ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই চট্টগ্রামে শুরু হয়ে গিয়েছিল মুক্তি সংগ্রামের প্রস্তুতি

প্রকাশিত : ০৯:০৭ এএম, ১৭ মার্চ ২০১৬ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৯:০৮ এএম, ১৭ মার্চ ২০১৬ বৃহস্পতিবার

একাত্তরে সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই চট্টগ্রামে শুরু হয়ে গিয়েছিল মুক্তি সংগ্রামের প্রস্তুতি। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার ৯ দিন আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই তার জন্মদিন ১৭ মার্চ দিয়েছিলেন এই নির্দেশ। চট্টগ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর প্রবেশ ঠেকাতে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধারা অচল করে দেয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ মিরসরাইয়ের শুভপুর সেতু। গাছ কেটে ব্যারিকেড দেয়া হয় সব ক’টি প্রধান সড়কেও। সেই ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত শুভপুর সেতু। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের যোগাযোগের জন্য দীর্ঘ এই সেতু ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলের জন্য এই সেতু এখন আর ব্যবহৃত না হলেও তখন এটিই ছিল সবচেয়ে বড় সেতু। আর এর কোনো বিকল্পও ছিল না। একাত্তরের মার্চে এই ব্রিজ থেকেই শুরু হয়েছিল চট্টগ্রামে প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণে উজ্জীবিত পুরো জাতি দাবানলের মতো জ্বলে ওঠে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য। চট্টগ্রামেও মুক্তিসংগ্রামের নেশায় মরিয়া হয়ে উঠে সর্বস্তরের জনতা। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার দিন কয়েক আগে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবনে যান তখনকার ২৭ বছরের তরুণ সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। বঙ্গবন্ধু তখন উপস্থিত রাজনীতিক ও শুভানুধ্যায়ীদের সাথে আলাচারিতায় মগ্ন। আলোচনার এক ফাঁকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ শুভপুর সেতু উড়িয়ে দেয়ার জন্য বিস্ফোরক সংগ্রহের অনুমতি চান বঙ্গবন্ধুর কাছে। এরইমধ্যে, ২৫ মার্চ দুপুরে খবর আসে, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ২৬টি  ট্রাকযোগে পাকিস্তানি সৈন্য চট্টগ্রামে আসার। এ অবস্থায় বন্দরনগরীকে শত্র“মুক্ত রাখতে মুক্তিযুদ্ধকালীন এক নম্বর সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার, বর্তমান গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে শুভপুর সেতু ধ্বংস করার উদ্যোগ নেয় স্থানীয় জনতা। শুভপুর সেতু ধ্বংসের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামকে মুক্ত রাখতে সেদিন  যারা রাস্তায় নেমে এসেছিলেন, তাদের অনেকেই এখন বয়োবৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃদ্ধ। সে দিনের কথা মনে করে স্মৃতিকাতর হয়ে ওঠেন তারা। মহান মুক্তিযুদ্ধে এই ধরণের অসম সাহসিকতার গল্প এখনো অজানা অনেকের। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জানান, শুভপুর সেতু অচল করার ফলে প্রায় এক সপ্তাহের জন্য রক্ষা পায় কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র।