ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

রাজকন্যার বর!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২১ বৃহস্পতিবার

রেগে গেলে মানুষ কীভাবে হেরে যায়- তার একটি চমৎকার আমেরিকান গল্প আছে। আমেরিকায় এক ধনকুবের ছিলেন। যার এক সুন্দরী কন্যা ছিল। যে কন্যার ছেলে বন্ধুর কোনো অভাব ছিল না। অভাব থাকার কথাও নয়, একে তো সুন্দরী, তারপর ধনকুবেরের মেয়ে। 

মেয়ের যখন বিয়ের বয়স হলো বাবা তাকে বললেন, এখন তো তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বলো তোমার কাকে পছন্দ। যাকে পছন্দ তার সাথেই তোমার বিয়ের ব্যবস্থা করব। মেয়ে পছন্দ প্রকাশে অপারগতার কথা জানাল। বলল- আমি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। কারণ সবাই বলে তারা আমাকে ভালোবাসে। আমার জন্যে প্রয়োজনে জান দিয়ে দেবে। বাবা চিন্তায় পড়ে গেলেন। কী করা যায় ভাবতে ভাবতে বুদ্ধি বেরিয়ে এল। মেয়ের সাথে আলাপ করে বাবা সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন– প্রতিযোগিতা হবে। প্রতিযোগিতায় যে প্রথম হবে তাকেই মেয়ে বিয়ে করবে।

প্রতিযোগিতার দিন দেখা গেল শতাধিক যুবক সুন্দর পোশাকে পরিপাটি অবস্থায় ধনকুবেরের বাড়িতে এসে উপস্থিত। ধনকুবের সবাইকে বাড়ির সুইমিং পুলে নিয়ে গেলেন। সুইমিংপুলের পাশে সবাইকে দাঁড় করিয়ে বললেন, দেখো, প্রতিযোগিতা খুব সহজ। সাঁতার প্রতিযোগিতা হবে। সাঁতারে যে প্রথম হবে তার সাথেই আমার মেয়ের বিয়ে দেব। তবে সুইমিং পুলে ঝাঁপ দেয়ার আগে ভালো করে খেয়াল করো। পানির নিচে বহু কুমির অপেক্ষা করছে। আর এই কুমিরগুলোকে এক মাস ধরে কোনো খাবার দেয়া হয় নি। ধনকুবেরের কথা শেষ হতে না হতেই দেখা গেল, এক যুবক পানিতে পড়ে চোখ বন্ধ করে দুই হাত পা নাড়ছে। কুমিররা কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেই যুবক ভাগ্যক্রমে কিছুক্ষণের মধ্যেই সুইমিংপুলের ওপারে গিয়ে উঠেছে। ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই হতবাক। বিস্ময়ের ঘোর কাটতেই ধনকুবেরের মেয়ে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরল যুবককে। 

বিস্ময়াবিষ্ট কণ্ঠে বলল, তোমার মত বীরকেই আমি চাচ্ছিলাম। তুমিই আমার স্বামী হওয়ার একমাত্র উপযুক্ত। এদিকে যুবকের রাগ তখনও থামে নি। উত্তেজনায় হাত-পা কাঁপছে। এক ঝটকায় মেয়েটিকে দূরে ঠেলে দিয়ে যুবক চিৎকার করে উঠল, ‘কোন ... জাদা আমাকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিয়েছিল, তাকে আগে দেখে নেই।’

সুন্দরী স্ত্রী ও ধনকুবেরের সম্পদ ঐ যুবকের হাতের মুঠোয় চলে এসেছিল। ধাক্কা যে-ই দিক, সে সুইমিং পুল অতিক্রম করে সবার চোখে বিজয়ী বীর বলে গণ্য হয়েছিল, কিন্তু শুধুমাত্র রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় সৌভাগ্য এসেও তা হাতের নাগালের বাইরে চলে গেল। অথচ রাগ দমন করতে পারলে, ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে পারলে সে অনায়াসে মুচকি হেসে বলতে পারত, ‘পুরুষ তো আমি একাই, ওরা আবার পুরুষ নাকি!’ নিজের জীবন অনুসন্ধান করলেও আপনি হয়তো দেখতে পাবেন অনেক সুযোগ নষ্টের পিছনে রয়েছে আপনার রাগ, ক্ষোভ ও অভিমান। তাই সবসময় স্মরণ রাখুন ‘রেগে গেলেন, তো হেরে গেলেন’।
এসএ/