তালা না ভেঙে যেভাবে শত শত ভরি সোনা চুরি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫১ পিএম, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রবিবার
ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার বিপণী বিতান রাপা প্লাজায় একটি স্বর্ণালঙ্কারের দোকানে অন্তত ৪০০ ভরি স্বর্ণ চুরির অভিযোগ উঠেছে।
জানা যাচ্ছে, সুরক্ষিত এই শপিং মলের রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্স নামে একটি দোকানে ঘটে এই চুরির ঘটনা। দোকানে অন্তত কুড়িটি তালা লাগানো থাকলেও এর একটিও ভাঙেনি চোরের দল। দেখে মনে হচ্ছে সবগুলো তালা চাবি দিয়েই খোলা হয়েছে।
চুরি করার আগে শপিং মলের সিসি ক্যামেরাগুলোর লেন্স ঢেকে ফেলা হয়েছে কালো টেপ দিয়ে, যাতে ফলে সিসি ক্যামেরায় চুরির কোন দৃশ্য ধরা পড়েনি। শপিং মলটির দোতালায় অবস্থিত রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্স।
দোকানটির সত্বাধিকারী মহাদেব কর্মকার বলছেন, শনিবার রাত পৌনে নয়টার দিকে দোকান বন্ধ করে তালা দিয়ে কর্মচারীরা বাড়ি ফিরে যান। রবিবার সকালে শপিং মলের লোকজন আবিষ্কার করে দোকানের সবগুলো তালা খোলা। পরে দোকান মালিকদের তাকে ফোন করেন। তিনি এসে দেখেন ভেতরের ডিসপ্লে বা প্রদর্শনীর তাকগুলো ফাঁকা।
তিনি বলেন, "আমার দোকানে ২০ থেকে ২৫টা তালা দেয়া হয়। সকালে এসে দেখি সব খোলা। একটাও তালা ভাঙ্গা নেই। চোর চাবি দিয়ে তালা খুলেছে। তার মানে তারা জানতো এই দোকানে কি ধরণের তালা লাগানো হয়। সেই চাবি তারা বানিয়ে এনেছে"।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা শপিং মলের কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ খুঁজে দেখছে কাউকে শনাক্ত করা যায় কি না।
এরমধ্যে থেকে যে কয়টি সিসিটিভি ফুটেজে উদ্ধার করা গেছে সেগুলো দেখে ধারণা করা হচ্ছে যে অন্তত ৫ থেকে ৭ জন চোর শপিং মলে প্রবেশ করে এবং এদের মধ্যে দুই তিনজন দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে লুটপাট চালায়।
ভেতরে যারা প্রবেশ করেছে তাদের একজনের চেহারা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে। মহাদেব সাহার দাবি তার দোকান থেকে গলার হার, চুড়ি, কানের দুল, নাকফুলসহ ৩৫০ থেকে ৪০০ ভরির স্বর্ণালঙ্কার চুরি গিয়েছে।
তবে চোরদের কেউ স্বর্ণের ভোল্ট বা লকার ভাঙতে পারেনি, তাই সেখানকার স্বর্ণ অক্ষত আছে। ক্রেতাদের জরুরি ডেলিভারির জন্য শো-কেসে যতো অলংকার সাজানো ছিল, তার একটিও নেই। তবে বিপণী বিতানের ভেতরে ও বাইরে যেখানে দুই স্তরের ২৪ ঘণ্টার নিরাপত্তা থাকে সেখানে এমন চুরির ঘটনায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
রমনা ডিভিশনের উপ পুলিশ কমিশনার আজিমুল হক বলছেন, মূল ফটকের সামনের একজন প্রহরী ছাড়া মলটির ভেতরে বা বাইরে আর কোন নিরাপত্তা প্রহরী ছিল না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে, শপিংমলে টয়লেটের জানালা কেটে চোর ঢুকতে পারে।
কিন্তু নিয়মানুযায়ী মার্কেট বন্ধ হওয়ার পর টয়লেটও তালাবদ্ধ থাকার কথা জানান মহাদেব কর্মকার। এ ঘটনার পেছনে মার্কেট কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অবহেলাকে দায়ী করেন তিনি।
"একটা শপিং মলের ভেতরে কয়েক ধাপের নিরাপত্তা থাকে। কর্মচারীরা দোকানে তালা দেয়ার পর, মার্কেটের সিকিউরিটি এসে আরেকবার চেক করে যে ঠিকমতো লক হয়েছে কি না। এরপরে বাইরে সিকিউরিটি থাকে। তারপরও কিভাবে চুরি হয়?" অভিযোগ করেন মহাদেব কর্মকার।
চুরির ঘটনায় একটা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা
এসি