ঢাকা, সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ৮ ১৪৩১

ঢাকাই মসলিনের পুনর্জাগরণ (ভিডিও)

রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০১:০২ পিএম, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রবিবার | আপডেট: ১২:৪৮ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ বৃহস্পতিবার

প্রায় ১৭০ বছর পর পুনর্জাগরণ ঘটেছে ঢাকাই মসলিনের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ‘ঢাকাই মসলিন তৈরির প্রযুক্তির পুনরুদ্ধার প্রকল্প’র আওতায় ছয় বছর গবেষণার পর মসলিনের পুনর্জন্ম ঘটে। এরই মধ্যে মসলিনের জিআই সনদও পেয়েছে বাংলাদেশ। গবেষকরা বলছেন, বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হলে আবার বিশ্ব জয় করবে ঢাকাই মসলিন। 

হাতে মসলিন কাপড়ের নমুনা নেই। কোন খমারে নেই মসলিন সূতার জন্যে প্রয়োজনীয় ফুটি কার্পাস। এমন পরিস্থিতিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় মসলিন কাপড়ের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ২০১৪ সালে মাঠে নামেন একদল গবেষক। ছয় বছরের চেষ্টায় সফল হন তারা। ১৮৫০ সালে লন্ডনের শেষ প্রদর্শনীর ১৭০ বছর পর গবেষক দল বুনতে সক্ষম হয় ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিন কাপড়ের শাড়ি।

লন্ডন থেকে পাওয়া কাপড়ের নমুনা থেকে কার্পাসের ডিএনএন সিকোয়েন্স করা; বাংলাদেশে পাওয়া যায় কার্পাসের এমন জাতগুলো থেকে ফুটি কার্পাস শনাক্ত করা;  সুতা উৎপাদন ও মসলিনের বুনন- এ ছিলো দীর্ঘ জটিল এক প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রথমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হয় ৩৮ ধরনের কার্পাস তুলার জাত। এসব জাত থেকে খুঁজে বের করা হয় ফুটি কার্পাস; যা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে চাষ হচ্ছে।

ঢাকাই মসলিন তৈরির প্রযুক্তির পুনরুদ্ধার প্রকল্পের প্রধান বৈজ্ঞানিক ড. মো. মনজুর হোসেন বলেন, এই ঢাকাই মসলিন যেটা শতভাগ কটন হতে হবে। আমাদের প্রকল্পের উদ্দেশ্যই ছিল, যে তুলার জাত থেকে এই কাপড়টা তৈরি হতো সেটা খুঁজে বের করা, সূক্ষ্ম সূতা কিভাবে বানানো হতো সেটার টেকনোলজি বের করা এবং সেই সুতা থেকে কাপড় বানানোটা।


এরই মধ্যে ঢাকাই মসলিনের জিআই স্বত্বের অনুমোদন দিয়ে ২৮ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত গেজেটও প্রকাশিত হয়। গবেষক বলছেন, বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে গেলে বিশ্বব্যাপী বাজার পাওয়া সম্ভব।

ড. মো. মনজুর হোসেন বলেন, বাংলাদেশের তুলা যেটা বাংলাদেশেই ছিল। সেই তুলা থেকে বাংলাদেশের কারিগররা কাপড়টা বানিয়েছেন, মানে এটা শতভাগ আমাদের।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) বলেন, আগেকার দিনে চরকা কাটিং ছিল, সেই পদ্ধতিতেই আমরা করেছি। বেশ কিছু শাড়ি উৎপাদন করা হয়েছে।

গবেষকদের ধারণা, ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মসলিনের উৎপাদন পদ্ধতি উন্নয়ন সম্ভব। যার মধ্য দিয়ে বুনন প্রক্রিয়া ও রীতির আরও উন্নতি ঘটবে। তৈরি হতে থাকবে একের পর এক বিভিন্ন ধরনের মসলিন কাপড়।


বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, এটার সময় লাগবে। আমরা সফল হয়েছি এটাই বড় কথা।

গবেষণার প্রথম ধাপে মসলিনের ছয়টি শাড়ি তৈরি করা হয়েছে। যার একটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার হিসেবে দেয়া হবে বলে জানান গবেষণা সংশ্লিষ্টরা। হাত-বুনন রীতিতে তৈরি করা একটি শাড়ির উৎপাদন খরচ ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

ভিডিও-

এএইচ/