মিয়ানমারে বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, নিহত ১৮
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪৫ এএম, ১ মার্চ ২০২১ সোমবার
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে চলা বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। গুলিতে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পুলিশের গুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর এটাই সবচেয়ে বেশি রক্তাক্ত দিন।
জাতিসংঘ বলছে, দেশজুড়ে বিক্ষোভের সময় আরও ৩০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে। ইয়াঙ্গুন, বাগো ও দাওয়েই-এর মত অন্তত তিনটি শহরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সেখানেও বহু মানুষ হতাহত হয়েছে।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে স্টেনগান ও জলকামান ব্যবহার করা হয়।
বুকে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে বলে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন। মিজিমার টেলিভিশন চ্যানেলও এই মৃত্যুর কথা জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইয়াঙ্গুনে শিক্ষকদের বিক্ষোভে স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় সেখানে তিন নিউ য়ি নামের একজন নারী শিক্ষক মারা যান।
পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ইয়াঙ্গুনে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করছে তাদের দপ্তর।
পুলিশ ইয়াঙ্গুন মেডিকেল স্কুলের সামনেও স্টান গ্রেনেড ছুড়ে সাদা এপ্রোন পরা চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সেখান থেকে পুলিশ ৫০ জনের বেশি মেডিকেল কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে বলে আন্দোলনকারীদের একটি গ্রুপ জানিয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দাউইয়েও পুলিশ গুলি করেছে। সেখানে তিন জন নিহত ও বেশ কয়েকজনকে আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় রাজনীতিক কিয়াও মিন হটিক রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে বিক্ষোভ চলাকালে দুইজন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাও জানিয়েছে। বিকালে নিরাপত্তা বাহিনী আবার গুলি করলে এক নারী নিহত হন বলে মান্দালয়ের বাসিন্দা সাই তুন জানিয়েছেন।
অন্যদিকে জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত সে দেশের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থনের আহ্বান জানানোর পর গতকাল তাকে বরখাস্ত করে সেনা শাসকরা।
অং সান সুচিকে হটিয়ে সেনাবাহিনী গত ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখলের পর প্রায় প্রতিদিনই দেশটিতে বিক্ষোভ হচ্ছে। দিনে দিনে এই প্রতিবাদের মাত্রা আরও তীব্র হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে এসব বিক্ষোভের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
এই বিক্ষোভ দমন করতে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো শনিবার থেকে সাঁড়াশি আক্রমণ শুরু করে। তারা প্রচুর সংখ্যক প্রতিবাদকারীকে গ্রেফতার করেছে।
এএইচ/এসএ/