শেষ হলো গ্লোবাল আইটি জায়ান্টদের মেন্টর ডেভেলপমেন্ট ক্যাম্প
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:১৭ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রবিবার
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ভবিষ্যত উদ্যোক্তা সাপ্লাই চেইন এবং স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরিতে মেন্টর ডেভেলপমেন্ট ক্যাম্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, উদ্যোক্তাদের গাইড লাইন প্রদানের জন্য ২০২৫ সালের মধ্যে সারাদেশে ২০০ জন মেন্টর তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে ইনোভেশন ডিজাইন তৈরি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প উদ্যোক্তা সমন্বিতভাবে কাজ করার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজ আরও ত্বরান্বিত হবে।
রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার আইইবি, ঢাকা সেন্টারে আয়োজিত “ইনোভেটর মেন্টর ডেভেলপমেন্ট ক্যাম্পের” সমাপনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, চুয়েট, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) ঢাকা কেন্দ্রের যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, হাই-টেক পার্ক অথোরিটি'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, আইইবি সম্মানী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন শীবলু, ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নূরুজ্জামান, প্রকৌশলী খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদ, মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, সম্মানী সহকারী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী রনক আহসান, আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোল্লা মোহাম্মদ আবুল হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী হাবিব আহমেদ হালিম মুরাদ, সম্মানী সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার, ইভ্যালির নির্বাহী পরিচালক মুরাদ হাসান খুরশেদ সহ ইউনিবেটর-এর আয়োজকবৃন্দ। সমাপনীর দিন পৃথক সেশন পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ইনোভেটর ও এন্টারপ্রেনিয়র গণের মাধ্যমে হোম-গ্রোন সলিউশনে কাজ করছে সরকার। উদ্যোক্তাদের লোকাল এক্সপেরিয়েন্স কাজে লাগিয়ে গ্লোবাল বিজনেস অপরচুনিটি তৈরি করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের তত্ত্বাবধানে বিগত ১২ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাত সুদৃড় ভিত্তির ওপর দাড়িয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাত সঠিক অবকাঠামো গড়ে ওঠার কারণে দেশের সাড়ে ছয় লক্ষ ফ্রিল্যান্সার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
'ইউনিবেটর' প্রোগ্রামের মেন্টর ডেভেলপমেন্ট ক্যাম্পকে 'ঐতিহাসিক' এক অর্জন হিসেবে বর্ণনা করে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, 'বাংলাদেশে প্রথমবারের মত মেন্টর ডেভেলপমেন্টের জন্য আমরা যে আয়োজন করতে চেয়েছিলাম, তা এতটা সফলভাবে যে আয়োজন করা সম্ভব হবে এটা আমাদের প্রত্যাশাতীত। অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ফলাফল আমরা মেন্টর ডেভেলপমেন্ট ক্যাম্প থেকে পেয়েছি। ভবিষ্যতে এমন অনেক মেন্টর ডেভেলপমেন্ট কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে। কিন্তু প্রথম ক্যাম্পের এই অনুষ্ঠানটি ইতিহাস হয়ে থাকবে।'
এমন একটি আয়োজনের জন্য হাই-টেক পার্ক অথরিটি'র ম্যানেজিং ডিরেক্টর হোসনে আরা বেগম, আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার, আইইবি'র সহকারী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. রনক আহসান এবং হাইটেক পার্কের উপপরিচালক নরোত্তম পাল, কনসালটেন্ট তামজিদ বিন আহমেদ, ও আশিকুর রহমান রূপককে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'যারা এই ইউনিবেটর প্রোগ্রামটি সফল করার জন্য কাজ করছেন এবং এটির প্রচারণার জন্য কাজ
করছেন, তাদের সকলকে অশেষ ধন্যবাদ।' অনুষ্ঠানে সহযোগিতার জন্য ইভ্যালি'কে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বক্তব্যে করোনা মহামারীতে দেশের সেবায় কাজ করতে গিয়ে আইসিটি ডিভিশনের যারা মারা গেছেন তাদের স্মরণ করে দেশের প্রতি তাদের আত্মত্যাগের কথা জানান জুনাইদ আহমেদ পলক।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'এর মাধ্যমে আপনারা শুধু নিজেদের সমৃদ্ধ করেননি, বরং ভবিষ্যতে আমাদের উদ্যোক্তা তৈরির সাপ্লাই চেইন তৈরি করা এবং ইনোভেশন ইকোসিস্টেম তৈরির একটি ঐতিহাসিক ইভেন্ট আমরা সম্পন্ন করতে পেরেছি।'
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, 'যেকোনো দেশের সফলতার মূল বিষয় হলো নেতৃত্ব। বাংলাদেশের তা আছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনা ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দিয়েছেন। এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগ। সবকিছু এখন
প্রযুক্তিনির্ভর। তাই আমাদেরও প্রযুক্তিনির্ভর হতে হবে। সময়ের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার না করতে পারলে টিকে থাকা যাবে না।'
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি অতিথি সেশনে গুগল থেকে যুক্ত হয়েছিলেন নেক্সট বিলিয়ন ইউজার (এনবিইউ) এর হেড অব অপারেশন বিকি রাসেল। উদ্ভাবন ও বাণিজ্যিকীকরণ বিষয়ে সেশনে আলোচনা করেন তিনি। শনিবার মেন্টর ডেভলোপমেন্ট ক্যাম্পে অতিথি সেশনে ছিলেন ফেসবুকের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ইমার্জিং মার্কেট ডিরেক্টর জর্ডি ফরনিস এবং বাংলাদেশে ফেসবুকের হেড অব পাবলিক পলিসি শাবহানাজ রাশিদ দিয়া। এই দুইজন আলোচনা করেন 'ডিজিটাল ইকোনমি'তে উদ্ভাবনকে উৎসাহ প্রদানের বিষয়ে।
একই দিন পৃথক সেশনে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে মেন্টর ডেভলোপমেন্ট ক্যাম্পে অতিথি সেশনে অংশ নেন মাইক্রোসফট বাংলাদেশের হেড অব চ্যানেল সেলার মাশরুর হোসেন। 'কমিউনিটি টু ফুয়েল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রান্সফরমেশন' বা শিল্প রূপান্তরে শক্তি যোগানো কমিউনিটি বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। আর শেষ দিন রবিবার সকালে "হাইটেক পার্কস ও অন্ট্রাপ্রেনরশিপ" বিষয়ে সেশনে মেন্টরিং করেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটির এমডি হোসনে আরা বেগম এনডিসি। রবিবার দুপুরে মেন্টর ডেভলোপমেন্ট ক্যাম্পের প্যানেল ডিসকাশনে অংশ নেন এসবিকে ফাউন্ডেশন এবং এসবিকে টেক ভেঞ্চার এর প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবীর এবং গ্লোবাল ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ।
কেআই//