ করা হয়, পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
এছাড়া ‘কাগুজে প্রতিষ্ঠানের’ আড়ালে জেসমিন পাঁচ ব্যাংকের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৪৮ কোটি টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়। এসব কাজে পাপুল তার স্ত্রী ও মেয়ে সহযোগিতা করেছেন উল্লেখ করে তাদেরও আসামি করা হয়।
মামলায় জেসমিনের বিষয়ে বলা হয়, তিনি শিক্ষার্থী থাকাবস্থায় বোন সেলিনা ইসলাম ও দুলাভাই শহিদ ইসলাম পাপুলের অবৈধ অর্জিত অর্থ মানি লন্ডারিং করে বৈধতায় রূপ দিতে ‘লিলাবালি’ নাসের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
পাপুলের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে গত ২২ জুলাই সেলিনা ইসলাম ও জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
গত ২২ জুন একই অভিযোগে দেশি-বিদেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাপুল, স্ত্রী সেলিনা, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিনের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সব হিসাব স্থগিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয় দুদক। অর্থ ও মানব পাচারের অভিযোগে কুয়েতের কারাগারে আছেন এমপি পাপুল।
এসি