ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

লকডাউনের মেয়াদ বাড়াল জার্মানি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৩ এএম, ৩ মার্চ ২০২১ বুধবার

প্রাণঘাতি করোনায় ধুকছে ইউরোপের দেশ জার্মানি। যেখানে টিকা প্রয়োগ অব্যাহত থাকলেও থামানো যাচ্ছে না প্রাণহানি। তাই সংকট মোকাবিলায় আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত লাগাতার লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে মার্কের প্রশাসন। তবে এ দফায় কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। খবর ডয়েচে ভেলের। 

গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে একটানা লকডাউনের কারণে জার্মানির মানুষের ধৈর্য্যের বাঁধ অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ছে। তারপরও ভাইরাসটি নির্মুল না হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে প্রশাসনকে। দেশটিতে প্রতিদিনই কয়েক হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হওয়ার পাশিপাশি প্রাণ হারাচ্ছেন শত শত ভুক্তভোগী। 

বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডমিটারের নিয়মিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৪৯২ জার্মানের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২৪ লাখ ৬২ হাজার ৬১ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ৪০১ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা আজ ৭১ হাজার ৩২৫ জনে ঠেকেছে। যদিও সুস্থতা লাভ করেছেন ২২ লাখ ৬৪ হাজার ৬শ’ রোগী। সর্বোচ্চ সংক্রমণের দিক থেকে দশ নম্বরে অবস্থান করছে অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের দেশ। 

অন্যদিকে আছে করোনার নতুন স্ট্রেইনের ভয়। প্রতিদিনই ১৬টি অঙ্গরাজ্যের কোথাও না কোথাও নতুন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। এসব কিছু বিবেচনা করেই ৭ মার্চের লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে ২৮ মার্চ পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা কমায় লকডাউনের বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। 

লকডাউন চললেও খুলে দেয়া হয়েছে গ্রন্থাগার, বই পুস্তকের দোকান, নার্সারি বা গাছের চারা বিক্রির দোকান ও সেলুন। এমন সিদ্ধান্তে খুশি দেশটির নাগরিকরাও।  লকডাউনের আগে একাধিক জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী দোকানবাজার, হোটেল-রেস্তোরাঁ আবার খোলার পক্ষে মত দেন জার্মানির অধিকাংশ নাগরিক। দৈনিক সংক্রমণের হার যথেষ্ট কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। করোনাভাইরাসের ছোঁয়াচে সংস্করণগুলি সংক্রমণের ‘তৃতীয় ঢেউ’-এর আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে। 

এদিকে যথেষ্ট সংখ্যায় করোনার টিকা সরবরাহ এখনো নিশ্চিত করা সম্ভব না হওয়ায় অনেক নতুন প্রস্তাব শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে অ্যাস্ট্রাজেনিকা কোম্পানির তৈরি টিকা সম্পর্কে জার্মানিতে সংশয়ের আলোকে সব মানুষের জন্য এই টিকা নেবার সুযোগ করে দেবার পরামর্শ দিচ্ছে কিছু মহল। সংশয় দূর করতে খোদ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল লাইভ টেলিভিশনে সেই টিকা গ্রহণ করুন, এমন প্রস্তাব উঠে আসছে। এখনো পর্যন্ত তিনি বয়সের কারণে সেই টিকা নেবার বিষয়ে দ্বিধা প্রকাশ করেছেন, কারণ জার্মানিতে ৬৫ বছরের বেশি মানুষদের সেই টিকা না দেবার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

কেউ কেউ যত বেশি সম্ভব মানুষকে আপাতত টিকার প্রথম ডোজ দেবার পক্ষে সওয়াল করছেন। তারা একাধিক গবেষণার ফলাফল উল্লেখ করে মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, ফাইজার-বায়োননেক এবং মডার্নার টিকার প্রথম ডোজই যথেষ্ট সুরক্ষা দিচ্ছে। এখনো পর্যন্ত জার্মানিতে সব ব্যক্তির জন্য দুটি করে ডোজ দেবার নীতি চালু রয়েছে৷

করোনা সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সীমান্তে কড়াকড়িও বাড়ানো হচ্ছে। ফ্রান্সের মোজেল জেলায় মারাত্মক পরিস্থিতির কারণে মঙ্গলবার থেকে জার্মানিতে অবাধ প্রবেশের সুযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই অঞ্চলে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা করোনা সংস্করণ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে৷ এর আগে চেক প্রজাতন্ত্র ও অস্ট্রিয়া সীমান্তের কিছু অংশকেও এমন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার তালিকায় রাখা হয়েছিল৷ ফ্রান্স এমন একতরফা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষই সীমান্তে সমন্বয়ের প্রশ্নে ঐকমত্যে এসেছে। 
এআই/এসএ/