ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

সেশনজট এড়াতে সেমিস্টার পরীক্ষা দিতে চায় জবি শিক্ষার্থীরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:০৪ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২১ রবিবার

দীর্ঘস্থায়ী সেশনজট এড়াতে এখনই সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে চায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সাধারণত ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও পুরোনো বর্ষের পরীক্ষার ধাপ এখনো পেরোতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। সেমিস্টার সিস্টেমের কারণে দুইটা সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা জমে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা এবং দুই সেমিস্টারের পরীক্ষা গ্রহণ সময়সাপেক্ষ একটি ব্যাপার। আবার সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথাও ভাবতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।

এভাবে একটি শিক্ষাবর্ষ দীর্ঘায়িত হয়ে সেশনজটের ভয়কে আরো বাড়িয়ে তুলছে। অনলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণ করার কথা উঠলেও বাস্তবে সেটি অত্যন্ত জটিল একটি প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি দেয় বিশ্বিবদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ আন্দোলনেও নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন। এখনই পরীক্ষা নিতে পারলে শিক্ষার্থীদের সেশনজট কমবে বলে আশা করছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।

ক্যাম্পাস খুলে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে গত ১২ জানুয়ারী উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেয় বিশ্বিবদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। তারা জানান, শিক্ষার্থী করোনাকালীন লকডাউনে আমাদের বিভাগের শিক্ষক আমাদের অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছেন। তখনকার চলমান সেমিস্টারের ক্লাস শেষ করে নতুন সেমিস্টারের সিলেবাস সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আমাদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এই পরিস্থিতে আমাদের যে মিডটার্ম পরীক্ষাগুলো এখন থেকে নিয়ে নিলে দীর্ঘস্থায়ী সেশনজট থেকে রক্ষা পেতাম। এরপর গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। ক্যাম্পাস খুলে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়াসহ ৮ দফা দাবি জানান তারা। 

শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জাহিন বলেন, অনতিবিলম্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ এবং অভিজ্ঞদের সমন্বয় করে কোভিড পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাস খোলার রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে।

৭ দফা আন্দোলনের সমন্বয়ক তওসিব মাহমুদ সোহান বলেন, করোনার জন্য প্রায় এক বছর শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে চলে গেছে। ইতোমধ্যে দেশের সব কার্যক্রম ঠিকমত চললেও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারেই সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদাসীন। সবকিছু যেহেতু ঠিকমত চলছে তাই অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দ্রুত পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে সবার মতামত নিয়ে আমরা মিড পরীক্ষাগুলো নেয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। আমরা চাচ্ছিলাম না, বছর শেষ হওয়ার পর আমাদের কোনো শিক্ষার্থী জটে পড়ে থাকুক। আমাদের শিক্ষার্থীরা আবারও আবেদন করেছে পরীক্ষা দেয়ার বিষয়ে। আমরা একাডেমিক মিটিংয়ে এবিষয়ে আলোচনা করবো।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড.নূরে আলম আব্দুল্লাহ বলেন, এখনই পরীক্ষা নিতে পারলে আমাদের শিক্ষার্থীদের সেশনজট কিছুটা হলেও এড়ানো যেতো। অনেক শিক্ষার্থী ঢাকায়ই আছে, বিভাগ চাইলে পরীক্ষা নিবে। আর শিক্ষার্থীরাও সবাইকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা পরীক্ষা দিতে চায় কিনা। কেউ পরীক্ষা দিতে চায় আবার কেউ চায় না; এরকম যাতে না হয়।
কে আই//