ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ট্রাম্পের বিচার : দ্বিতীয়বারের অভিশংসনের শুনানি আজ 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৩ এএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার

ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার করতে সিনেটে দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসনের শুনানি শুরু হচ্ছে আজ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। 

এ নিয়ে সোমবার ট্রাম্পের আইনজীবীরা একটি ফাইল দাখিল করেছেন, যেখানে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিশংসন প্রস্তাব অসাংবিধানিক বলে দাবি করেছেন তারা।

ট্রাম্পের আইনজীবীরা জানান, ‘ট্রাম্প শুনানিতে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এর আগে আমেরিকার ২শ’ বছরের ইতিহাস ভেঙে পার্লামেন্টে হামলার পর ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দু’বার অভিশংসনের মুখোমুখি হন ট্রাম্প। তবে ক্ষমতা ছাড়লেও বিশ্ব দরবারে আমেরিকার গায়ে যে চুনকালি মাখায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচারের ব্যবস্থা করে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট সিনেটররা।  

বাইডেনের শপথ গ্রহণের আগে ডেমোক্র্যাটরা চেয়েছিল অভিশংসন করেই বিচারের মুখোমুখি করবেন ট্রাম্পকে। কিন্তু সে সুযোগ তাদের হয়নি। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ রিপাবলিক্যান প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘দাঙ্গায় উস্কানি’ দেয়ার অভিযোগে অভিশংসন করে। কিন্তু উচ্চকক্ষে সেটি পাস হতে সময়ের প্রয়োজন ছিল। 

কেননা, সিনেটের অধিবেশন ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মূলতবি ছিল। তারপরও সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা মিচ ম্যাককোনেলের দপ্তর থেকে জরুরি অধিবেশন ডাকার ব্যাপারে সিনেটের সংখ্যালঘু দলের নেতা চাক শুমার একটি প্রস্তাব দেন, তবে তা প্রত্যাখ্যান করে দপ্তর। ফলে ট্রাম্প তার শেষ সময়গুলো হোয়াইট হাউজেই কাটান। 

কিন্তু জো বাইডেন শপথ নেয়ার পর পরই ট্রাম্পকে বিচারের আওতায় আনার বিষয়টি আবারও জোরালো হতে থাকে। যার প্রক্রিয়া স্বরূপ আজ দ্বিতীয়বার অভিশংসনের শুনানি শুরু হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, গত ৬ জানুয়ারি জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমেরিকার সর্বোচ্চ আইন প্রণেতাদের স্বীকৃতির দিনে ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। ওই তাণ্ডবে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচ জনের মৃত্যুর হয়। হামলাকারীদের ‘দেশ প্রেমিক’ বলে অভিহিত করেছিলেন ট্রাম্প। 

যদিও পরে নিজ দেশ ও বিশ্বজুড়ে তুমুল সমালোচনার মুখে নিজের বক্তব্য পাল্টে ফেলেন তিনি। অঙ্গীকার করেন স্বাভাবিক ক্ষমতা হস্তান্তরের। তবে ভোট চুরির অভিযোগ বিদায়ের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত করে যান মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট। 

এরই জেরে মূলত তাকে নির্ধারিত সময়ের আগেই লজ্জাজনকভাবে বিদায় দিতে উঠে পড়ে লেগেছিল প্রতিনিধি পরিষদ। কিন্তু ভাগ্যগুণে শেষ সময় পর্যন্ত হোয়াইট হাউজে থাকতে পেরেছিলেন ট্রাম্প। তবে মসনদ ছাড়া হলেও বিচার থেকে মুক্তি মিলছে তার। 

এদিকে এই বিচার শুরুর প্রাক্কালে বেশির ভাগ মার্কিনি ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করার পক্ষে মত দিয়েছেন। গত রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ ও ইপসসের যৌথ জরিপে এ তথ্য জানা গেছে। 

জরিপ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অপসারণ চায় দেশটির ৫৭ শতাংশ নাগরিক। এদের বেশিরভাগই ডেমোক্র্যাট। অপরদিকে রিপাবলিকানদের দাবি ট্রাম্প আর ক্ষমতায় নেই। তাই তাকে দায়িত্ব থেকে সরানোর বিষয়টিও অমূলক। তার ট্রাম্পের অভিশংসন বিচারকে অসাংবিধানিক বলেও উল্লেখ করেন তারা।

তবে ডেমোক্র্যাটদের দাবি ট্রাম্পের জবাবদিহির ব্যর্থতা ও দায়িত্বে অবহেলা ভবিষ্যতের প্রেসিডেন্টের কাছে বার্তা দেবে যে অপরাধ করেও পার পাওয়া যায়। তাই ক্ষমতা ছাড়লেও ট্রাম্পের বিচার হওয়া আবশ্যক। এতে করে প্রেসিডেন্টরা তাদের কাজের প্রতি সজাগ হবেন। একই সাথে ট্রাম্প যাতে আর কোন দিন আমেরিকার মসনদে বসতে না পারেন, সে বিষয়টিও নিশ্চিত হবে।
এআই/এসএ/