ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৭ ১৪৩১

নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেন বিভাগের সভাপতি

রাবি সংবাদদাতা:

প্রকাশিত : ০৬:৩৯ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ রবিবার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের (এমএসএস) থিসিস পরীক্ষার ফল বিপর্যয়, সেচ্ছাচারিতা ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে উক্ত বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করছেন উক্ত বিভাগের সভাপতি। যে ফলাফল পেয়েছে তা শিক্ষার্থীদের অর্জন ও  কোন পক্ষপাত করা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা তুলে ধরেন সভাপতি ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাস্টার্স ২০১৯ (থিসিস) ফলাফল গত ১১নবেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় ১মাস পর শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নিকট ফলাফলে অসন্তোষ জানিয়ে আবেদন জমা দিয়েছে। এরপর পত্র-পত্রিকা যে সকল সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তা বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

থিসিস পরিচালনা জন্য বিভাগে অভিজ্ঞ শিক্ষক না থাকায় আমাকেই সময় দিতে হয়েছে কিন্তু এসব থিসিস আমি পরীক্ষা করিনি। থিসিস গুলো, ঢাবি,জাহাঙ্গীরনগর, জবি ও রাবির অভিজ্ঞ শিক্ষকরাই মূল্যায়ন  করেছেন। এসব থিসিস দুইজন পরীক্ষক মূল্যায়ন করেছেন। অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তাতে আমার কোন দায়-দায়িত্ব নেই। বিভাগের সকল কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়ম অনুসরণ করে করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগটি নতুন। শিক্ষক সংখ্যাও মাত্র ৬জন। এর মাঝে ২জন  শিক্ষাছুটিতে থাকায় ৪জন ও খণ্ডকালীন শিক্ষক দ্বারাই বিভাগটি পরিচালনা করতে হচ্ছে। যার ফলে একজন শিক্ষককে ৭টা কোর্স পড়াতে হচ্ছে। তা স্বত্তেও  কোভিট-১৯ শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কোন সেশনজট তৈরি হয়নি। মহামারী মাঝেও সকল বিভাগের ফলাফল  প্রদান করতে সক্ষম হয়েছি। এটা শিক্ষককদের অক্লান্ত পরিশ্রম ফলেই সম্ভব  হয়েছে। কোন শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরাগ বা বিরাগ নেই। শিক্ষার্থীরা যে ফলাফল পেয়েছে তাই তাদের অর্জন। কোন শিক্ষকই তাদের প্রতি পক্ষপাত করেনি।

এদিকে,গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে ফলাফল পরিবর্তন করার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। তার পূর্বে ফলাফল পরিবর্তন করে নতুন ফলাফল দেয়ার দাবি জানিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন জানিয়েছেন।

সভাপতির এমন বক্তব্য পর বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি, শিক্ষার্থীরা আবেদন পত্রে একটি কোর্সে মাত্র ৩/৪ টি ও আরেকটি কোর্সে কোনো ক্লাস না নেয়া, ৪ টি কোর্সে কোনো ইনকোর্স পরীক্ষা না নিয়েই নম্বর বসানো, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে পরীক্ষা কমিটিতে দু'জন বহিঃস্থ শিক্ষক ইত্যাদি নিয়ম লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তা উল্লেখ করেননি। তার স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, শিক্ষার্থীদের ভয় ভীতি প্রদর্শন, পক্ষপাতিত্ব, ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণে দায়িত্বে অবহেলা, অনৈতিক কার্যকলাপে ফলে ফলাফল খারাপ হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

বিভাগের সভাপতি ড.সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী নৈতিক স্থলনকে দায়ী করে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ গুলো বিবেচনায় নিয়ে সকল পরীক্ষার উত্তর পত্র ও থিসিসের পূর্ণমূল্যায়ন এবং ফলাফল পরিবর্তন করে নতুন ফল ঘোষণা দাবি জানান তারা কিন্তু এ বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর আবদুস সোবহান ও উপ- উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা থাকলেও তা না করে কালক্ষেপণ করে বিভাগের সভাপতিকেই সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও দাবি জানিয়েছেন  শিক্ষার্থীরা।

তদন্তে দেরী হওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা(অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর লুৎফর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের সকল প্রয়োজনে উপাচার্য সবসময় পাশে থাকেন। কয়েকদিন যাবত খুব ব্যস্ত আছেন সেজন্য এ বিষয়ে গুরুত্ব দেননি। আশাকরি কয়েকদিন মধ্যে এ বিষয়ে সুরহা করবেন।

উপাচার্য সভাপতিকে বাঁচানোই চেষ্টা করছেন শিক্ষার্থীদের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে লুৎফর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল চেয়ারম্যান সাথে উপাচার্যের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্য এটা ভাবা যাবেনা যে তাকে সহযোগিতা করছে। তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে উপ- উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহাকে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

আরকে//