হলুদ শাড়িতে সেজেছে বাংলার প্রকৃতি
আব্দুল কাইয়ুম
প্রকাশিত : ০৮:০১ পিএম, ২০ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার
এসেছে শীত, বইছে শীতল হাওয়া। তারই তালে তালে দোল খাচ্ছে চোখ ধাঁধানো হলদে সরিষা ফুল। সবুজে ঘেরা বাংলাকে নতুন রুপে সাজাতে মাঠে মাঠে ফুঠে থাকে সরিষা ফুলের সমাহার। মাঠের পর মাঠ সরিষা ফুলের হলুদ রশ্মিতে হলুদ বর্ণ ধারণ করে গ্রাম বাংলা। বাংলার প্রতিটা মাঠে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য্য মন ভোলানোর মতো। সবুজের মাঝে হলুদের ছাপ, তার সৌন্দর্য্যের যেন কোনও কমতি নেই। এ যেন প্রকৃতি আজ হলুদ শাড়ি গায়ে জড়িয়ে আছে। যার সৌন্দর্য্য সত্যিই অতুলনীয়।
সরিষা ক্ষেতের পাশ ঘেঁষে হাঁটতেই তার হলুদ রঙে রঙিন করে তোলে আমাদের মন প্রাণ। দেহ-মনে তার সঙ্গতায় নব রুপের জন্ম আজ। ভ্রমর আর মৌমাছির নাচ সত্যি নজর কাড়ার মতো। সরিষা ফুলের দোল খাওয়ার তালে তালে মৌমাছি আর ভ্রমরের গান ও নাচের দৃশ্য ভোলার মতো নয়। বাহারি রকমের প্রজাপতির মিলন মেলা দেখা যায় সরিষার ফুলে ফুলে। এ ফুল থেকে ঐ ফুলে ছুটে চলে মধু আহরণে। সরিষার ক্ষেতকে কেন্দ্র করে অনেক মধু চাষী প্রচুর পরিমাণে মধু চাষ কারে থাকেন।
ভোরে রবির কিরণে সরষে ফুলে জমে থাকা শিশিরের বিন্দুগুলো মুক্তার মতো আলো ছড়ায়। যার আলোয় ঝিকিমিকি করে চারপাশ। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, এ বুঝি হলুদ আলোর মিছিল। বিকেলের রোদের আলোতে হলুদের মিশ্রণে এক নতুনত্বের জন্ম দেয়। খুব সকালে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে মন ছুটে যায় বারে বার। সরিষা ক্ষেতের আইল ধরে হাঁটতে ভালো লাগবে না, এমন মানুষ পাওয়া ভার।
এসময় বাংলার রুপকে আরেও ফুটিয়ে তুলতে হলুদ শাড়ী গায়ে জড়িয়ে থাকে সে। সরিষা ফুলের সৌন্দর্য্য নিয়ে হাজারো কবিতা, গান আর গদ্য রচনা করে থাকে বাংলার কবি, সাহিত্যকগণ। যেখানে ফুটে ওঠে বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য্যের বর্ণনা। এছাড়াও সরিষা ফুল ও তার গাছ সবজি, তেল ও ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সরিষা একটি একবর্ষজীবি উদ্ভিদ। এর উৎপত্তিস্থল এই এশিয়াতেই। ভারতীয় উপমহাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে শীতকালীন রবি শস্য হিসেবে সরিষার চাষ করা হয়। সরিষার গাছ দৈর্ঘ্যে ১ মিটার মতো হয়, তবে রাই সরিষা ২ মিটারও লম্বা হতে পারে। একটি সরিষা গাছে প্রায় ২০০টি ফুল দিয়ে থাকে। তাছাড়া প্রায় ১ হাজার সরিষা দানা পাওয়া যায় একটি গাছ থেকে।
সরিষা বা সরষে ব্রাসিকা বা ক্রুসিফেরি গোত্রের কয়েক প্রজাতির তেল প্রদায়ী দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ। এর ডিম্বক বক্রমুখী। সরিষার দানা মসলা হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও সরিষার দানা পানির সাথে মিশিয়ে ভিনেগারসহ বিভিন্ন তরল তৈরি করা হয়, দানা পিষে সরিষার তেল তৈরি করা হয়, যা রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। সরিষার পাতা সরিষার শাক বা সর্ষে শাক হিসেবে খাওয়া হয়।
লেখক- সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ।
এনএস/