উইঘুরদের গুপ্তচরবৃত্তিতে কাজে লাগাচ্ছে চীন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৩৩ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ শুক্রবার | আপডেট: ০৫:৪২ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ শুক্রবার
বিদেশে অবস্থিত চীনের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে ওই সম্প্রদায়েরই কিছু মানুষকে বাধ্য করছে চীন সরকার। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি উইঘুর অধীকারকর্মীদের জন্য আরও ভীতিকর পরিস্থতি তৈরি করেছে। এইসা ইমিন নামে এক উইঘুর নাগরিক এ তথ্য জানায় জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে। এইসা ইমিন বলেন, নিজের সম্প্রদায়ের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে তাকে চাপ প্রয়োগ করে চীনা নিরাপত্তাবাহিনী।
এইসা ইমিন সম্প্রতি জার্মানিতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন। এই উইঘুর নাগরিক জানান, ২০১৫ সালে মালয়েশিয়া থেকে চীনে ফেরার পর তাকে বিমানবন্দরে আটকানো হয়। পরে তাকে বিমানবন্দর থেকে আটক করে বন্দীশালায় নেওয়া হয়।
এইসা ইমিন জানান, তাকে একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং তার হাত-পা একটি ধাতব টেবিলের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, 'তারা আমার কবজি শক্ত করে বেঁধে রেখেছিল যাতে আমি না নড়তে পারি। আমি দুইদিন এই অবস্থায় ছিলাম।'
ইমিনকে কখনো জানানো হয়নি তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে। তবে খবরের কাগজে বলা হয়, 'রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা বিপন্ন' করতে পারে বলে তাকে সন্দেহ করা হয়েছিল। এক মাস আটক অবস্থায় কাটানোর পর একটি শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। শর্তটি হলো তাকে চীন সরকারের পক্ষ হয়ে কাজ করতে হবে।
ইমিন বলেন, 'তখন মনে হয়েছিল আমি হ্যাঁ বলে দেই। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখব তবে তাদের পক্ষে কাজ করার আমার কোনো ইচ্ছা ছিল না।'
ডয়েচে ভেলের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, এরপর ইমিন নিয়মিত একজন চীনা এজেন্টের সাথে দেখা করতেন। তবে তিনি কখনোই কারও কাছে উইঘুরদের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি। এর প্রায় এক বছর পরে তাকে আবার আটক করা হয়। এবার তিনি চীনের এক যুবকের ওপর নজর রাখার বিশেষ শর্তে তাকে দেশত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া হয়।
এরপর ইমিন ভেবেছিলেন তিনি আর কখনো দেশে ফিরবেন না। একটি প্রচারমাধ্যমের সহায়তায় তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো প্রকাশ করবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু এই পরিকল্পনা জানতে পেরে ওই চীনা এজেন্ট ইমিনকে হুমকি দেয়, 'তুমি সবকিছু প্রকাশ করার পরিকল্পনা করেছ, তবে ভুলে যেওনা তোমার পরিবার এখনো চীনে আছে।'
এরপর থেকে ইমিনের পরিবারের পাঁচ সদস্য নিখোঁজ হয়েছে, তার পাঁচ ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তার বড় ভাইকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রহিমা মাহমুত নামে এক উইঘুর অধিকারকর্মী জানান, উইঘুরদের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। অনেকদিন ধরেই বিদেশে বসবাসকারী সব উইঘুরদের ওপর নজর রেখে চলেছে চীন সরকার।
এসি