সেনাবিরোধী বক্তব্যে মিয়ানমারের জাতিসংঘ দূত বরখাস্ত
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪৯ এএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রবিবার
জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোয়ে তুন। ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোয়ে তুনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে সর্বোচ্চ কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানোর পর তাকে বরখাস্ত করেছে দেশটির সেনা শাসকরা। এ খবর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) কিয়াও মোয়ে তুনকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। বরখাস্তের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তিনি দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এবং একটি অস্বীকৃত সংস্থার হয়ে কথা বলেছেন যা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে না।
রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোয়ে তুন শুক্রবার সাধারণ পরিষদের বৈঠকে তার দেশের জনগণের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদানে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি সেনাশাসনের বিরুদ্ধে আবেগঘন বক্তব্যে বলেন, অবিলম্বে সামরিক অভ্যুত্থানের অবসান ঘটাতে, নিরীহ লোকজনের ওপর নির্যাতন বন্ধে, জনগণের কাছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সম্ভাব্য কঠোরতম পদক্ষেপ প্রয়োজন।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত জাতিসংঘে বর্মিজ ভাষায় বক্তব্য শেষে তিন আঙুল উঁচিয়ে স্যালুট দেন। মিয়ানমারে সেনাশাসনবিরোধী চলমান আন্দোলনে জান্তা সরকারকে বিদায় করার প্রতীকী চিহ্ন হিসেবে তিন আঙুল উঁচিয়ে স্যালুট প্রদর্শন করে আসছে বিক্ষোভকারীরা।
মিয়ানমার প্রশ্নে জাতিসংঘের এক বিশেষ বৈঠকে সব সদস্য রাষ্ট্রকে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতিতে দেওয়ার তাগিদ দেন তিনি। সামরিক সরকারকে কোনও ধরনের সহযোগিতা না করারও আহ্বান জানান মিয়ানমারের দূত।
এছাড়া গত নভেম্বরে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ফলাফলের প্রতি জান্তা শাসকেরা যাতে শ্রদ্ধা দেখায়, সে লক্ষ্যে চাপ সৃষ্টিরও দাবি জানান তিনি। রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্যকে বিপুল করতালি দিয়ে স্বাগত জানান সাধারণ পরিষদের সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা।
কিয়াও মোয়ে তুনের এই বক্তব্যের পর তার বিরুদ্ধে দূত হিসেবে ক্ষমতা ও দায়িত্বে অপব্যবহারেরও অভিযোগ এনেছে মিয়ানমার জান্তা সরকার।
গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে প্রতিবাদ-সমাবেশ-বিক্ষোভ চলছে। ওই দিনই অং সান সুচি'র নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে তাকে গৃহবন্দী করা হয়। গত তিন সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরে প্রতিদিনই সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-ধর্মঘট চলছে।
ইতোমধ্যে বিক্ষোভকারীদের ওপর রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দমন-পীড়ন ছাড়াও হামলা চালিয়েছে সেনা অভ্যুত্থান সমর্থকেরাও।
এএইচ/