উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষা প্রচলনে অগ্রগতি নেই(ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৪৪ এএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:৪৭ এএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার
উচ্চ আদালতে বাংলায় রায় প্রদানসহ বাংলা ভাষার প্রচলনে অগ্রগতি নেই। এখনও বেশিরভাগ রায় বা আদেশ ইংরেজিতেই হচ্ছে। বাংলায় মামলার আবেদন করার জন্য ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় ফরমেট নির্ধারণ করে দেয়ার কথা বলছেন আইনজীবীরা। তবে নতুন কোন ফরমেটের দরকার নেই বলে মনে করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
১৯৮৭ সালে বাংলা ভাষা প্রচলন আইন নামে একটি আলাদা আইন হয়। নিম্ন আদালতে বাংলার প্রচলন শুরু হলেও উচ্চ আদালতে বাংলার ব্যবহার খুব একটা নেই।
একাত্তরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলা একাডেমির অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, আমাদের হাতে যেদিন ক্ষমতা আসবে সেদিন থেকে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু হবে। বাহাত্তরের সংবিধানেও বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের প্রতিফলন। সংবিধানের ৩ অনুচ্ছেদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করা হয়।
বাহাত্তরের ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট উদ্বোধনের সময় বঙ্গবন্ধু আদালত অঙ্গনে এসে বাংলায় রায় দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজবিী মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, বিচারপতি হাবিবুর রহমান সাহেব প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তিনি তাঁর প্রচুর লেখায় এগুলো লিখেছেন, বাংলা একাডেমি থেকে বাংলা ভাষায় একটি অভিধানও বের করেছেন তিনি।
এতো কিছুর পরও উচ্চ আদালতে বাংলার ব্যবহার খুব একটা নেই। হাইকোর্ট বিভাগে বর্তমানে ৯২ জন বিচারপতি, আপিল বিভাগে ৭ জন। তাদের মধ্যে অল্প কয়েকজনই বাংলায় আদেশ দিচ্ছেন।
মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, কোনটা স্থির করে বাংলায় রায় দিব, এটাকে প্রাকটিস করবো, ওই ভাষাটিকে বুঝে রেফারেন্স ব্যবহার করবো। তাহলে আমার মনে হয় এর ডেপথ প্রশস্ত হবে।
এর মধ্যে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের আলোচিত রায়টি বাংলায় লিখেছিলেন বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম। পিলখানায় বিডিআর হত্যা মামলায় বিচারপতি মোহাম্মদ আবু জাফর সিদ্দিকী মাতৃভাষা বাংলায় ১৬ হাজার ৫৫২ পৃষ্ঠার রায় লেখেন।
বাংলায় রায় দেয়ার ক্ষেত্রে আছে কিছু সীমাবদ্ধতাও। মামলার আবেদনের জন্য বাংলায় ফরমেট করার আহ্বান আইনজীবীদের।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কুমার দেবুল দে বলেন, সুপ্রিম কোর্ট যদি ঠিক করে দেয়, ওনারা বিধিমালা করে বা কোন একটা ফরমেট করে দিয়ে দেন তাহলে হয়তো এটা সম্ভব।
অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, বাদীর নাম থাকতে হবে, বিবাদীর নাম থাকতে হবে, মামলার ঘটনার বর্ণনা থাকতে হবে।
সীমাবদ্ধতা থাকলেও উচ্চ আদালতে বাংলার ব্যবহার এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও উন্নতি হবে বলে আশা অ্যাটর্নি জেনারেলের।
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, মরহুম গাজীউল হক সাহেব আমাদের এই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য এবং তিনি ভাষাসৈনিক হিসেবে বেশি পরিচিত ছিলেন। উনি সবসময় বাংলায় আবেদন লিখতেন এবং আদালতে তার জওয়ালজবাবটাও বাংলায় করতেন।
বাংলায় আইন শব্দকোষের দ্বিতীয় সংস্করণ গত সেপ্টেম্বর থেকে পাওয়া যাচ্ছে। বইটি আদালতে বাংলার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহায়ক বলেই মনে করছেন আইনজ্ঞরা।
ভিডিও-
এএইচ/