ভাষা শহীদদের প্রতি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রদ্ধা নিবেদন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:১৫ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রবিবার | আপডেট: ০৬:১৭ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রবিবার
আমার ভাইয়ের রক্ত রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভূলিতে পারি? একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ ২১শে ফেব্রুয়ারী তারিখ ১২টা ১৫ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জননেতা নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক জননেতা আফজালুর রহমান বাবু'র নেতৃত্বে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সংগঠনের সভাপতি জননেতা নির্মল রঞ্জন গুহ বলেন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের রক্তস্নাত পথে উন্মেষ ঘটে বাঙালির জাতীয় চেতনা, বাঙালি খুঁজে পায় তার জাতিসত্তার আত্মপরিচয়ের দিশা।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় আত্ম পরিচয় বিনির্মাণে শুরু হয় স্বাধিকার আন্দোলনের নতুন অভিযাত্রা। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট ঘোষিত ২১ দফা বাস্তবায়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধানে গঠিত স্বেচ্ছাসেবক
বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হয়েছিল প্রয়াত রাষ্ট্রপ্রতি জননেতা জিল্লুর রহমান। তারপরের ইতিহাস ছিল শুধুই আন্দোলন সংগ্রাম। যার নেতৃত্বে ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতা দিয়েছেন ভাষার অধিকার আর স্বাধীনতা। জননেত্রী শেখ হাসিনা এনে দিয়েছেন বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক সম্মান। জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদান মাতৃভাষার সম্মান। সকল ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ সকল ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন একুশ আমাদের আত্মপরিচয়। একুশ মানে মাথা নত না করা।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ঘটনাপঞ্জি
১৭ নভেম্বর, ১৯৪৭
পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলাকে ঘোষণার জন্য শত শত নাগরিকের স্বাক্ষর সংবলিত স্মারকপত্র প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিনের কাছে পেশ
২৭ নভেম্বর, ১৯৪৭
করাচিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণের সিদ্ধান্ত
৬ ডিসেম্বর, ১৯৪৭
পাকিস্তান শিক্ষা সম্মেলনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্র বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত
৪ জানুয়ারি, ১৯৪৮
বিচ্ছিন্ন ও অসংগঠিত প্রতিবাদকে সংগঠিত রূপদানের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত
৮ জানুয়ারি, ১৯৪৮
ছাত্রলীগ মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদার বিষয়ে আলোচনার জন্যে খাজা নাজিমুদ্দিনের সাথে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করে
২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮
পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলাকে গণপরিষদের ব্যবহারিক ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্তের দাবি তুলে সংশোধনী প্রস্তাব আনেন
২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮
গণপরিষদের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ঢাকার ছাত্র সমাজ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে ধর্মঘট পালন এবং ছাত্রসভার আয়োজন করে
২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮
ছাত্রলীগ ও তমদ্দুন মজলিস-এর যৌথসভায় ১১ মার্চ প্রতিবাদ দিবস হিসেবে ধার্য করা হয়
২ মার্চ, ১৯৪৮
১১ মার্চের ধর্মঘটকে সফল করার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় 'রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ' গঠিত হয় এবং শামসুল আলম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন
১১ মার্চ, ১৯৪৮
বঙ্গবন্ধু তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মী ও ছাত্রদের নিয়ে সাধারণ ধর্মঘট পালন ও পূর্ব বাংলা সরকারের সচিবালয় ঘেরাও করেন। পুলিশ এই ধর্মঘটে বেধড়ক লাঠিচার্জ এবং বঙ্গবন্ধু, শামসুল হক ও অলি আহাদসহ অনেককে গ্রেপ্তার করে
১৫ মার্চ, ১৯৪৮
খাজা নাজিমুদ্দিন সরকার রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ সদস্যদের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন এবং রাষ্ট্রভাষা সংক্রান্ত ৮ দফা খসড়া চুক্তি প্রণয়ন করেন। চুক্তি স্বাক্ষরের আগে কারাগারে বন্দী বঙ্গবন্ধুর অনুমোদন নেওয়া হয়। চুক্তি মোতাবেক ১৫ মার্চ সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুসহ অন্যরা মুক্তি লাভ করেন
১৬ মার্চ, ১৯৪৮
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে সাধারণ ছাত্র-জনসভা অনুষ্ঠিত হয়
২১ মার্চ, ১৯৪৮
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভায় ঘোষণা করেন, উর্দু এবং একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। সেখানেই তার এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছাত্রনেতারা তীব্র প্রতিবাদ জানান
২৪ মার্চ, ১৯৪৮
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে অনুষ্ঠিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানেও জিন্নাহ 'উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা' এই ঘোষণার পুনরাবৃত্তি করেন। সেখানেও ছাত্রদের মধ্য থেকে এর প্রতিবাদ উচ্চারিত হয়
১১ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৮
ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের দায়ে মুসলিম লীগ সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে
২৭ জানুয়ারি, ১৯৫২
পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর খাজা নাজিমুদ্দিন পল্টন ময়দানের সমাবেশে ঘোষণা করেন কেবল মাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। সাথে সাথে সমাবেশস্থলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। শ্লোগান ওঠে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’
৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২
ঢাকা শহরের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বত:স্ফূর্ত ধর্মঘট পালিত হয়। ছাত্ররা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার দাবিতে তখনকার সময়ের সবচেয়ে বড় একটি মিছিল নিয়ে রাজপথ প্রদক্ষিণ করে
১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২
‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা’র দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিন আহমদ কারাগারের অভ্যন্তরে আমরণ অনশন ধর্মঘট শুরু করেন
১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২
পাকিস্তান সরকার ২১ ফেব্রুয়ারি ডাকা সাধারণ ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে এবং সকল সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে
২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২
হাজার হাজার ছাত্র জনতার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করলে সালাম, বরকত, রফিক জব্বার প্রমুখ শহীদ হন।
শ্রদ্ধা নিবেদনে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।