আবারও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন শতবর্ষী এক দম্পতি (ভিডিও)
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০২:৩৭ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ বৃহস্পতিবার
ভালবাসার কোন বয়স নেই। তাইতো জীবন সায়াহ্নে আবারও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন শতবর্ষী এক দম্পতি। দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় ১০৭ বছর বয়সী বর বৈদ্যনাথ দেবশর্মা ও ১০২ বছরের কনে পঞ্চবালা দেবশর্মা। নাচ-গান, বাদ্য-বাজনা আর পুরোহিতের বেদমন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে সনাতন রীতিতে হয় বিয়ে। এ উপলক্ষে তিনদিন ধরে চলে সহস্রাধিক মানুষের ভোজের আয়োজন।
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন দক্ষিণ মেড়াগাঁও গ্রাম। প্রায় মাস খানেক ধরেই এখানে আয়োজন চলে শতবর্ষী বর-কনের বিয়ের। বর আসেন গাড়ীতে চড়ে। যথারীতি পূজাপার্বনের মাধ্যমে বরকে বসানো হয় বিবাহ বাসরে এবং সাজিয়ে-গুজিয়ে তার পাশেই বসানো হয় কনেকে।
এরপর পুরোহিত উচ্চারণ করেন সনাতনী বেদমন্ত্র। এভাবেই সনাতনী রীতিতে মালা বদলসহ সবরকম আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় বিয়ে। চলে আমন্ত্রিত অতিথিদের খানাপিনা।
ব্রাহ্মণ পুরোহিত মহাদেব ভট্টাচার্য্য বলেন, সনাতন ধর্মে যেটা কার্যকর করা হয় সেই অনুযায়ী আমরা তাকে বিবাহ পূর্ণ দিলাম।
হিন্দু বিবাহ রেজিষ্ট্রার বিভুতি ভূষণ বলেন, এটা একটি বিরল ঘটনা।
নিমন্ত্রণ কার্ডে বর উল্লেখ করেন, ৯০ বছর আগে তাদের বিয়ে হয় এবং পঞ্চম প্রজন্ম পার করেছেন তারা। এ জন্যই ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী আবার বিয়ে। পরবর্তী বংশধরদের মঙ্গলের জন্য এই বিয়ের আয়োজন বলেও জানান বর।
বর বৈদ্যনাথ দেবশর্মা জানান, পাঁচ পিড়িতে অনেক বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়, বংশাদী ধ্বংস হয়ে যায়। এই বংশাদী নষ্ট না হওয়ার জন্যই এই বিয়ে।
কনে জানালেন, বাল্য বিয়ে হওয়ায় বিয়ে কি তা বুঝেননি তিনি। কিন্তু এবার বেশ আনন্দ পাচ্ছেন তিনি।
কনে পঞ্চবালা দেবশর্মা জানান, যে বিয়ে হয়েছিল তাতে কোন কিছু আনন্দ পাইনি। তবে এই যে বিয়েটা হলো তাতে অনেক আনন্দ পেয়েছি।
ধর্মীয় রীতির পাশাপাশি ধূমধামের কোন কমতি ছিলো না বিয়েতে। ছিলো বাদ্য-বাজনা, নাচগান, সহস্রাধিক মানুষের প্রীতিভোজসহ নানা আয়োজন।
ধর্মপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাবুল চন্দ্র সরকার বলেন, এরকম কারও পাঁচ পিড়ি পূর্ণ হয়েছে এবং আবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে এটা আমার জীবনে প্রথম দেখা।
পরিবার, পরিজন ও প্রতিবেশিরাও উপভোগ করেন এমন বিয়ে।
স্বজনরা জানান, দূর-দূরান্ত থেকে সবাই এসেছে। দাদু ও দিদিমার বিয়েতে অনেক আনন্দ পেলাম। পাঁচ প্রজন্মের সবাই এখনও জীবিত আছে।
ভিডিও :
এএইচ/এসএ/