বিলীন হচ্ছে নওগাঁর শতাধিক বধ্যভূমি (ভিডিও)
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০২:২৮ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ রবিবার
সংরক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে বিলিন হতে বসেছে নওগাঁর শতাধিক বধ্যভূমি। স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও সেই বধ্যভূমি সংরক্ষণে নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। বর্তমানে বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার পাশাপাশি এসব বধ্যভূমিগুলো ঝোপ-ঝাড়ে ভরে গেছে। অযত্ন-অবহেলায় এসব গণকবর ও বধ্যভূমি ক্রমেই বিলীন হওয়ার পথে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সারাদেশে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা হাজার হাজার মুক্তিকামী মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাকে নির্বিচারে হত্যা করে। শহীদদের দেওয়া হয় গণকবর। নির্মম সেই গণহত্যার সাক্ষী নওগাঁর শতাধিক গণকবর।
জেলার বধ্যভূমি ও গণকবরগুলোর অধিকাংশই অযত্ন, অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে। কিছু গণকবরে গড়ে উঠেছে বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বেশিরভাগ বধ্যভূমি ও গণকবর চিহ্নিতই করা হয়নি।
এলাকাবাসীরা জানান, এখানে পরিত্যাক্ত কিছু জমির উপর একটি বড় আমের গাছ ছিল। যুদ্ধকালীন সময়ে অনেক লোককে হত্যা করে পাকিস্তানী ও রাজাকাররা এখানে ফেলে রাখে। তাদের মাথা, লাশ আমরা দেখেছি।
নওগাঁ সদরের সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোলাম সামদানি বলেন, হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে যেখানে রেখে যায় সেই জায়গাতে এখন গরু চড়ানো হচ্ছে।
১৯৭১ সালে নওগাঁ জেলার গণহত্যার ইতিহাস সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা করছে স্থানীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁ। সংগঠনটির কর্মীরা জেলায় শতাধিক বধ্যভূমির সন্ধান পেয়েছেন।
একুশে পরিষদ নওগাঁর সাধারণ সম্পাদক এম এম রাসেল বলেন, ১শ’টিরও বেশি স্থান চিহ্নিত করেছি। সেই জায়গাগুলো ক্রমেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে, নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। সেখানে বাড়ি-ঘর, দালানকোঠা নির্মিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নওগাঁ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার হারুন-আল-রশিদ বলেন, এই স্তম্ভগুলো যদি তৈরি করা যায় তাহলে তাদের অস্তিত্বে প্রমাণ হবে যে বাংলাদেশে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ হয়েছিল। তারা না থাকলেও প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানতে পারবে যুদ্ধে এই মানুষগুলো এখানে আত্মহুতি দিয়েছে।
১৯৭১ সালের গণহত্যার স্মারক হিসেবে গণকবর ও বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের দাবি জেলার ইতিহাস সচেতন মানুষের।
ভিডিও-
এএইচ/