ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

রাবি উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে আল্টিমেটাম!

রাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ০৪:৫২ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২১ বৃহস্পতিবার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার অপসারণ চেয়ে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও রাকসু আন্দোলন মঞ্চের নেতাকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলা চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে এ আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মিলন বলেন, আমরা ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ভিসি, প্রো-ভিসিসহ বর্তমান প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন ব্যক্তিরবর্গের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছি। শিক্ষার্থীদের এই ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসিকে তদন্ত করার ভার দেয়। ইউজিসির তদন্ত কমিটি সরেজমিনে দুই দফা তদন্ত করে ভিসি, প্রো-ভিসি ও রেজিস্ট্রারসহ বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২৫ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পায়।’

তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটি ২০ ও ২১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রতিবেদনটি জমা দেয়। তদন্ত প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত বিভিন্ন প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়মের জন্য তিন ব্যক্তিকে দায়ী করা হয়েছে। তারা হলেন- ভিসি, প্রো-ভিসি ও রেজিস্টার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা মনে করেন- উপাচার্যকে স্ব-পদে বহাল রেখে বিশ্ববিদ্যালয় সুচারুরূপে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও ভিসি, প্রো-ভিসিকে অপসারণ করার কার্যকর কোনও পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। যা আমাদেরকে আশাহত করেছে। যদিও কিছুদিন আগে রেজিস্ট্রার মহোদয় দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু প্রমাণিত দুর্নীতিবাজ ভিসি ও প্রো-ভিসি কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে এখনও স্বপদে বহাল আছে তা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না।’

লিখিত বক্তব্যে তারা আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে শিক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, মানবিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জ্ঞান বিকাশের প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়েই যদি দুর্নীতি চলে এবং দুর্নীতিবাজরাই ক্ষমতায় থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রকৃত স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলবে। তাই আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি এবং শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করে দুর্নীতিবাজদের অপসারণ ও রাকসু এবং রেজিস্টার গ্রাজুয়েট নির্বাচনের মাধ্যমে সিনেট পূর্ণাঙ্গ করে ভিসি, প্রো-ভিসি নির্বাচন করতে হবে।’

তারা বলেন, ‘আমরা মনে করি অনিয়ম ও দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে যেমন আমরা তা মেনে নিতে পারি না, তেমনি দেশের কোন মানুষ এই অপরাধকে সহ্য করবেন না। ফলে আমরা আচার্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি। দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের প্রশাসনের যেকোনো দায়িত্বে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় আর একদিনেও চলতে পারে না। এতো বড় অপরাধ করার পর তাদের শিক্ষকতা করারও কোনো নৈতিক অধিকার নেই। তাই দ্রুত ভিসি, প্রো-ভিসিসহ দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অপসারণ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার দাবি করছি। অপসারণ না করা পর্যন্ত সকল প্রকার নিয়োগ স্থগিত করতে হবে।

আগামী ৭ দিনের মধ্যেই আমাদের দাবি মেনে নিতে হবে। নইলে আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও আন্দোলনে লাগাতার কর্মসূচির দিকে যেতে বাধ্য হবো। আমরা এও দাবি করছি ভিসি, প্রো-ভিসিকে অপসারণ করে রাকসু ও রেজিস্টার গ্রাজুয়েট নির্বাচনের মাধ্যমে সিনেট পূ্র্ণাঙ্গ করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভিসি, প্রো-ভিসি নির্বাচন করতে হবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক রাকিব হাসান, রাকসু আন্দোলর মঞ্চের পক্ষে আলহাজ হোসেন।

এআই/এনএস/