ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৭ ১৪৩১

নিস্তব্ধ ক্যাফেটেরিয়া, যেন অপেক্ষার প্রহর গুনছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৩২ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০২১ শুক্রবার

করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত গোটা পৃথিবী, থমকে গেছে বিশ্বের সবকিছু, বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থাও। করোনা মহামারীতে বন্ধ আছে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বেশ কিছু আবেগ জড়ানো জায়গা থাকে, যার মধ্যে ক্যাফেটেরিয়া অন্যতম। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়াও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে একটি আবেগ মাখা স্থান।

একজন শিক্ষার্থী তার জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন আড্ডার মুহুর্তের দেখা পায় বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এবং যার অধিকাংশই হয় ক্যাফেটেরিয়ায়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর সকাল শুরু হতো ক্যাফের গরম গরম খিঁচুড়ি, পরাটা ও চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে। সাথে ক্লাসের আগে বন্ধুদের সাথে একটু আড্ডা দিয়ে নিজেদের চাঙ্গা করে নিতো ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা। সারাদিনে ক্লাস, পরীক্ষা, এ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশনসহ নানা ব্যস্ততার পর বা এসবের ফাঁকেও আড্ডার কমতি ছিল না কখনো। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সেই প্রিয় ক্যাফেটেরিয়ার এখন কি অবস্থা? কেমন আছে ক্যাফে? যার উত্তর একেবারেই সহজ, নিরব ও নিস্তব্ধ হয়ে যেন শিক্ষার্থীদের ফেরার প্রহর গুনছে।     

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একতলা বিশিষ্ট কুঁড়েঘরের মতো ক্যাফেটেরিয়া, গাব ও মেহগনি গাছের ছায়ায় জড়ানো একখন্ড উঠান, চেয়ার, টেবিলসহ সবকিছুতেই রয়েছে অনেক স্মৃতি, আবেগ ও ভালোবাসা। শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস জীবন যেন ক্যাফের আড্ডা, শিল্প-সাহিত্য ও ভালোবাসার ছোঁয়ায় ঘেরা। শিক্ষার্থীরা সর্বদা তাদের কোলাহলে ক্যাফেটেরিয়াকে মাতিয়ে রাখতেন।         

ক্যাফেটেরিয়ায় কাটানো অতীত নিয়ে জানতে চাইলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস মীম বলেন, ক্যাফেটেরিয়া একটা অন্য রকম স্বস্তির জায়গা। এখানে সবার সাথে সবার ঘন্টার পরে ঘন্টা একসাথে বসে থাকা, আড্ডা দেওয়া হয়। এখন ক্যাম্পাস বন্ধ। বন্ধ ক্যাফের সেই চিরচেনা উচ্ছ্বাস খুবই মিস করছি। খুব ইচ্ছে করে আগের দিন গুলোতে ফিরে যেতে। ক্লাস শেষ করেই ক্যাফেতে গিয়ে বসতে, সবার সাথে আনন্দে মেতে উঠতে। জানি না কবে এইরকম দম বন্ধ করা পরিবেশের পরিসমাপ্তি ঘটবে আমরা আবার ফিরবো আমাদের চিরচেনা ক্যাফেটেরিয়ায়। 

আড্ডা, গল্পের পাশাপাশি খুবি ক্যাফেটেরিয়াকে শিক্ষার্থীদের অন্যতম মিলনায়তন ও বলা হয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সংগঠন, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কার্যাবলি এখানেই সেরে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে আনন্দঘন অনুষ্ঠান র‍্যাগের র‍্যাগ কর্ণার শিক্ষার্থীদের মনে আনন্দের আবহ সৃষ্টি করে, ক্যাফেটেরিয়া সেজে উঠে নতুন সাজে, প্রতিবছর নানান রঙে রঙ বদলায় ভালোবাসার ক্যাফেটেরিয়া, ফিরে আসে সজীবতা। শিক্ষার্থীরাও মেতে উঠেন ক্যাফের নতুন সাজে। এছাড়াও ক্যাফেটেরিয়া মিস করছে ক্যাফে আনপ্লাগড, ভৈরবীর এক কাপ চা সহ অনেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।   

নিরব, নিস্তব্ধ ক্যাফেটেরিয়া যেন তার হৃদয়ের সমস্ত আর্তনাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের বলছে- ফিরে এসো, আমাকে আবারো মাতিয়ে তুলো, আমি তোমাদের নিয়েই প্রতিটি ক্ষণ কাটাতে চাই।

এসি