৭শ’ কোটি টাকায় নাব্য ফিরে পেল মোংলা বন্দর
আবুল হাসান
প্রকাশিত : ০৪:২৩ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ রবিবার | আপডেট: ০৯:১৭ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ রবিবার

নাব্য ফিরে পেল মোংলা বন্দর ও আশপাশের নৌ-পথ। আউটাবারে (বহিঃনোঙ্গর) ড্রেজিং কাজ শেষ হওয়ায় নতুন চ্যানেল দিয়ে বড় জাহাজ চলাচল করছে। প্রথমবারের মতো বন্দরে আসতে শুরু করেছে ৯ দশমিক ৫ থেকে ১০ মিটার গভীর পণ্যবাহী জাহাজও। এতে জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজস্ব আয় বাড়বে বলে আশা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান জানান, ‘ড্রেজিংয়ের জন্য ৭১২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হলেও ৭শ’ কোটি টাকার মধ্যে এই কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া বিশাল এই কর্মযজ্ঞ আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও মেয়াদের আগেই ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।’
সম্প্রতি শেষ হয়েছে পোষ্ট ড্রেজিং সার্ভেও। এতে বন্দর কর্তৃপক্ষ সন্তষ্ট বলেও জানান চেয়ারম্যান।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, ভৌগলিক কারণে সম্ভাবনাময় হলেও গভীরতা কম থাকায় মোংলা বন্দরের জেটিতে বড় জাহাজ ভিড়তে পারত না। ১০ মিটারের গভীর জাহাজগুলো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য গভীর সাগরে নোঙ্গর করতো। এতে সম্ভাবনাময় এই বন্দরটি গুরুত্ব হারাচ্ছিল ।
তাই বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে ২০১৭ সালে আউটবার (বহিঃনোঙ্গর) খননের কাজের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে অনুযায়ী একাজের দায়িত্ব দেয়া হয় হংকং রিভার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সেট্রাকশন কর্পোরেশনকে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সিভিল ও হাইড্রোলিক বিভাগের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী মো. বজলুর রহমান বলেন, ‘২০১৯ সালের ৬ অক্টোবরে খনন শুরু করে এই দুটি প্রতিষ্ঠান। সমুদ্র খননের এই কাজে ব্যবহার করা হয় চীনের তৈরি বিশ্বের অন্যতম কাটার সাকশান ড্রেজার। যা দিয়ে একসঙ্গে ৪০ ইঞ্চি মাটি খনন করা সম্ভব। এছাড়া মাঝারি আকারের আরও দুটি হোপার ড্রেজার ব্যবহার করা হয়।’
এ কাজের সুবিধার জন্য খনন এলাকাকে দুটি ভাগে ভাগ করে গভীর সাগর ও দুবলার চরের দক্ষিণে কম গভীর এলাকায় ড্রেজিংয়ের মাটি ফেলা হয় বলেও জানান তিনি।
চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সেট্রাকশন কর্পোরেশনের প্রকল্প ম্যানেজার লি গুয়াংচি জানান, ‘সমুদ্রের মাঝে ড্রেজিং করা খুবই চ্যালেজিং ছিল। কিন্তু আমাদের কর্মদক্ষতা, উন্নতমানের যন্ত্রাংশ এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় আমরা কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছি।’
দুই বছরের কম সময় ১১ কিলোমিটার এলাকার ১১৯ দশমিক ১১ লক্ষ ঘনমিটার মাটি খনন করা হয় বলেও জানান লি গুয়াংচি।
রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘মোংলা বন্দরে এই ড্রেজিংয়ের ফলে নয় দশমিক পাঁচ থেকে ১০ মিটার গভীরের পণ্যবাহী জাহাজ এই বন্দরে আসছে। নতুন বছরের শুরুতে বন্দরের ইনারবারের (আভন্তরীণ অংশ) খনন কাজ শুরু হবে।’
এজন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমোনদন পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।
এআই//