ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

চুড়িহাট্টা ট্রাজেডির দুই বছর (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:২২ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ শনিবার

চুড়িহাট্টা ট্রাজেডির দুই বছরেও পুরান ঢাকা থেকে সরানো যায়নি কেমিকেলের গোডাউন। সেদিনের ভয়াল স্মৃতি আজও তাড়া করে নিহতদের স্বজনদের। চুড়িহাট্টার আগুনের লেলিহান শিখায় মারা যায় ৭০ জন। ঘটনার পর দুটি তদন্ত রিপোর্টের সুপারিশের বেশিরভাগই আলোর মুখ দেখেনি। তারপরও ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক জানালেন, দ্রুতই পুরান ঢাকা থেকে কেমিকেল গোডাউন সরে যাবে।

২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। পুরানো ঢাকার চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনের কেমিকেল গোডাউনের আগুন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।

আগুনের লেলিহান শিখায় সব পুড়ে ছারখার। চুরিহাট্টার মৃত্যুপুরিতে তখন বাঁচার আকুতি, আর্তচিৎকার। উদ্ধার হয় শিশুসহ ৭০টি মৃতদেহ।

দুই বছর পর চুরিহাট্টার সব কিছু স্বাভাবিক। সবজি বিক্রেতা মিন্টুর চোখে এখনো ভেসে বেড়ায় সেদিনের আগুন।

মিন্টু জানান, চোখ জ্বলে চারিদিকে তাকালাম, কোন কিছুই দেখি না। মসজিদের দিকে তাকানো মাত্রই বিকট শব্দ, সবকিছু ফেলে দিলাম দৌড়।

ওয়াহেদ ম্যানশনের গায়ে এখন আর পোড়া চিহ্ন নেই। তবে অনেকের মনে এখনো আছে স্বজন হারানোর দগদগে ক্ষত। এই বৃদ্ধ বাবা কি কখনো ভুলতে পারবে দু’ দুটি সন্তান হারানোর কষ্ট।

দুই সন্তান হারানো বাবা জানান, রানা ও রাজু আমার এই দুই সন্তান সংসার চালাতো। সেখানে ওরা মারা গেলো, এরপর আমাদের সংসার স্তব্ধ হয়ে যায়।

নিজের দুই ভাই আর ভাইয়ের শিশু সন্তান হারানোর বেদনা কিভাবে ভুলবে এই যুবক? যে কেমিকেলের আগুনে চুড়িহাট্টা হয়েছিলো মৃত্যুপুরি, এখনও সেই পুরান ঢাকায় আছে গোডাউন। 

যুবক জানাল, যার যায় সেই বুঝে যে, কি জিনিস হারাইছি? এখন দেখতে দেখতে দুটি বছর কেটে গেলো কিন্তু শরীর থেকে তো শোক নামানো যায়নি। পুরান ঢাকা থেকে এখনও কেমিক্যাল সরানো হয়নি। নদীর তীরে এই কেমিক্যাল ব্যবসা যদি নেয়া যায় তাহলে শত শত লোক আর মারা যাবে না দুর্ঘটনায়।

ঘটনার পর স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী সুপারিশ করেছিলো ফায়ার সার্ভিস। তার বেশিরভাগই বাস্তবায়ন হয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস প্রধান।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, যেসব এলাকায় বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ আছে সেই সমস্ত এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করা এবং কতোটা বিপদজ্জনক এলাকা আছে সেগুলোকে চিহ্নিত করে বলা- এগুলো আমরা করেছি। আমরা যে লাইসেন্সগুলো দেই সেগুলোকে বন্ধ রাখা হয়েছে। যে কেমিক্যাল গোডাউন আছে সেগুলো যখন কদমতলিতে স্থানান্তরিত করা হবে- তার মধ্যে দিয়ে আমাদের সুপারিশমালা বাস্তবায়িত হবে।

তবে দ্রুতই পুরানো ঢাকা থেকে সব কেমিক্যাল গোডাউন সরে যাবে বলে জানান তিনি।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন আরও বলেন, ঢাকার শ্যামপুরে একটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে, যদিও এটি বিসিকের জায়গা। ইতিমধ্যে এটিতে গোডাউন তৈরির কাজ চলছে। খুব দ্রুত গতিতেই চলছে, আশা করি কিছু দিনের মধ্যেই কাজটি শেষ হয়ে যাবে। 

আর যাতে চুরিহাট্টা ট্রাজেডি দেখতে না হয় সেজন্য সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান ফায়ার সার্ভিস মহাপরিচালকের।
ভিডিও :


এএইচ/এসএ/