ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

স্ব -শরীরে পরীক্ষার সিদ্ধান্তে মুখোমুখি শিক্ষার্থী-প্রশাসন

গবি সংবাদদাতা:  

প্রকাশিত : ০৭:১২ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ রবিবার

পুরো সেমিষ্টার জুড়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলেছে অনলাইনে, স্বশরীরে হয়নি কোনো ব্যবহারিক ক্লাস, সিলেবাসের অনেক কিছুই এখনো অনেক বাকি। এছাড়াও বকেয়া সেমিষ্টার ফি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ হতে দু সপ্তাহের মাথায় পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত হওয়ায়,  পরীক্ষা দিতে এসে মেসে  থাকার জন্য ৭-৮ হাজার টাকা পরিবারের পক্ষে মেটানো প্রায় অসম্ভব বলে জানিয়েছেন সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব -শরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষা  দেওয়ার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।  

রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "আগামী ২১ জানুয়ারি ২০২১ইং তারিখ হতে অনুষ্ঠিতব্য সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অনার্স ও মাস্টার্স শেষ সেমিষ্টারের শিক্ষার্থীদের স্বশরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।"

এদিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ সেমিষ্টারের শিক্ষার্থীরা। মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় বিষয়টি। এদিকে বিষয়টিকে ঘিরে 'গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ ছাত্র পরিষদ" নামক ফেসবুক পেইজে খোলা হয়েছে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা, না করা বিষয়ক 'হ্যা', 'না' ভোট। শেষ খবর সংগ্রহ অবধি স্বশরীরে পরীক্ষায় উপস্থিত হতে চায় না,অর্থাৎ 'না' ভোট অনেক ব্যবধানে এগিয়ে আছে।

 এবিষয়ে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অষ্টম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী জুরানা জাহান দীপ্তি বলেন,'জানুয়ারি মাসে শীত আরও বাড়তে পারে সাথে করোনার প্রভাবও । আর এরকম পরিস্থিতিতে আমার মনে হয় সার্বিক বিষয় চিন্তা করে অনলাইন এক্সাম নিলেই ভালো হয়। প্রাকটিকাল আর ভাইভা স্বাস্থ্য বিধি মেনে ইউনিভার্সিটি তে নেওয়া যেতে পারে। তিনি আরও বলেন,'অনলাইনে ক্লাস করে সরাসরি এক্সাম দেওয়ার পক্ষে আমি না।আর এই করোনাকালীন সময় তো অবশ্যই এটা ঝুঁকিপূর্ণ।”  

অনলাইনে পড়িয়ে অফলাইনে পরীক্ষা হলে ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হবে উল্লেখ করে রসায়ন ও পদার্থ বিভাগের ৪ র্থ বর্ষের  শিক্ষার্থী সাদিয়া সুলতানা সোমা বলেন, “ক্যাম্পাসে গিয়ে কোন এক্সাম দিব না। অনলাইনে ক্লাস করে কোন ভাবেই অফলাইনে এক্সাম দেয়া সম্ভব না।অনলাইন ক্লাসে কোনো শিক্ষার্থী ভালো করে বুঝে না, কি পড়ায়! সে কিভাবে এক্সাম দিবে? এভাবে এক্সাম দিলে ৯৯% স্টুডেন্ট ফেল করবে।”

স্বশরীরে ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে  সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষার সিদ্ধান মানেন না উল্লেখ করে   ফার্মেসি বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী পবিত্র কুমার শীল বলেন, “আমরা এই সিদ্ধান্ত মানি না। এতে শতশত শিক্ষার্থী ফেল করবে, তাদের শিক্ষা জীবন পিছিয়ে যাবে। করোনার কারণে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বাড়িতে। তাদের আবার মেসে এসে পরীক্ষা দিতে নানা জটিলতায় পড়তে হবে। বকেয়া সেমিষ্টার ফি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ হতে দু সপ্তাহের মাথায় পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত হওয়ায়, ঢাকায় পরীক্ষা দিতে এসে থাকার জন্য  এই মুহূর্তে ৭-৮ হাজার টাকা পরিবারের পক্ষে মেটানো অসম্ভব।”  

এদিকে ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষা দিতে না চাওয়া শিক্ষার্থীর্দের পক্ষ থেকে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে রাত দশটায় একটি জরুরি মিটিং্যের আয়োজন করা হয়েছে  বলে গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ ছাত্র পরিষদের ফেসবুক পেইজে জানানো হয়েছে।

করোনাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের  অনিশ্চিত ভবিষ্যতে দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আরকে//