বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে সম্প্রীতি সংলাপে বাংলাদেশকে দেবী শেঠির শুভেচ্ছা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৫৬ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০২১ রবিবার | আপডেট: ০৩:২৭ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সম্প্রীতি সংলাপ’ স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ পর্বের বিষয় ছিল স্বাস্থ্য অর্থনীতি ও জাতীয় উন্নয়ন।
সম্প্রীতি বাংলাদেশ’র আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপি।
অনুষ্ঠানে অংশ নেন ভারতের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠি, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, শহীদ জায়া ও শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী ও সম্প্রীতি বাংলাদেশ’র সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।
সম্প্রীতি সংলাপের ৪৯তম পর্বের এ অনুষ্ঠানের শুরুতে সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান সম্প্রীতি বাংলাদেশ’র আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘করোনা মহামরির মধ্যেই আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী বিভিন্ন আয়োজনে পালন করছি। তারই অংশ হিসেবে প্রতি শনিবার সোশ্যাল মাধ্যমে আমরা এ আয়োজন করে থাকি।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে ভারতের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেবী শেঠি ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক ক্ষেতাব পদ্মশ্রী ও পদ্মভূষণ পেয়েছেন। তাকে এ আয়োজনে আমন্ত্রণ জানাতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আমাদের সংগঠনের সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল প্রথম বেঙ্গালুরতে দেবী শেঠির সাথে সাক্ষাত করেন। তিনিও ঢাকায় আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনায় তা থেমে যায়।’
মুজিববর্ষের আয়োজনে তাকে আমন্ত্রণ জানানোয় সম্প্রীতি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠি বলেন, ‘একজন চিকিৎসক হিসেবে আমি কেবল স্বাস্থ্য বিষয় নিয়েই কথা বলতে চাই। আর তা হলো ট্রান্সফরমিং হেলথকেয়ার। যেকোন দেশের জন্য স্বাস্থ্য অর্থনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। অনেক নীতি নির্ধারক মনে করেন, স্বাস্থ্যখাতের সঙ্গে জাতীয় উন্নয়নের সম্পর্কটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমার পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের অর্থনীতির খুব একটা পরিবর্তন নেই।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের পত্রিকার পাতা খুললেই দেখতে পাই কৃষকদের নানা দুর্ভোগের চিত্র। কৃষি প্রধান ভারতে বছরের বড় একটা সময় বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হয় কৃষকদের। কেননা, পানির উপরই তাদের ফসল ও পরিবারে বাঁচার একমাত্র উপকরণ। এই মুহূর্তে ভারতে অর্ধেক রাজস্ব নির্ভরশীল এই কৃষির। আর ৫০ শতাংশের কাছাকাছি চাকরিজীবীদের ওপর। কিন্তু কৃষকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিশ্চিতে কতটা যোগান দেয়া হয়, সেটাই বড় কথা।’
দেবী শেঠি বলেন, ‘এক্ষেত্রে আমাদের হাতে একটি মাত্র অপশন আছে। তা হলো যারা এ ঝুঁকিতে আছেন তাদেরকে বিকল্প পেশায় কাজে লাগানো এবং নতুনদেরকে কৃষি পেশায় নিয়োগ করা। একই সাথে রাজস্ব আয়ের জন্য বিকল্প ক্ষেত্র চিন্তা করা। তবেই, এ সংকট থেকে কিছুটা উত্তোরণ হওয়া সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বে স্বাস্থ্য শিল্পখাতে বিভিন্ন শর্তে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা হচ্ছে খাদ্য ও কৃষিতে, যার পরিমাণ ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তথ্য প্রযুক্তিতে ৩ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসে ২ ট্রিলিয়ন, অটোমোবাইলে ২ ট্রিলিয়ন, মিডিয়ায় ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন এবং পোশাক খাতে ১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন।’
অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে দেবী শেঠি ও আমরা সবাই জানি। কিভাবে আমাদের এ খাত আরও উন্নত করা যায় তা নিয়ে কাজ করছি আমরা। এ জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। আমরা জানি বাংলাদেশে বিভিন্ন স্বাস্থ্য অবকাঠানো গড়ে উঠছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। নতুন করে প্রতি ছয় হাজার মানুষের জন্য একটি করে ক্লিনিক গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতেই যা তৈরি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় পর্যায়ে যেকোন মুহূর্তে শিশু ও বয়োবৃদ্ধতে হাসপাতালে যাওয়ার অবস্থা থাকে না। তাই, কমিউনিটি ক্লিনিক হলে এ সংকটের অবসান হবে। প্রতিটি ক্লিনিক ২০ শয্যা ও উপজেলা কমপ্লেক্স হবে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট, আর জেলা হাসপাতাল হবে ১০০ শয্যার।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি বাংলাদেশে বর্তমানে ৫০টি সরকারি মেডিকেল কলেজ আছে। প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ আছে ৬৯টি এবং ৫টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করছে সরকার। আমাদের স্বাস্থ্যখাত বর্তমানে অনেক সমৃদ্ধ। ভারত আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অনেক এগিয়েছে। বাংলাদেশও প্রতিটি নাগরিকের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করছে।’
ভিডিওতে দেবী শেঠির পুরো বক্তব্য শুনতে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/800110796771007/videos/243043067182252
এআই//