‘নিজস্ব অর্থায়নে বর্জ্য অপসারণ ও খাল দখলমুক্ত করা হচ্ছে’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:২১ পিএম, ২০ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার
চলমান বর্জ্য অপসারণ ও খাল দখলমুক্ত অভিযান কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি আজ রাজধানীর মতিঝিলে ‘মতিঝিল পার্ক’ এর উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের একথা বলেন।
ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, গত বছর যে সকল জায়গায় জলাবদ্ধতা হয়েছিল, সে সকল জায়গায় কিছু অবকাঠামো উন্নয়নে হাত দেয়া হয়েছে এবং তা নিজস্ব অর্থায়নেই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত যত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তা নিজস্ব অর্থায়নে করা হয়েছে এবং আগামী মার্চ পর্যন্ত যে কার্যক্রমগুলো করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, সেটাও পুরোটাই নিজ অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে।
জলাবদ্ধতার দূরীকরণে এসব অবকাঠামো উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকার মতো এবং বর্জ্য অপসারণে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘এই পুরো খরচ আমরা নিজস্ব অর্থায়ন হতেই ব্যয় করব।’
তিনি বলেন, আগামী বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলমান রয়েছে এবং এটা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। খালগুলো দীর্ঘদিন দখল অবস্থায় আছে, কিন্তু সেই দখলমুক্ত করার বিশাল কর্মযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছি।
ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘গত ৩১ ডিসেম্বর ওয়াসার সাথে আমাদের যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে, সে অনুযায়ী তাদের কাছ থেকে যে যান-যন্ত্রপাতি পাবো, সেগুলো হস্তান্তর প্রক্রিয়া এখনো চলমান রয়েছে। যার কারণে আসলে কিছুটা সক্ষমতার অভাব রয়েছে। কারণ, পুরো এই দখলমুক্ত কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য যে সকল যান-যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, সেরকম যান-যন্ত্রপাতি এখনো আমাদের কাছে নেই। যেমন – আমরা ওয়াসার কাছ থেকে লং-বুম চেয়েছি, সেটি এখনো আমরা পাইনি। যন্ত্রপাতি পেলে কার্যক্রমটা ত্বরান্বিত করতে পারব। তারপরও লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রেখেছি। আগামী মার্চের মধ্যেই এ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চাই।’
এ সময় ওয়াসার কাছ থেকে যেসকল পাম হাউস পাওয়া যাবে সেগুলো সসক্স অবস্থায় পাওয়া গেলে সফলতা জলাবদ্ধতা দূরীকরণ এর সফলতা দেখানোর বিষয় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার তাপস বলেন, ‘খালগুলোকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এরই মাঝে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করে তা স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠিয়েছি। প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি এ প্রকল্পের আওতায় খালগুলোর পাশে সাইকেল লেন, ওয়াকওয়ে এবং নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করব। সবকিছু মিলিয়ে এগুলো আবার যেন দখলের পায়তারা না থাকে এবং জনগণ যেন একটি মানসম্পন্নন জীবন যাপন করতে পারে সে বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে আমরা প্রকল্প প্রণয়ন করেছি। আমরা আশাবাদী যে, আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাাঝিও যদি এই প্রকল্পটা পাস হয়, আমরা যদি আগামী বর্ষা মৌসুমের পরে সেপ্টেম্বর নাগাদ কাজ আরম্ভ করতে পারি, তাহলে আমরা দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারব।’
পরে মতিঝিল পার্কের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সারা ঢাকা শহরকে নান্দনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আমাদের হবে ঐতিহ্যের ঢাকা, আমাদের হবে সুন্দর-সচল ঢাকা। আমাদের হয়েছে সুশাসিত ঢাকা এবং ইনশাল্লাহ আমরা ২০৪১ সালের আগেই উন্নত ঢাকা উপহার দেব।
মেয়র বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলাদেশ গড়েতে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন। এরই ফলশ্রুতিতে ঢাকাকে উন্নত ঢাকা গড়ার বিশাল কর্মযজ্ঞ গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নত বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়। ২০২১ সালে দাঁড়িয়ে গর্বের সাথে বলতে পারি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।’
এর আগে তিনি নগরীর জিরানী খালের জোর ভিটা পয়েন্ট, কদমতলী ব্রিজ সংলগ্ন উচ্ছেদ অভিযান ও মান্ডা ব্রিজ সংলগ্ন উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শন করেন এবং নবনির্মিত যাত্রাবাড়ি ফুটওভার ব্রিজ, শাখারী বাজার ফুটওভার ব্রিজ ও নয়া বাজার ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধন করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফি, প্রধান প্রকৌশলী রেজাউর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রদান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হকসহ দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসি