সন্দ্বীপে পিকেএসএফের প্রকল্প পরিদর্শনে ড.সালেহা কাদের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:২৬ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২১ রবিবার | আপডেট: ০৯:২৯ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২১ রবিবার
সন্দ্বীপের দীর্ঘাপাড় ইউনিয়নে পিকেএসএফ এর সহায়তায় এসডিআই কর্তৃক বাস্তবায়িত উপকূলীয় চরাঞ্চলে 'সন্দ্বীপ ও উড়িরচর' মহিষের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে 'উদ্যোক্তাদের আয় বৃদ্ধিকরণ 'শীর্ষক ভ্যালুচেইন প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক ড. সালেহা কাদের।
সম্প্রতি, প্রকল্পের আওতায় নির্মিত কিল্লা, মহিষের পানীয় জলের জন্য খননকৃত পুকুর, মহিষের টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এরপর মহিষ পালনকারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মহিষ পালনকারীদের সাথে আলোচনার শুরুতে এসডিআই প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো. আশরাফ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার (উন্নয়ন) প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ব্রিফ করেন। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মহিষের মাংস ও দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করা, মহিষের মৃত্যহার কমানো এবং মহিষের জাত এর উন্নয়ন ঘটানোর মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করা। প্রকল্পটির মোট উপকারভোগীর সংখ্যা সন্দ্বীপের ৬টি ইউনিয়নের মোট ২৫১০ জন।
প্রকল্প কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, মহিষ খামারী উদ্যোক্তাদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, মহিষের ভ্যাকশিনেশন ও কৃমিনাশক ডোজ প্রদানে সহায়তা,উন্নত নেপিয়ার পাকচং জাতের ঘাসচাষে সহায়তা, মহিষের পানীয় জলের অভাব পূরণে পুকুর খনন, জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য কিল্লা নির্মাণ, মহিষের দুধ দিয়ে তৈরি দধি, মিষ্টি উৎপাদনকারীদের উপকরণ দিয়ে সহায়তা, কৃত্রিম প্রজননকারী প্রশিক্ষণ, সরকারী-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা গ্রহণে সহায়তা প্রদান প্রভৃতি। ২ বছর মেয়াদী প্রকল্পটি ডিসেম্বর ২০২০ এ সমাপ্ত হয়েছে।
মহিষ পালনকারীগণ প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়ে তাদের কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন। সন্দ্বীপে প্রাণীসম্পদ অফিসের সেবাদানকারীর ঘাটতি রয়েছে, গ্রাম পর্যায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবাদানকারী সরকারী ভ্যাকসিনের মূল্য বেশী নেন বলে খামারিরা অভিযোগ করেন। এলাকায় মহিষের জন্য প্রয়োজনীয় ঘাস, পুকুর, ডিপটিউবওয়েল ও কিল্লার অভাব রয়েছে। আরও বেশী পুকুর ও কিল্লার প্রয়োজন রয়েছে। সরকারী ডাক্তাদের যথাযথ সার্ভিস আরও বাড়ানো প্রয়োজন। সন্দ্বীপের ভূ-সীমানায় জেগে ওঠা নতুন চরে নোয়াখালী থেকে আসা লোকজন সন্দ্বীপের মহিষ বিচরণে বাঁধা প্রদান করে থাকেন।
এসময় ড. সালেহা কাদের খামারীদের কথাগুলো মনোযোগ সহকারে শুনেন। তিনি বলেন, সরকারী সেবা গ্রহণের জন্য সরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ভালো সম্পর্ক ও যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। তারপরও যদি সেবা না পাওয়া যায় তবে সকলে একত্রিত হয়ে সেবা আদায় করে নিতে হবে। এ ব্যাপারে সার্বিক সহায়তা করা হবে। এলাকার জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ে তিনি সকলের পাশে থাকবেন। প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য তিনি সুপারিশ করার আশ্বাস প্রদান করেন। এরপর তিনি দীর্ঘাপাড় ইউনিয়নের মহিষের জন্য নির্মিত কিল্লার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তিনি প্রকল্পের কার্যক্রম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এই ধরনের প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
এছাড়া স্থানীয় জনগণের পক্ষ থেকে হাইস্কুল শিক্ষক শরফুল আজাদ খামারীদের চাহিদাগুলো পূরণ করার দাবি রাখেন।স্থানীয় উদ্যোক্তা মেহাম্মদ আশরাফুল হক রোবেল প্রকল্পের মেয়াদ আরও বৃদ্ধির অনুরোধ জানান। একুশে টেলিভিশনের সাংবাদিক কাজী ইফতেখারুল আলম তারেক খামারীদের অভাব অভিযোগগুলো সমাধানের জন্য স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও উর্ধ্বতন পর্যায়ে যোগাযোগ করার আশ্বাস প্রদান করেন। প্রকল্প কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে ড. সালেহা কাদের দীর্ঘাপাড় মোহাম্মদিয়া এতিমখানায় যান এবং সেখানে নিজ উদ্যোগে দীর্ঘাপাড় ইউনিয়নে ১০০ জন অতি দরিদ্র শীতার্ত জনগণের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।
কেআই//