ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণের ইতিহাস (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:০১ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার

ভাষার অধিকার আদায়ে রাজপথে রক্ত দিয়েছে বাঙালি। বায়ান্নর ভাষা শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় নির্মাণ করা হয় শহীদ মিনার। এটি শুধু স্মৃতির মিনারই নয়, শহীদ মিনার বাঙালির গর্ব, আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। তবে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ একেবারে সহজ ছিলো না। পাকিস্তানিদের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে এক ভোরের আলো ফোটার আগেই গড়ে ওঠে শহীদ মিনার। এগিয়ে এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ অনেকে। ভাষা সৈনিক আহমদ রফিকের স্মৃতিতে আজও উজ্জ্বল প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণের ইতিহাস।

২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২, বেলা ১১.৩০। ১৪৪ ধারা মানেনি ছাত্র-জনতা। ভাষার দাবিতে রাজপথে খণ্ড খণ্ড মিছিল। লাঠি চালায় পুলিশ। আরও বেগবান হলো আন্দোলন, যোগ দেয় সাধারণ মানুষ। সবার মুখে একটিই দাবি- রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই। 

আন্দোলন ঠেকাতে গুলি চললো। রাজপথে লুটিয়ে পড়েন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকেই। 

২২ ফেব্রুয়ারি হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার প্রতিবাদ মিছিল। দাবি উঠে শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণের। 

ভাষা সৈনিক আহমদ রফিক বলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি আমাদের নবাবপুরের যখন মিছিল চলছিল, মিছিলে নতুন স্লোগান উঠলো- ‘শহীদ স্মৃতি অমর হোক’। এই শহীদ স্মৃতি অমর হোক স্লোগানকে ভিত্তি করে শহীদ মিনার তৈরির একটি চিন্তা আমাদের মাথায় আসে।

মাত্র ১ দিনের প্রস্তুতিতে তৈরি করা হয় শহীদ মিনার।

আহমদ রফিক বলেন, প্রথম নকশাটি খুব একটা পছন্দ হয়নি, তারপর কয়েকটি নকশার পর একটি নকশা তৈরি করা হলো। এই নকশা অনুযায়ী শহীদ মিনার তৈরি করা হয়।

শহীদ মিনার নির্মাণে এগিয়ে আসেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স-ওয়ার্ডবয়সহ অনেকেই।

ভাষা সৈনিক আহমদ রফিক আরও বলেন, নার্স-ওয়ার্ডবয় এরা আমাদেরকে প্রচুর সাহায্য করেছে। আমরা বেশ কয়েকজন ছাত্র জোগালির কাজ করেছি। কোদাল দিয়ে মাটি কোপানো থেকে শুরু করে সিমেন্ট-লোহা এবং ইট-বালি-সিমেন্ট বহন করে নিয়ে যাই। রাত ১০টা থেকে কাজ শুরু করে ভোর ৫টা পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে শহীদ মিনারের কাজটি শেষ করা হয়।

শহীদ মিনার নির্মাণের পর আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয়। ভীত হয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সরকার ভেঙে ফেলে শহীদ মিনার। 

আহমদ রফিক বলেন, পুলিশ ঘেরাও করে রাখে, পরে বিকেলে দুটি ট্রাক এনে ভেতরে ঢুকিয়ে শহীদ মিনারের গলায় দড়ি পেছিয়ে টেনে-ভেঙে গুড়াগুড়া করে শেষ ইটটি পর্যন্ত তুলে নিয়ে যায়।

যে ভাষার জন্য লড়াই, আত্মত্যাগ সেই বাংলা ভাষা আজও অবহেলিত, আফসোস ঝরলো এই ভাষা সৈনিকের কন্ঠে।
ভিডিও :

এএইচ/এসএ/