সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:৪০ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২১ শনিবার
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যানার ও ফেস্টুন রাস্তার পাশে লাগানোর অপরাধে সুনামগঞ্জের কাইয়ারগাওঁ গ্রামে যুব মহিলা লীগের নেত্রীর বাড়িঘরসহ ৫টি বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আহত হয়েছেন ৪ জন।
শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) রাত ৯টায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের কাইয়ারগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় হামলাকারীরা হুরা মিয়ার বসতঘরে প্রবেশ করে ড্রয়ার ভেঙ্গে ব্যবসার নগদ ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাইয়ারগাওঁ গ্রামের ভূমিখেকো সন্ত্রাসী সৈয়দ মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম, কালা মিয়ার ছেলে মো. শুক্কুর আলী, দানিস মিয়ার ছেলে সামু মিয়া, কাশেম মিয়ার ছেলে ওমর ফারুক, সৈয়দ আলীর ছেলে মকবুল হোসেন, কাদির মিয়ার ছেলে বকুল মিয়া, মৃত নজ্জু মিয়ার ছেলে মরম আলী, মৃত লাল মিয়ার ছেলে সৈয়দা মিয়া, কাশেম মিয়া ছেলে নুর গণি, রতন মিয়ার ছেলে ফয়েজ মিয়া ও মৃত আশরাফ আলীর ছেলে গাজী মিয়ার নেতৃত্বে ৭০/৮০ জনের একটি চক্র ধারালো অস্ত্র চাইনিজ কুড়াল, রামদা ,লোহার রড়, বল্লম নিয়ে একই গ্রামের নিরীহ হুরা মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায়।
এ সময় হুরা মিয়ার ছেলে মো. ফরিদ মিয়া, আব্দুস শহীদ, অহিদ মিয়া, সাদেক মিয়া,আব্দুস শহীদের স্ত্রী সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতিসহ ৫টি পরিবারের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে নারী ৪ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
আহতরা হলেন, কাইয়ারগাওঁ গ্রামের মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে মো. হুরা মিয়া (৭০), মেয়ে সাবিকুন নাহার (২৫), হুরা মিয়ার স্ত্রী জায়েদা খাতুন (৬০) ও ছেলে আব্দুস শহীদ। এদের মধ্যে হুরা মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং অন্যান্যদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।
এদিকে আজ শনিবার ভোরে আবারও নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসীরা চতুর্থবারের মতো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফরিদ মিয়ার বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভা১চুর ও লুটপাট চালানো হয়। পরে তার ছোটভাই মো. শহীদ মিয়া সুনামগঞ্জ থেকে ১৫ জন পুলিশ নিয়ে তার বড়ভাই অবরুদ্ধ ফরিদ মিয়াকে নিজঘর থেকে উদ্ধার করে। এই পাঁচটি পরিবারের নারী-পুরুষ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলে মুঠোফোনে শহীদ মিয়া গণমাধ্যমকর্মীদের জানান।
উল্লেখ্য ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর উক্ত ভূমিখেকো চক্রটি হুরা মিয়ার বাড়িটি জোরপূর্বক দখলের অংশ হিসেবে একই কায়দায় ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ৮ জনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। ওই সময়ও নগদ টাকা পয়সা স্বর্ণালংকারসহ আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ফরিদ মিয়া বাদিহয়ে চিহ্নিত ব্যক্তিদের আসামি করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করার পর সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে পুলিশ একজন আসামিকে গ্রেফতার করলে ও বাকি আসামিরা প্রকাশ্যে দিবালোকে ঘুরে বেড়ায়। ফলে চক্রটি আবারও তৃতীয়দফা হামলা চালায়। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিাবরের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে হামলার শিকার সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি নুরজাহান বেগম জানান, ‘আজকের ঘটনার মূল কারণটি হলো আমাদের বাড়ির রাস্তার পাশে কেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন লাগালাম। এজন্য বাড়িঘরে হামলার পূর্বেই রাস্তার পাশে লাগানো বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ফেস্টুন অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ছিন্নভিন্ন করেছে। পরে বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট করে।’
তিনি পুলিশ সুপারের নিকট হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি জানমালের নিরাপত্তা বিধানের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুর রহমান জানান, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। অভিযোগ পেলে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এআই/এসএ/