তাইওয়ানের আকাশসীমায় আবারও চীনা বিমান, বাড়ছে উত্তেজনা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৩১ পিএম, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সোমবার
তাইওয়ানের আকাশসীমার মধ্যে আবারও একটি চীনা পর্যবেক্ষণ বিমান ঢুকে পড়ে। গত শনিবার তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বিমান প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলের (এডিআইজেড) ভেতর ঢুকে পড়ায় চীনা বিমানটির পিছু নেয় তাইওয়ানের যুদ্ধবিমান। এর পাশাপাশি বিমান প্রতিরক্ষা সরঞ্জামগুলো প্রস্তুত করা হয় এবং এডিআইজেড ত্যাগ না করা পর্যন্ত বারবার রেডিওতে সতর্কবার্তা পাঠাতে থাকে তাইওয়ান প্রতিরক্ষা বাহিনী।
তাইওয়ানের সংবাদসংস্থা ফোকাস তাইওয়ান জানায়, ওয়াই-৮ মডেলের চীনা বিমানটি তাইওয়ান নিয়ন্ত্রিত দক্ষিণ চীন সাগর এবং দংশা দ্বীপপুঞ্জের এডিআইজেড-এর মধ্যে প্রবেশ করেছিল। বাইরের কোনো বিমান একটি দেশের নিয়ন্ত্রিত আকাশসীমায় প্রবেশের প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা হয় এডিআইজেড অঞ্চলে।
এই অঞ্চলে প্রবেশ করার আগে যে কোনো বিমানকে তার গন্তব্য এবং উদ্দেশ্য সংশ্লিষ্ট দেশকে জানাতে হয়। যদিও এডিআইজেড-কে আন্তর্জাতিক আকাশসীমা হিসেবে গণ্য করা হয়, তবে বৈমানিকরা এই অঞ্চলে প্রবেশের আগে জানাতে আইনত বাধ্য নয়।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই মাসে পাঁচবার চীনা বিমান তাদের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে। এর আগে লাগাতার গত ১, ২, ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি এমন ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি তাইওয়ানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে চীন বলে, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা মানে যুদ্ধ’। এরপর থেকেই এই ধরনের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনা বেশি ঘটছে।
চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উ চিয়ান বলেন, আমরা তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামীদের সতর্ক করে দিয়ে বলতে চাই, আগুন নিয়ে খেললে নিজেরাই পুড়ে মরবেন এবং তাইওয়ানের স্বাধীনতা চাওয়া মানে যুদ্ধ ঘোষণা।
চীন-তাইওয়ান বিরোধের সূত্রপাত ১৯২৭ সালে। ওই সময়ে চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গৃহযুদ্ধ। ১৯৪৯ সালে মাও সেতুংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা জাতীয়তাবাদী সরকারকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। জাতীয়তাবাদী নেতারা পালিয়ে তাইওয়ান যান। এখনও তারাই তাইওয়ান নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাথমিকভাবে ওই সময় যুদ্ধ বন্ধ হয়ে পড়লেও উভয় দেশই নিজেদের চীনের দাবিদার হিসেবে উত্থাপন শুরু করে।
তাইওয়ানভিত্তিক সরকার দাবি করে, চীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের দ্বারা অবৈধভাবে দখল হয়েছে। আর বেইজিংভিত্তিক চীন সরকার তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নতাকামী প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বেড়েছে এবং দ্বীপটিকে আবারও নিয়ন্ত্রণে পেতে শক্তি ব্যবহারের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে চীন। যদিও হাতে গোনা কয়েকটি দেশ তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দিয়েছে, তবে এর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের অনেক দেশের সঙ্গেই দৃঢ় বাণিজ্যিক ও অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে।
এসি