ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

মহাকাশযান নামানোর রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তের অপেক্ষায় নাসা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২৬ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ বৃহস্পতিবার

আমেরিকান মহাকাশ সংস্থা নাসা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছে। নাসার মহাকাশযান পারসিভেয়ারেন্স-এর আজ বৃহস্পতিবার গ্রেনিচ মান সময় প্রায় রাত ৯টায় মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠে অবতরণ করার কথা রয়েছে।

ছয় চাকার এই স্বয়ংচালিত যানটি পৃথিবী থেকে তার ৪৭০ মিলিয়ন কিলোমিটার (৪৭ কোটি মাইল) পথের যাত্রা শুরু করেছিল সাত মাস আগে। এই মহাকাশ মিশনের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অংশ হবে মঙ্গলের পৃষ্ঠে যানটির অবতরণের মুহূর্তটি।

যানটিকে নিরাপদে লাল গ্রহটির পৃষ্ঠে অবতরণ করতে হবে। এর আগে বহু মহাকাশযান এই কাজ করতে গিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে গেছে। কিন্তু পারসিভেয়ারেন্স যদি সফল হয়, তাহলে মঙ্গলগ্রহে অতীতে কোন প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা তা জানার অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এর আগে এত উন্নত যন্ত্রপাতি নিয়ে কোন গ্রহে বৈজ্ঞানিক মিশন পাঠানো হয়নি এবং এত সম্ভাবনাময় একটা স্থানকে টার্গেট করে কোন রোবটও এর আগে কখনও নামানো হয়নি। 

যেখানে এই মহাকাশ রোবটের মঙ্গলপৃষ্ঠ স্পর্শ করার কথা সেই স্থানটি হল জেযেরো ক্রেটার। একসময় এই গহ্বরের স্থানটিতে বিশাল একটি হ্রদ থাকার লক্ষণ উপগ্রহে পাওয়া ছবি থেকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন।তাদের ধারণা এই হ্রদটিতে প্রচুর পানি ছিল এবং সম্ভবত সেখানে জীবনও ছিল।

পারসিভেয়ারেন্স যেখানে নামবে সেই জেযেরো গহ্বরের ধুলাবালুর মধ্যে থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে রোবট যানটি, যা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে গ্রহটিতে অতীতে জৈব কোন কর্মকাণ্ডের হদিস ছিল কিনা। সবচেয়ে লক্ষণযুক্ত ও সম্ভাবনাময় নমুনা পৃথিবীতে পাঠানো হবে ভবিষ্যত মিশনের প্রস্তুতির জন্য।

নাসায় পারসিভেয়ারেন্সের উপ প্রকল্প ম্যানেজার ম্যাট ওয়ালেস বলছেন, ‘মঙ্গলের পৃষ্ঠে ভবিষ্যতের মিশন পাঠানোর আগে আমাদের আগে মঙ্গলে ঠিকমত অবতরণ করতে হবে। আর সেটাই সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ। মহাকাশ মিশনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম হল সফল অবতরণ। মঙ্গলগ্রহে এর আগে যেসব মিশন পাঠানো হয়েছে তার মধ্যে ৫০ শতাংশ যান মঙ্গলের পিঠে সফলভাবে অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। কাজেই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন জেযেরো গহ্বরে রোবট যানটি নিরাপদে নামানো।’

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে মঙ্গলগ্রহে পাঠানো হয়েছে পারসিভেয়ারেন্স-কে। মঙ্গলগ্রহে নভোযান অবতরণের ১৪টি প্রচেষ্টা আগে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সফল হয়েছে আটটি আর এর সবগুলোই ছিল আমেরিকান মিশন। তবে ১৯৯৯ সালে একবার নাসার মঙ্গল মিশন ব্যর্থ হয়েছিল।

তাই বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডেনায় জেট প্রোপালসান গবেষণাগারে মিশন কেন্দ্রে রুদ্ধ শ্বাসে অপেক্ষা করবেন প্রকৌশলীরা।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা

এআই//